শরতের পরিচ্ছন্ন আকাশে সাদা মেঘের ভেলার সঙ্গে উড়ে নিরিবিলি ছুটির দিনটি দিগন্তে মিলিয়ে যাওয়ার পরেই আকাশজুড়ে শুরু হলো আলোর খেলা। হাতিরঝিলের বাহারি পানির ফোয়ারায় ফোয়ারায় আরও বর্ণিল হয়ে ওঠে রঙের ছটা। সদরঘাটের আলোর খেলায় মেতে ওঠে বয়সের ভারে ক্লান্ত বুড়িগঙ্গা। একইসঙ্গে আধুনিক সাজে সজ্জিত বসুন্ধরা কনভেনশন হলেও জমে ওঠে ঝিকিমিকি আলোর মেলা। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের সফলতা উদযাপনে এভাবেই আলোয় আলোয় রাঙিয়ে তোলা হয়েছে রাজধানীকে।
জানা যায়, দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ছাড়িয়েছে ২০ হাজার মেগাওয়াট। এই অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতেই আয়োজন করা হয়েছে এ আলোক উৎসব। এসময় দেশাত্মবোধক গান ও সরকারের উন্নয়নের তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে ডিজিটাল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে। এসময় স্মরণ করা হয় মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে জাতির উন্নয়নের প্রতিটি ধাপে ধাপে ত্যাগ ও সাফল্যের ইতিহাস।
শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ঠিক ৭টা ২০ মিনিটে আলোর ঝলকানিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে হাতিরঝিল। ১৯৭১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পযন্ত বিদ্যুতের অবস্থা তুলে ধরা হয় লেজার শো-এর মাধ্যমে। এরপর শুরু হওয়া বর্ণিল আতশবাজিতে ঝিকমিক করে ওঠে রাতের আকাশ। একই সঙ্গে সবুজ লেজার রশ্মির বর্ণিল ছটা। রঙিন সাজে সেজে ওঠা রাতের আকাশ আরও রঙিন শোভায় সেজে ওঠে তাতে। টানা ২০ মিনিটের চোখ ধাঁধানো আলোক উৎসবের পর সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে নেমে আসে পরিতৃপ্তির মৌনতা।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, দেশের ১২৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৭ হাজার ৪৩ মেগাওয়াট। এর সঙ্গে ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো থেকে আরও ২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে প্রায় ২৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সেই হিসেবে মোট উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়ায় ২০ হাজার ১৩৩ মেগাওয়াট। এছাড়া আগামী ১০ সেপ্টম্বর ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হচ্ছে। যেহেতু ভারত থেকে দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তিতে বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে, তাই এই এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকে নিজস্ব উৎপাদন ক্ষমতা হিসেবে দেখছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের সময় বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ছিল চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট যা বর্তমানে ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। মাত্র ১০ বছরে এই অগ্রগতি নিঃসন্দেহে একটি বিরল অর্জন।’