X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ কিংবা ব্রিটেন দ্বন্দ্ব : বাঙালি ও ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের

মাসুদা ভাট্টি
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১২:২৫আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৬:২০

মাসুদা ভাট্টি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত মীর কাসেম আলীর ফাঁসির চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হওয়ার পরদিন পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারের সামনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি সমাবেশ করে। একই সময় একই স্থানে এই রায়ের বিরোধিতাকারীরাও একটি সমাবেশ করে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা যায়, উভয় পক্ষের সঙ্গে পুলিশ কথা বলছে এবং সব পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে এক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর শোনা যায়, যেখানে তিনি বলছেন, ‘খেয়াল রাখবেন যেন ওরা শহীদ মিনার দখল করতে না পারে, তাহলে আর আমাদের কিছু থাকলো না।’ বাক্যটি খুব নিরীহ কিন্তু গভীর তাৎপর্যময়। এই বাক্যের সূত্র ধরেই আমরা ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির বাঙালি জাতীয়তাবাদী অতীত ও আজকে সেই অতীতকে অগ্রাহ্য করে নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক ইসলামের শিকার হওয়া ‘নব্য-মুসলিম’ বর্তমানকে ব্যাখ্যা করতে পারি।
কেউ যদি গভীরভাবে আলতাব আলী পার্কে উপস্থিত দুই পক্ষের মারমুখী অবস্থানের ভিডিওচিত্র পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে দেখতে পাবেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মানবতাবিরোদী অপরাধের বিচার চাওয়া পক্ষটি বয়সে প্রবীণ এবং তাদের বেশিরভাগই রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও অভিজ্ঞতা। তাদের সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের কেউ নেই, সে কথা বলছি না কিন্তু তারাও মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা, এখানে তাদের জন্ম নয়। অন্যদিকে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে, তারা অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং মূলত এখানে জন্ম নেওয়া ও বড় হওয়া প্রজন্ম। তবে তাদের নেতৃত্বে কিংবা সঙ্গে যে বাংলাদেশ থেকে আসা কেউ নেই, সেটাও সত্য নয়। দু’পক্ষের এই ছবিটি আমাদের সামনে উন্মুক্ত করে একটি বিশাল তাৎপর্যময় অধ্যায়। আর তা হলো, ব্রিটেনের প্রজন্মের ব্যবধানে ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির অবস্থান, নৈতিকতা, রাজনীতি এবং ধর্মীয় অবস্থানের পরিবর্তন। সেটা কী রকম সে ব্যাখ্যাতেই যাচ্ছি।
আমরা সত্তরের দশকের বাংলাদেশি কমিউনিটির দিকে যদি দৃষ্টিপাত করি, তাহলে দেখতে পাই, এদেশে বাঙালি জাতীয়তবাদী রাজনীতির জয়জয়কার, যার ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধে এদেশের বাঙালি কমিউনিটি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মূলত তহবিল সংগ্রহ, জনমত তৈরি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পক্ষে স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে। তাদের কাছে তখন এদেশে টিকে থাকার চেয়ে বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জন অনেক বেশি জরুরি ছিল। অনেক বাঙালি গৃহবধূ তখন নিজের গহনা বিক্রি করে মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে অর্থ দিয়েছেন, ট্রাফলগার স্কোয়ারে যে বিশাল জমায়েত হয়েছিল তাতে বাঙালির অংশগ্রহণ ছিল অভূতপূর্ব। ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ও শ্বেতাঙ্গ সমাজের কাছ থেকে নিজেদের অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম বাংলাদেশি কমিউনিটিকে করতে হয়েছিল সে সময় তার মূল ও মৌলিক স্পৃহা আসলে এসেছিল এই স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের ভেতর দিয়ে। বিশেষ করে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার নেতৃত্বেও কিন্তু একই সঙ্গে এদেশের বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারাই ছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, সে সময় যে ক’জন মুষ্টিমেয় বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন, তাদের কাউকেই বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনেও দেখা যায়নি, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে যে ব্যক্তি লন্ডনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গড়ে ওঠা অফিসটিতে আগুন লাগিয়ে মূল্যবান দলিলদস্তাবেজ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই ব্যক্তিটিই পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটি একটি মাত্র উদাহরণ, এ রকম আরও উদাহরণ প্রমাণসহ দেওয়া সম্ভব।

বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ ও তাকে কেন্দ্র করে দেশে-বিদেশে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তা ছিল সম্পূর্ণ সেক্যুলার এবং ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া পাকিস্তানের নিগড় থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে। এক্ষেত্রে যদি বলা হয়, বাঙালি মুসলমান আসলে পাকিস্তানের কট্টর ও সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদী-শেকল থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিল, তাহলে বোধ করি অত্যুক্তি হবে না। যে কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর আশির দশকে এদেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের বাঙালির অনেকেই সেক্যুলার লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, কিন্তু তাতে তাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে কোনও ধরনের চিড় ধরে না এবং বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিচয়ে পরিচিত হতেও তাদের কোনও সমস্যা হয়নি। বরং ব্রিটেনে তাদের বাঙালি বা বাংলাদেশি পরিচয় একটা গর্বের জায়গা হয়ে দাঁড়ায়। কেননা একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তারা একটি জাতি ও দেশ প্রতিষ্ঠা করেছে, একথা ব্রিটেনের মূলধারা ও সাধারণ মানুষ জানে ও স্বীকার করে। ফলে দ্বিতীয় প্রজন্মের বাঙালির জন্য ব্রিটেনে নিজেকে বাঙালি বা বাংলাদেশি পরিচয় দেওয়াটা কোনোভাবেই অসম্মানজনক ছিল না।

কিন্তু গোল বাধে পূর্ব লন্ডনের একটি মসজিদকে কেন্দ্র করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি শুরু হওয়ার পর থেকে। লন্ডনের সেক্যুলার রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ব্রিক লেইন মসজিদ ওতপ্রোতভাবে জড়িত, এমনকি জেনারেল এরশাদের শাসনামলে এই মসজিদের জন্য বাংলাদেশ থেকে অনুদান সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়, যা দিয়ে মসজিদের ভেতরকার সৌন্দর্য বাড়ানো হয়। অন্যদিকে চিহ্নিত মানবতাবিরোধী অপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে পূর্ব লন্ডন মসজিদকে ঘিরে তৈরি হয় নতুন রাজনীতি, যার ভিত্তি মূলত ধর্ম। এই মসজিদ থেকে বাঙালি কমিউনিটিকে ধর্মীয় উগ্রবাদী চিন্তাধারার বইপুস্তক সরবরাহ ছাড়াও একটা স্টাডি গ্রুপ  তৈরি করা হয়। যা মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বিপক্ষে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রচারণা চালায়। পূর্ব লন্ডনের সোমালি কমিউনিটিকেও তারা তাদের পাশে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। মোটকথা এই মসজিদকে কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়, যার মধ্যে ইয়ং মুসলিম অর্গানাইজেশন, ইসলামিক ফোরাম ইউরোপ, হিজবুত তাহ্‌রীর অন্যতম। যেগুলোর প্রত্যেকটিই আসলে উগ্র ধর্মীয় প্রচারণার জন্য ব্রিটেনে পরবর্তী সময়ে মূলধারার গণমাধ্যমের নজর কাড়ে এবং তারা ঢালাওভাবে বাংলাদেশি কমিউনিটির ওপরই এই ধর্মান্ধ রাজনীতির দায় চাপাতে শুরু করে। স্পষ্টতই নব্বইয়ের দশক জুড়ে ব্রিটেনের বাংলাদেশিশী কমিউনিটি ব্রিক লেইন মসজিদ ও পূর্ব লন্ডন মসজিদের ভেতরকার দ্বন্দ্ব দেখতে পায়। যে দ্বন্দ্ব আর কিছুই নয়, বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের দ্বন্দ্ব। পূর্ব লন্ডন মসজিদ মধ্যপ্রাচ্য এবং পাকিস্তান থেকে সরাসরি সাহায্য পায় এবং তারা একটি বিশাল মুসলিম ‘উম্মাহ’র পক্ষে জোর প্রচারণা চালাতে শুরু করে, যেখানে বাঙালি পরিচয়কে তারা সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করে তরুণদের কেবল  মুসলিম পরিচয়ে পরিচিত করাতে শুরু করে। অচিরেই ইস্ট লন্ডন মসজিদের এই প্রচারণা ছড়িয়ে পড়ে ব্রিটেনের সর্বত্র, তারা তাদের নিজেদের আদর্শে একের পর এক মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার গড়ে তোলে, কিন্তু অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ব্রিক লেইন মসজিদের পক্ষে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও উদার ইসলামের পক্ষে প্রচারণা চালানো কিংবা এই মতাদর্শের কোনও প্রতিষ্ঠান তৈরি সম্ভব হয়নি।

ফলে তৃতীয় ও অপেক্ষাকৃত তরুণদের সামনে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের বাঙালিকে অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, ঘরে-বাইরে সর্বত্রই। বিশেষ করে, বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে তৃতীয় ও তরুণরা তাদের এই দেশপ্রেম, স্বাধীনতা ইত্যাদিকে নিয়ে কটাক্ষ শুরু করে। কিন্তু সবচেয়ে বড় আঘাতটি আসে ধর্মকে নিয়ে যখন প্রশ্ন করা হয় তখন, কারণ পুরনোদের ইসলাম-পালনকে নতুনরা ‘বাংলাদেশি ইসলাম’ বলে অবহেলা করে এবং নিজেদের ‘নতুন ও খাঁটি মুসলমান’ হিসেবে দাবি করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, পুরনোরা শব-ই-বরাত পালনে উৎসাহী এবং একে একটি উৎসব হিসেবে মনে করে। অন্যদিকে তরুণদের বোঝানো হয়েছে, এটা বেদায়াত, ইসলামে এর কোনও জায়গা নেই। পুরনোরা ব্রিক লেইনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের বাঙালিদের একটি বিশাল মিলনমেলা সৃষ্টির লক্ষ্যে বৈশাখী মেলার আয়োজন করে, যা আসলে লোকায়ত বাঙালি সংস্কৃতির অংশ, কিন্তু নতুনরা তাকে কেবল অস্বীকারই করেনি, তারা শক্তি প্রয়োগে এই মেলা বন্ধের চেষ্টা করেছে, কারণ তাদের কাছে বৈশাখী মেলা বেদায়াতি। মূলত পুরনো ও নতুনদের এই দ্বন্দ্বে টাওয়ার হ্যামলেটস (সবচেয়ে বড় বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা)-এ দু’টি বিবদমান পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। যারা নিজেদের পক্ষে সরকারি ফান্ড ও সমর্থন আদায়ে উঠেপড়ে লাগে এবং দেখা যায় যে, নতুন-মুসলিম পক্ষটি এতে কিছুটা জয়ীও হয়। কারণ তাদের পক্ষে ধর্মকে ব্যবহার করে এমপি হিসেবে বিজয় লাভ করা জর্জ গ্যালওয়ে এবং পরবর্তী সময়ে বাঙালি একজন মেয়র সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা আপাত বিজয় লাভ করলেও সেক্যুলার ও বাঙালি জাতীয়বাদী শক্তিটি কিন্তু তাদের অবস্থান ত্যাগ করে না। তারা আবার একত্রিত হয় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে টাওয়ার হ্যামলেটসে তাদের অস্তিত্বের লড়াই চলতে থাকে। তাদের হাত দিয়ে ব্রিক লেইন সংলগ্ন এলাকা ‘বাংলা টাউন’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চায়না টাউনের মতো এখানেও অসংখ্য পর্যটক আসে, বাংলাদেশি খাবার খেতে কিংবা ঘুরতে। সুতরাং, তাদের অর্জনতো কোনোভাবেই কম নয়। অন্যদিকে, তাদের বিরোধিতাকারী পক্ষটি যারা ধর্মভিত্তিক উন্মাদনা ছড়িয়ে তরুণদের আকৃষ্ট করছে, তাদের অর্জন কমিউনিটিতে হিংসা ছড়ানো, মূলধারার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ তৈরি, ধর্ম দিয়ে মূলধারা থেকে কমিউনিটিকে আলাদা করা, মানবতাবিরোধী অপরাধের পক্ষে বিপুল অঙ্কের অর্থ ছড়ানো। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠন আইসিস-এর প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে দেখুন, সেকুল্যার বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী পক্ষটি বর্ণবাদের সঙ্গে সংগ্রামের পাশাপাশি এখনও মূলধারার সঙ্গে সহাবস্থানের পক্ষে কথা বলে এবং কাজও করে যাচ্ছে। স্মরণ করতে পারি যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ব্রিটেনে এসে ওয়াজ করার সময় এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ সিলেটি কমিউনিটিকে হেয় করে বক্তব্য রেখেছিলেন এবং কমিউনিটি যখন তার বিরুদ্ধে ফেটে পড়েছিল ক্ষোভে, তখন একদিকে বয়স্ক প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের বাঙালিরা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন, অন্যদিকে তাদেরই সন্তানরা সাঈদীর পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। কেন তারা সাঈদীর পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, সে প্রশ্নের উত্তর দীর্ঘ। তবে এখন এটুকু বলেই শেষ করছি যে, এই তরুণরা সুফিবাদ সম্পর্কে জানেনি, জানেনি উদার বাঙালির ইসলাম সম্পর্কেও। তারা কেবল জেনেছে ইসলাম ধর্মের রাজনৈতিক রূপ সম্পর্কে এবং ৯/১১-র পরে পশ্চিমে ইসলাম সম্পর্কে ঘৃণা সম্পর্কে, যা তাদের ভেতরে আরও গভীরভাবে বসিয়ে দিয়েছে চৌধুরী মঈনুদ্দিনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধী ও তার তৈরি ইস্ট লন্ডন মসজিদের মতো কিছু প্রতিষ্ঠান। ফলে তারা একটি কাল্পনিক কমিউনিটি (ইমাজিনড কমিউনিটি)-র প্রতি আকৃষ্ট ও ধাবিত হয়েছে, যার মূল ভিত্তি রাজনৈতিক ইসলাম। আজকাল এ বিষয়টি নিয়ে চারদিকে কথাবার্তা চলছে, চলছে গবেষণা।

এত কথা বলে আমি যে কথাটি বলতে চেয়েছি, তা হলো, ব্রিটেনেই নয়, বাংলাদেশেও যারা আসলে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও রাজনীতির সঙ্গে থেকেছেন, তাদের পক্ষে ধর্মীয় উগ্রবাদের প্রতি সমর্থন দেওয়া কখনোই সম্ভব নয়। আজকে ব্রিটেনে যারা আলতাব আলী পার্কে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, তারাই একাত্তরে যুদ্ধ করেছেন, তারাই আশির দশকে এদেশে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, তারাই এদেশে হাউজিং বা শিক্ষার জন্য আন্দোলন করেছেন এবং তারাই এদেশে মূলধারার পাশাপাশি থেকে একটি শক্তিশালী বাঙালি-সংস্কৃতিকে লালন করেছেন বা করছেন। যার একটি প্রপঞ্চ হলো ধর্ম বা ইসলাম, যার সঙ্গে মানবতার কোনও বিরোধ নেই, নেই উন্নয়ন এবং আধুনিকতারও।

লেখক: কলামিস্ট

 আরও খবর: ভারত নয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার হবে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা বা ইন্দোনেশিয়ার কয়লা

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন-রামাফোসার ফোনালাপ
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন-রামাফোসার ফোনালাপ
ভিসা-পাসপোর্ট হারিয়ে প্রবাসী অজ্ঞান, ৯৯৯-এ কলে উদ্ধার
ভিসা-পাসপোর্ট হারিয়ে প্রবাসী অজ্ঞান, ৯৯৯-এ কলে উদ্ধার
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ