X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে করপোরেট কর ছাড় চান উদ্যোক্তারা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০২:৫০আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০২:৫০

স্টক এক্সচেঞ্জ পুঁজিবাজারের বর্তমান তারল্য সংকট দূর করতে  করপোরেট কর ছাড়, বন্ড লেনদেনের কর অব্যাহতি, স্মলক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত স্বল্পমূলধনী কোম্পানির কর অবকাশ সুবিধাসহ আগামী বাজেটে একগুচ্ছ প্রণোনা চেয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার(২ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভায়  অংশ নেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। তারা পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে বিভিন্ন ধরণের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সভায় দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ছাড়াও অংশ নেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ লিজিং ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স সার্ভেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল, উন্নয়ন ও বিশ্বমানের করতে এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সত্যিকারের পুঁজিবাজার গড়তে এসব প্রণোদনা প্রয়োজন। কর ছাড় দিলে দৈনিক লেনদেন বাড়বে, করপোরেট কর ব্যবধান বাড়লে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত হবে। এতে বাজার গতিশীল হলে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।

ডিএসইর প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেন পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমান হারে কর অবকাশের পরবর্তীতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে শতভাগ করছাড়, শেয়ার লেনদেনে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কর থেকে শূন্যশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ, ৫ কোটি টাকা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে করছাড়, ট্রেজারি বিল ও বন্ড লেনদেনে কর অব্যাহতি, বিনিয়োগকারীর লভ্যাংশ আয়ের সীমা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা, বহুজাতিক ও ব্লু-চিপ কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আকৃষ্ট করতে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করপোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ এবং স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়।

সিএসই’র প্রস্তাবনায় করপোরেট করহার পুনর্বিন্যাস চেয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিদ্যমান কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয় তিন বছর করমুক্ত, এসএমই কোম্পানির প্রথম তিনবছর শূন্য শতাংশ কর, করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে পাওয়া লভ্যাংশ আয় করমুক্ত, বন্ডের সুদ আয়ের উপর কর অব্যাহতি, বন্ড লেনদেনের উপর কর প্রত্যাহার, অল্টারনেট ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) কোম্পানীকে কর সুবিধা, চট্টগ্রাম ষ্টক এক্সচেঞ্জকে কর অব্যাহতি ও সদস্যদের উপর উৎসে কর কর্তন শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ করা।

 সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, বিগত বছরে পুঁজিবাজারে ব্যাপক কাঠামোগত ও আইনি সংস্কার হয়েছে। দেশের বিকাশমান অর্থনৈতিক অগ্রযাথায় পুঁজিবাজারের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দেশে লক্ষাধিক কোম্পানি নিবন্ধিত হলেও মধ্যম ও বৃহদায়তনের কমপক্ষে কয়েক হাজার কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ আছে। অথচ শুধুমাত্র কয়েকশ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে; যা একান্ত নগন্য। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর করতে বেসরকারি পুঁজি সঞ্চালনের প্রয়োজন। আর এ লক্ষ্য পূরণে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ মার্চেন্ট ব্যাংক খাতে গতিশীলতা আনতে করপোরেট কর ৩৫ শতাংশ করা, মূলধনী লাভের উপর কর কমানো, ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানিকে ট্যাক্স রিভেট দেওয়া ও ডিভিডেন্ড ইনকাম ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করার সুপারিশ করেন। বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক পি কে রায় পুন:বীমা কমিশনের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার, পুন:বীমা প্রিমিয়ারের উপর ভ্যাট ও উৎসে ভ্যাট প্রত্যাহার, জীবন বীমা পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার ও স্বাস্থ্য বীমার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন।

বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিএলএফসিএ) এর প্রতিনিধি এবং আইডিএলসি এর গ্রুপ কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জোবাইর রহমান খান এ খাতে করপোরেট কর হ্রাস, জিরো কূপন বন্ড এর কর অব্যাহতি, ডিভিডেন্ড আয় করমুক্ত করা, এসএমই অর্থকারী প্রতিষ্ঠানকে করমুক্ত, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোসহ ২২টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।

সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান  মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য উল্টো হয় এমন কিছুই করা হবে না। তিনি বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্যাংক, ইন্সুরেন্স ও মার্চেন্ট ব্যাংক অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। স্টক এক্সচেঞ্জ বিনিয়োগের বিরাট কেন্দ্র। যেসব দেশে স্টক এক্সচেঞ্জ উন্নত হয়, সেসব দেশে বিনিয়োগ বাড়ে।

/জিএম/জেজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা