বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন কারখানার প্রায় সব মেশিনারিজ জার্মানির তৈরি। তাই ওয়ালটন পণ্যের প্রতি জার্মান ক্রেতারা বেশি আগ্রহী। এর সূত্র ধরে ওয়ালটন টেলিভিশন এখন জার্মানিতে রফতানি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের আশা, এর মাধ্যমে ইউরোপে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত পণ্যটির বাজার সম্প্রসারণ কার্যক্রম আরও সহজ এবং উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। একইসঙ্গে বৃদ্ধি পাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
গত ২০ এপ্রিল গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন টিভি ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটে জার্মানিতে ওয়ালটন টিভি রফতানি কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান ডেপুটি হেড অব মিশন মাইকেল শুলথহাইস। তিনি বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি বাজার জার্মানি। এতদিন জার্মানিতে বাংলাদেশের রফতানি খাত নির্ভরশীল ছিল তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর। ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য দিয়ে জার্মানিতে নতুন রফতানি খাতের সূচনা করলো ওয়ালটন। এতে দুই দেশের বাণিজিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’
এর আগে কারখানা প্রাঙ্গণে পৌঁছে জার্মান ডেপুটি হেড অব মিশন ওয়ালটনের বিশাল কর্মযজ্ঞের ওপর নির্মিত ভিডিও ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন। তার মন্তব্য, ‘উচ্চমানের পণ্য উৎপাদন ও রফতানির মাধ্যমে ওয়ালটন জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। বিশ্বের সেরা মেশিনারিজ সমৃদ্ধ ওয়ালটন কারখানায় পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখে আমি অভিভূত।’
মাইকেল শুলথহাইসের স্ত্রী শার্লোট ক্লেমেনসেনকে দেখা গেছে অনুষ্ঠানে। এছাড়া ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম ও পরিচালক রাইসা সিগমা হিমা। তারা কেক ও ফিতা কেটেছেন এই আয়োজনে। এরপর ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন তারা। পর্যায়ক্রমে অতিথিরা ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর কম্প্রেসর, এয়ার কন্ডিশনার, এলইডি টেলিভিশন ইত্যাদি উৎপাদন প্রক্রিয়া সরেজমিনে ঘুরে দেখেছেন। এ সময় আরও ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ূন কবীর, উদয় হাকিম, গোলাম মুর্শেদ, আলমগীর আলম সরকার, ইউসুফ আলী ও আমিন খান, উপ-নির্বাহী পরিচালক ফিরোজ আলম, মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস প্রমুখ।
অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে নিযুক্ত ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের (আইবিইউ) শাখার ইনচার্জ আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের কাছ থেকে ৩ হাজার ৬০০ পিস টেলিভিশন নিচ্ছে। এ বছরই তারা ওয়ালটন থেকে আরও ১ লাখ পিস টিভি নেবে।
ওয়ালটনের আইবিইউ শাখার সভাপতি এডওয়ার্ড কিম জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি ব্র্যান্ডের কাতারে আসার লক্ষ্য রয়েছে ওয়ালটনের। আর ২০২২ সালের মধ্যে ১০ কোটি ডলার সমপরিমাণের পণ্য রফতানির লক্ষ্যে কাজ চলছে।
ওয়ালটনের জার্মান মার্কেট বিষয়ক প্রধান তাওসীফ আল মাহমুদ জানান, এ বছরের শেষ নাগাদ বড়দিন উপলক্ষে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অনলাইন কেনাকাটার প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে পাওয়া যাবে ওয়ালটনের টিভি, রেফ্রিজারেটর ও এসি। ফলে ইউরোপের যেকোনও দেশের ক্রেতারা ঘরে বসেই কিনতে পারবেন ওয়ালটন পণ্য।
ওয়ালটন টেলিভিশন বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক মান ও স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে বানানো ওয়ালটন টেলিভিশন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মুক্ত ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এতে রয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফলে টেলিভিশন তৈরি ও রফতানিতে ওয়ালটন অর্জন করেছে সিই, আরওএইচএস, ইএমসি ইত্যাদি সনদ।
