X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘বাণিজ্য নীতিমালার প্রতিবন্ধকতায় বেসরকারি খাতে কাঙ্ক্ষিতমাত্রায় উন্নতি হয়নি’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২২:২৮আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২২:৩১





অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান দেশের বাণিজ্য নীতিমালাসমূহে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকায় বেসরকারি খাতে কাঙ্ক্ষিতমাত্রায় উন্নতি লাভ সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং ইউএনডিপি-বাংলাদেশ যৌথভাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সেশনে তিনি এ কথা বলেন।
‘ইমপ্যাক্ট বাংলাদেশ ফোরাম ২০১৭’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন)।
এম এ মান্নান বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে নানাবিধ আইন প্রণয়ন কিংবা বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ প্রায়ই বঞ্চনার শিকার হচ্ছে, তাই এ বিষয়ে ইউএনডিপিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আরও সচেতন হতে হবে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশসহ অন্যান্য সম্ভাবনাময় দেশগুলো আরও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পারবে।’
তিনি উল্লেখ করেন অর্থনীতির সঠিক বিকাশের জন্য সব শিল্পখাতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে বিষয়টিতে সরকারও যথেষ্ট সচেতন রয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য ইউএনডিপি’র প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের বেসরকারি খাত সব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ ধারাবাহিকতা রক্ষায় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, ‘সরকার দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন হিসেবে পদ্মা সেতু নির্মাণ, পায়রা বন্দর নির্মাণ, রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র নির্মাণ বেশকিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই প্রকল্পগুলো শেষ হওয়ার মাধ্যমে দেশে অবকাঠামো খাতের প্রভূত অগ্রগতি সাধিত হবে।’
ফোরামের উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউএনডিপি-বাংলাদেশ’র ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর কাওকো ইউকোসোকা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার গৃহীত সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে খুবই সঙ্গতিপূর্ণ।’
বিনিয়োগ বিষয়ক তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিসিসিআই এবং ইউএনডিপি একযোগে কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে বিনিয়োগ বিষয়ক তথ্য প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি জানান, এসডিজিতে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রায় সারা পৃথিবীতে ১২ ট্রিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান তৈরির কথা বলা হয়েছে, যেখানে এশিয়াতে ৫ ট্রিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।
ডিসিসিআইর সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ৩০তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার জন্য শুধু অবকাঠামো খাতে ৩২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশকে টেকসইযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি মনোযোগী হতে হবে, পাশাপাশি জিডিপিতে বিনিয়োগের অবদানকে ৪০ ভাগে উন্নীত করতে হবে।’
‘কনভেনিং ফর ইমপ্যাক্ট: ব্যবসায়িক নেতৃত্ব এবং এসডিজি পার্টনারশীপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত সেশনটি সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সঞ্চালনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ চালু করতে দীর্ঘসূত্রিতা একটি উদ্বেগের বিষয়।’
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘এসডিজিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের অবশ্যই বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বাইরে এমন একটি ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের আলোচনার মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারবে। এছাড়া নির্ধারিত কার্যপরিকল্পনা পর্যালোচনার জন্য একটি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করতে হবে।’
বিআইডিএস’র মহাপরিচালক ড. খান আহমেদ সৈয়দ মুরশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘প্রবৃদ্ধি ও এসডিজি’র জন্য অবকাঠামো নির্মাণ (আঞ্চলিক যোগাযোগ)’ বিষয়ক প্যারালাল সেশনে পিপিপি কার্যালয়ের সিইও সৈয়দ আফসর এইচ উদ্দিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, গত ৬ বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৮ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী অতি দারিদ্র সীমা থেকে উত্তোরণ হয়েছে।
এমসিসিআইর সভাপতি নিহাদ কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘প্রবৃদ্ধি ও এসডিজির জন্য অবকাঠামো নির্মান (ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লাস্টার)’ শীর্ষক সেশনে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র পোগ্রাম ম্যানেজার ড. এম মাসরুর রিয়াজ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এমসিসিআইর সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ‘রেগুলেটরি বিষয়ক সংস্কারের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।’
ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে পণ্যের বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণ, ইকোনোমিক জোনসমূহে দ্রততার সঙ্গে সব সুযোগ-সুবিধার সংযোগ স্থাপন, নীতিমালার সংস্কার, দ্রুত সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সার্টিফিকেট প্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রভৃতি বিষয়সমূহে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব-উল ইসলাম ‘এসডিজিতে পরিবেশবান্ধব জুট পাল্প পেপারের প্রভাব’ শীর্ষক সেশনটি পরিচালনা করেন। বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের অ্যাডভাইজর বাবুল চন্দ্র রয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানের সমাপনী সেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

 

/জিএম/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!