ইউরো মুদ্রায় এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) লেনদেন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন ডলারের পাশাপাশি ইউরোপিয়ান দেশগুলোর নিজস্ব মুদ্রা ‘ইউরো’তেও আকুর লেনদেন সম্পন্ন হয়ে থাকে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) পক্ষে গণরায়ের সিদ্ধান্তের পর ইইউ’র ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। এ প্রেক্ষাপটে জার্মানির যে ব্যাংকের সঙ্গে ইউরো মুদ্রায় আকু নষ্ট্র হিসাব পরিচালনা করে, সে ব্যাংক ইউরোতে লেনদেন করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে আকুর কিছু সদস্য রাষ্ট্র ইউরোতে লেনদেন স্থগিত করেছে। এর পর বাংলাদেশ ব্যাংকও ইউরো মুদ্রায় আকুর লেনদেন আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সার্কুলারটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে নিয়োজিত অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক পরিশোধ ব্যবস্থায় ‘আকু ইউরো’ লেনদেন কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করার পরামর্শ দেওয়া হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চলতি হিসাবের ‘আকু ইউরো’ লেনদেন অনুমতি নিয়ে আকু ব্যবস্থার বাইরে নিষ্পত্তি করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, গ্রিনউইচ ব্যাংক অব জার্মানির সঙ্গে আকুর ইউরো মুদ্রায় নষ্ট্র হিসাব রয়েছে। ব্রেক্সিটের পর সম্প্রতি ব্যাংকটি ইউরোতে লেনদেন করতে চাইছে না। এ কারণে ভারত ও শ্রীলংকা আকু ইউরো লেনদেন স্থগিত করে প্রধান কার্যালয় তেহরানকে জানিয়ে দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশও আকু ইউরো’তে লেনদেন আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গেছে, দেশের দু’একটি ব্যাংক ইউরোতে লেনদেন করে বিপাকে রয়েছে, তাদের আকুর বাইরে বিকল্প উপায়ে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন হলো বহুপক্ষীয় ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে একটি আন্তঃআঞ্চলিক চলতি লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এশিয়ার ৯টি দেশের মধ্যে আমদানি ও রফতানি করার লক্ষ্যে দেশগুলোতে যে লেনদেন হয় তা প্রতি দু’মাস পর পর পরিশোধ করতে হয়। আকুর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। একসময় আকুভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আমদানি ও রফতানিসহ সব ধরনের লেনদেন নিষ্পত্তি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে করা হতো। তবে ২০১৪ সালের এক সিদ্ধান্তের আলোকে আমদানি-রফতানির বাইরে অন্য সব লেনদেন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিশোধ করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে অর্থ স্থানান্তরের সর্বনিম্ন সীমা ৫শ’ আকু ডলার অথবা ৫শ’ আকু ইউরো নির্ধারণ করা হয়। এর নিচের লেনদেন নিজ দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। তবে ইউরো মুদ্রায় লেনদেন স্থগিত করায় এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
/জিএম/এসএনএইচ/