X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চামড়া বিক্রির চার ধাপ

গোলাম মওলা
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০১:১২আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৮:৪২

চারধাপে চামড়া পৌঁছায় ট্যানারিতে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য যায় ট্যানারিতে। এক্ষেত্রে চারবার হাত বদল হয়। প্রথম ধাপে মৌসুমি ব্যবসায়ী বা ফড়িয়ারা চামড়া কিনে নেন পশুর মালিকের কাছ থেকে। দ্বিতীয় ধাপে পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা বা মধ্যস্থতাকারীরা নগদ টাকা দিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তা সংগ্রহ করেন। তৃতীয় ধাপে পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা আড়ৎদারদের কাছে চামড়া জমা রাখেন এবং চতুর্থ ধাপে ট্যানারি মালিকরা সেই চামড়া চূড়ান্তভাবে কিনে নেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চারবার বেচা-কেনায় কখনোই লোকসান গুনতে হয় না আড়ৎদার কিংবা ট্যানারির মালিককে। কিন্তু চামড়া কিনে প্রায় ঝুঁকিতে পড়েন মৌসুমি ও পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা।

এ প্রসঙ্গে গুলিস্তান এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা নগদ টাকায় চামড়া কিনে থাকেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের এই চামড়া পরে কিনে নেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা অনেক সময় কেনা দামও দিতে চায় না। আবার এই চামড়া বেশিক্ষণ রেখে দেওয়া যায় না। এ কারণে বাধ্য হয়ে অনেক সময় লোকসানে চামড়া বিক্রি করতে হয়।’

জানা গেছে, এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মূলত নগদ টাকায় চামড়া কেনেন। অবশ্য পাইকারি ব্যবসায়ীরা কখনও কখনও তাদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করেন। এ ক্ষেত্রে চামড়ার এই ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিতে হয় পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীদেরকেই। কারণ, মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নগদ টাকা দিয়ে চামড়া কেনার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি চামড়া বহনে শ্রমিক নিয়োগ ও লবণ প্রয়োগের দায়িত্ব নিতে হয়। এর বাইরে প্রতিকূল পরিবেশে চামড়ার ক্ষতি হলে এর সব দায়-দায়িত্ব পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীদেরকেই বহন করতে হয়।

এ প্রসঙ্গে উত্তরাঞ্চলের পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ি আবদুল ওহাব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা যারা পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ী তাদেরকে সব সময় ঝুঁকি নিতে হয়। কখনও  আমাদের মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে ঠকতে হয়। আবার কখনও ট্যানারি মালিকরাও একই কাজ করেন।’

ওহাব বলেন, ‘যে চামড়া ট্যানারিতে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারব সেটা পশুর মালিকের কাছ থেকে কিনতে হবে সর্বোচ্চ ১৪০০ টাকা দিয়ে। এর বেশি দাম দিয়ে কিনলে লোকসানে পড়ার আশঙ্কা থাকবে।’

ওহাব আরও বলেন, ‘১৪০০ টাকার চামড়ায় ৩০০ টাকার লবন লাগবে। শ্রমিক খরচসহ আরও ১০০টাকার মতো খরচ আছে। এই চামড়া পচে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। চামড়া পঁচে গেলে এর পুরোটাই ক্ষতি হয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের। আর যদি পঁচে নাও যায় সেক্ষেত্রে প্রতি পিস চামড়ায় ১৮০০-১৯০০ টাকা বিনিয়োগ করে মাত্র ২০০ টাকা লাভ করা যায়। কোনও কোনও সময় ১০০ টাকা লাভেও ছেড়ে দিতে হয়।’

জানা গেছে, পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ীরা লবন ও সব ধরণের খরচ মেটানোর পর কাঁচা চামড়া আড়ৎদারদের কাছে পৌঁছান। ট্যানারিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই চামড়া মূলত আড়ৎদার কাছে সংরক্ষিত থাকে। আড়ৎদার প্রতি পিস ৩৫ টাকা লাভ রেখে ট্যানারিতে চামড়া পৌঁছান। যদিও ট্যানারি পর্যন্ত পৌঁছানোর খরচও বহন করতে হয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের। ট্যানারির মালিকরা সেই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন পণ্য বানান। এসব পণ্য বিদেশেও রফতানি করা হয়।

প্রসঙ্গত, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশে কয়েক লাখ মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া কিনেন। কয়েক হাজার পাইকারি ব্যবসায়ী এই চামড়া তাদের কাছ থেকে কিনে আড়ৎদারদের কাছে জমা রাখেন। পরে এই চামড়া ঢাকার হাজারীবাগের দেড় শতাধিক ট্যানারিতে চলে আসে।

/এনএস/এএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ ডেকেছে ইসলামী আন্দোলন
৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ ডেকেছে ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন
ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন
ওলামা দলের আংশিক কমিটি দিয়েছে বিএনপি
ওলামা দলের আংশিক কমিটি দিয়েছে বিএনপি
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী