একাগ্র প্রচেষ্টা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘নেতৃত্ব ও সময়োচিত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ইতিবাচক অবস্থান সৃষ্টি করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে, যার জন্য বিদ্যুৎ খাতে প্রয়োজন ৮২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে।’
শনিবার (১২ মে) যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজের হার্ভার্ড লয়েব হাউজে ফ্লোরিডার ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (আইএসডিআই), হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং হার্ভার্ড লক্ষ্মী মিত্তাল সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রাইজিং’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তব্য দানকালে তিনি এসব কথা বলেন। গণমাধ্যমে পাঠানো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১৮ –তে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফুয়েল মিক্স হিসেবে গ্যাস ৩৫ ভাগ, কয়লা ৩৫ ভাগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানি ১০ ভাগ, নিউক্লিয়ার ও অন্যান্য ২০ ভাগ ধরা হয়েছে। উন্নত বাংলাদেশে প্রয়োজন ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। একইসঙ্গে বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। দফতরগুলো অটোমেশন করার কাজ এগিয়ে চলছে। ইআরপি ও স্ক্যাডা সিস্টেম প্রচলন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ বিদ্যুৎ বেসরকারি খাত থেকে উৎপাদিত হচ্ছে এবং সঞ্চালন ব্যবস্থার কিছু অংশ বেসরকারি খাতে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী দশকে বিতরণ ব্যবস্থাও বেসরকারি খাতে যাবে বলে আশা করছি। স্মার্ট গ্রিড ও ক্যাশলেস পেমেন্টবিষয়ক প্রযুক্তি প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি। আর তখনই বিদ্যুৎ পাবলিক গুডস্ থেকে মেরিট গুডস্-এ পরিণত হবে।’
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা আরও জনবান্ধব করতে অর্থায়ন, প্রযুক্তি গ্রহণ, বিচক্ষণ পরিকল্পনা ও কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সম্মেলনের অধিবেশনগুলোতে সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিশ্রুতি ও সংস্কার, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সম্ভাবনা, বিদ্যুৎ উৎপাদনে গতিশীলতা আনা, বাণিজ্যে নারীর নেতৃত্ব, তথ্য প্রযুক্তির প্রসার নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে বিষয়ভিত্তিক ইস্যু নিয়ে বক্তব্য রাখেন– প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামালুদ্দিন আহমেদ।