X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

ডিম-সবজিতে স্বস্তি, ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজ-আদার

শফিকুল ইসলাম
২৫ মে ২০১৯, ০৮:০১আপডেট : ২৫ মে ২০১৯, ২১:১৪

ডিম-সবজিতে স্বস্তি, ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজ-আদার আপাতত কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে মাছ, সবজি ও ডিম। তবে, ঈদ উপলক্ষে ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজ-রসুন-আদাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার। একইসঙ্গে দাম বেড়েছে দেশি মুরগি, ব্রয়লার ও লাল লেয়ার মুরগিরও। সেই ঝাঁজে-দামে নাভিশ্বাস উঠেছে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের। শুক্রবার (২৪ মে) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে শসা, বেগুন, টমেটো, পটল, ঝিঙা, বরবটি, ধুন্দুলের। তবে, আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা পেঁপে। বাজার ভেদে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি দরে।

শসা বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা।

এদিকে, কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া মাছের দাম আরও চড়া রয়েছে। পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা কেজি দরে। রুই ২৮০-৬০০, পাবদা ৬০০-৭০০, টেংরা ৫০০-৮০০, শিং ৫০০-৬০০ এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকা কেজি।

বিভিন্ন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, রোজার সময় যে সব নিত্যপণ্যের চাহিদা বেশি থাকে, তা বিক্রি করা হয়েছে। এখন ক্রেতারা ঈদের বাজার করছেন। তাই ঈদে যে সব পণ্যের প্রয়োজন সেসব পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। ফলে দাম কিছুটা বেশি।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, রাজধানীর বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ডিম ও বেশিরভাগ সবজির দাম। তবে, এই সময় দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার। একইসঙ্গে দেশি মুরগি, ব্রয়লার ও লাল লেয়ার মুরগির দামও বেড়েছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন দাম ঠিক করে দেওয়ায় অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। একইভাবে খাসির মাংসের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে এলাকা ও বাজার ভেদে গরু ও খাসীর মাংস সরকার নির্ধারিত ৫২৫ টাকার জায়গায় ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে কোনাপাড়া বাজারের মাংস ব্যবসায়ী একরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেক ভালো মানের গরু জবাই করি। তাই ৫২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে লোকসানের কবলে পড়বো। এ কারণেই নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে পারছি না।’

তবে, একই বাজারের ক্রেতা সাইদুল হক বলেন, ‘এলাকা ও বাজারটি মূল শহর থেকে কিছুটা দূরে বলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বা সরকারের বাজার মনিটরিং টিম এখানে আসে না। তাই সুযোগ পেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।’

ক্রেতারা জানান, মূল শহরের অনেক বাজারই রয়েছে সেখানে অনেক ভালো মানের গরুর মাংস তারা সরকার নির্ধারিত দরেই বিক্রি করছেন।

যাত্রাবাড়ি বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী, রেহানা স্টোরের মালিক তোফাজ্জেল হোসেন জানান, রোজার বাজার শেষ হওয়ায় ক্রেতারা এখন ঈদের বাজার করছেন।

ঈদের সময় জামা-কাপড়ের পাশাপশি পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদা বাড়ে। এ সপ্তাহে এ জাতীয় পণ্যই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে অনেকে ভবিষ্যতের জন্য পেঁয়াজ সংরক্ষণ করছেন। অনেক ক্রেতাই এখন বেশি করে পেঁয়াজ কিনছেন। ফলে পেঁয়াজের ওপর কিছুটা চাপ বেড়ে যাওয়ায় সামন্য দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ২৭ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, তা এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৯ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে।

ডেমরা অঞ্চলের কোনাপাড়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী, সানরাইজ স্টোরের মালিক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘রোজা শেষ পথের হওয়ায় দাম কমেছে এসময়ের প্রয়োজনীয় পণ্যের। এর মধ্যে রয়েছে ছোলা, চিনি ও তেল। মানুষ এখন ঈদের বাজার করছে। এই সময়ে বিক্রি বেড়েছে যেসব পণ্যের তার মধ্যে পোলাওয়ের চাল, ঘি ও বিভিন্ন ধরনের মসলা রয়েছে।’ তবে, ভোজ্য তেলের দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি জানান।

জানতে চাইলে কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শুক্কুর ট্রেডার্সের মালিক শফিকুল ইসলাম লাল মিয়া বলেন, ‘চাহিদা তুলনায় সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় এ জাতীয় পণ্যের দাম সামান্য বেড়েছে। তবে এটি সাময়িক। সরবরাহ স্বাভাবিক হলেই দাম কমে যাবে। এ ছাড়া ঈদের সময় তো এ জাতীয় পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে বলে ক্রেতারা একটু বেশি পরিমাণে এ জাতীয় পণ্য কেনেন। এ কারণেও চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারে সরবরাহ হচ্ছে না।

এদিকে, বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ডজনে কমেছে ১০ টাকার ওপরে। পাশাপাশি দেশি মুরগির দাম বেড়েছে স্বাভাবিক হারে। বিপরীতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত।

মুরগি ব্যবসায়ীরা সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছেন ১৫৫ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এর দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। আর লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে লাল মুরগি ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে।

মুরগির দামের বিষয়ে কোনা পাড়া বাজারের মুরগি ব্যাবসায়ী আরমান শেখ বলেন, ‘সামনে ঈদ। তাই চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে সাপ্লাই কম। দাম কিছুটা বেড়েছে।’ ঈদ আসতে আসতে দাম আরও বাড়বে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা