দেশের ১০২টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) ১০৭টি উপজেলা ছাড়াও ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ১টি গ্রিড উপকেন্দ্রেরও উদ্বোধন করবেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। এই পরিকল্পনার একটি বড় অংশ দেশের সবগুলো উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা।এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী উপজেলাগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে আছে বড়পুকুরিয়া ২৭৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট, কেরানীগঞ্জ জেলার ব্রাহ্মণগাঁও ১০০ মেগাওয়াট ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র, কেরানীগঞ্জ জেলার আওরাহাটি ১০০ মেগাওয়াট ডিজেলচালিত, গাজীপুর জেলার কড্ডায় ১৪৯ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েলভিত্তিক, কেরানীগঞ্জ জেলার পানগাঁও ৩০০ মেগাওয়াট ফার্নেস অয়েল, সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক ও টেকনাফে ২০ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এদিকে, শতভাগ বিদ্যুতায়ন হওয়া উপজেলারগুলোর মধ্যে আছে ঢাকা জেলার ৫টি, কিশোরগঞ্জ জেলার ৬টি, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল, নাটোরের ৩টি, রাজশাহীর ৪টি, বাগেরহাটের চিতলমারী, যশোরে ৩টি, চুয়াডাঙ্গার দু’টি, পিরোজপুর সদর, মানিকগঞ্জের ৩টি, নওগার ৪টি, ঝালকাঠির ২টি, পাবনা সদর, সিলেটের ৪টি, খুলনার ডুমুরিয়া, ফেনী সদর, কুষ্টিয়া সদর, দিনাজপুরের ২টি, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, চট্টগ্রামের ৪টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩টি, কুমিল্লার ১১টি, নোয়াখালীর ২টি, রংপুরের ২টি, সুনামগঞ্জ দক্ষিণ, সাতক্ষীরার তালা, কক্সবাজারের ২টি, মেহেরপুরেরর গাংনী, ভোলার ২টি. সিরাজগঞ্জের ৪টি, নেত্রকোনার ২টি, মাদারীপুর সদর, নীলফামারী সদর, গাজীপুর ২টি, শরীয়তপুরের ৩টি, চাদপুরের ৩টি, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, বগুড়ার ৭টি, ফরিদুপরের ২টি, মাগুরার ২টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবে সরকার।
এ বিষয়ে আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভিশন-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাভুক্ত ভৌগলিক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ-প্রত্যাশী শতভাগ পরিবারের মাঝে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই স্লোগান ধারণ করে আলোর পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আরইবি জানায়, দেশের ৪৬০টি উপজেলার মধ্যে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট ৬টি, ২০১৭ সালের ১ মার্চ ১০টি, একই বছরে ১০ সেপ্টেম্বর ১০টি, ১০ ডিসেম্বর আরও ১০টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল ১৫টি, ১৪ জুলাই ৭টি, ৫ আগস্ট ২১ উপজেলায় শতভাগ উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর আগামী ১ নভেম্বর ১০২টি এবং পরদিন ২ নভেম্বর আরো ৫টি উপজেলায় তিনি শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধণ করবেন। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আরইবি আরও ৮০টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করার লক্ষ্য ঠিক করেছে বলে জানা যায়।
এছাড়া ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) প্রধান কার্যালয় ভবনের ও আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ বিভাগের নেওয়া কর্মপরিকল্পনায় দেখা যায়, ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার এবং ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে।২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এবং এক লাখ কিলোমিটার বিতরণ লাইন ও প্রয়োজনীয় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও ক্ষমতা বাড়ানো হবে।
