X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর দুই মাস পর সঞ্চালন লাইন!

সঞ্চিতা সীতু
০৬ জানুয়ারি ২০১৮, ২২:৪২আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৪:৫৫

বিদ্যুৎ পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসার কথা আগামী বছরের এপ্রিলে। কিন্তু এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হবে এরও দুই মাস পর। এ কারণে উৎপাদন সক্ষমতা অর্জনের পরও কেন্দ্রটির বসে থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের আগেই সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্র জানায়, পায়রায় কয়লাভিত্তিক এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইনটির নির্মাণ কাজ ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। অন্যদিকে, ২০১৯ সালের এপ্রিলে বিদ্যুকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে। এ হিসেবে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার কমপক্ষে দুই মাস পর সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হবে। এতে প্রায় দুই মাস কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব হবে না।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিদ্যুৎ ভবনে এ বিষয়ে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে পিজিসিবিকে যেভাবেই হোক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে আসার আগেই সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ করতে তাগাদা দেওয়া হয়।

বৈঠকে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১৯ সালের এপ্রিলে নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আসবে। এরইমধ্যে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ৩১ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লারের যন্ত্রাংশ বসতে শুরু করবে। কাজেই নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগে পিজিসিবিকে সঞ্চালন লাইন এবং সাবস্টেশন নির্মাণ শেষ করতে হবে।

এ কেন্দ্রের জন্য একটি ৪০০ কেভি ও একটি ২৩০ কেভির সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে। সঞ্চালন লাইনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়, ৪০০ কেভির লাইনটি নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ডিসেম্বরে। তবে ২৩০ কেভির ৪৭ কিলোমিটার লাইনটির অগ্রগতি এখনও তেমন নেই। এই লাইনটির ভৌত অগ্রগতি দেখানো হচ্ছে মাত্র আড়াই ভাগেরও কম। আর আর্থিক কোনও অগ্রগতি দেখানো হয়নি।

এ সম্পর্কে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই কেন্দ্রের জন্য সঞ্চালন লাইন নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা পিজিসিবিকে তাগাদা দিয়েছি যে করেই হোক কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই সঞ্চালন লাইন করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পিজিসিবিকে বলা হয়েছে, কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হবে এপ্রিলে আর সঞ্চালন লাইন যদি আসে জুন মাসে তাহলে কেন্দ্রটির বসে থাকতে হবে।’ প্রতিটি পর্যায়ে কাজের টাইম ফ্রেম বেঁধে দিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করার কথাও বলা হয়েছে।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) সূত্র জানায়, প্রথম ইউনিটের কাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। দ্বিতীয় ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রটির জন্য অস্থায়ী জেটি নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। স্থায়ী জেটি নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়াও কেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণের পর ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও আবাসন প্রকল্প নির্মাণ কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

সঞ্চালন লাইন স্থাপনের বিষয়ে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী জানান, পায়রা থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। গোপালগঞ্জে সাবস্টেশন নির্মাণ করা হবে। এখান থেকেই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। এখানে দুটি লাইনের নির্মাণ কাজ চলছে। ৪০০ কেভির লাইনের কাজ পেয়েছে কোরিয়ার একটি কোম্পানি। আর ২৩০ কেভির কাজ করছে চীনের একটি কোম্পানি। ৪০০ কেভির লাইনের জন্য ইতোমধ্যে ৫০টির মতো টাওয়ার বসেছে। আর ২৩০ কেভির জন্য মাত্র দুই মাস আগে চুক্তি হয়েছে। তারা এখন জরিপ ও অন্যান্য কাজ করছে।

নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে বাংলাদেশ এবং চীনের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিক। এতে চীনের এক্সিম ব্যাংক বিনিয়োগ করছে।

এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের এই প্রকল্প ছাড়াও পর্যায়ক্রমে এনডব্লিউপিজিসিএল ছয় হাজার ২৪০ মেগাওয়াট, সিএমসির সঙ্গে অংশীদারিত্বে একটি এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, জার্মানির সিমেন্স এজির সঙ্গে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল) ও আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন লিমিটেড একটি করে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। ফলে ওই অঞ্চলে সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

 

/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে মোমবাতির প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে মোমবাতির প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!