X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে!

ফারজানা হুসাইন
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৩:১৩আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৩:৩৪

ফারজানা হুসাইন ১. প্রেম স্বর্গীয়। মানবপ্রেম, জীবপ্রেম কিংবা ঈশ্বরপ্রেম- প্রেমের সকল রূপই সুন্দর আর হৃদয়গ্রাহী। যুগে যুগে এই প্রেমকে নিয়ে কবিরা কবিতা লিখেছেন, লেখক পাতার পর পাতা লিখেছেন প্রেমের গল্প-উপন্যাস। প্রেমের জন্য বাদশাহ বিশাল ইমারত গড়েছেন, কোনও রাজা আবার রাজ-সিংহাসনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে জন-সাধারণের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাই আপাত দৃষ্টিতে প্রেম-ভালোবাসা এক বিস্ময়, এক দারুণ বাজি যে তার রুমাল নাড়ে আমাদের পরানের গহীন ভেতর।
কিন্তু এই প্রেম ভালোবাসা কি আসলেই সবসময় সুখকর? মনে আছে আমি তখন মাত্র স্কুলে পড়ি। হঠাৎ একদিন দেখি উপরের ক্লাসের এক আপুকে নিয়ে স্কুলের শিক্ষকদের রুমে তুমুল হট্টগোল চলছে। কোনও ক্লাসেই শিক্ষক আসেনি, ছাত্রী-শিক্ষক সবাই কিছু একটা বিষয় নিয়ে নিচু গলায় কথা বলছে। পরে জানতে পেরেছিলাম ক্লাস নাইনের এক আপুকে বেশ কিছুদিন ধরে রাস্তায় উত্যক্ত করছিল এক বখাটে ছেলে। স্কুলের সামনের রাস্তায় রোজ দাঁড়িয়ে থাকত, চটুল গান গাইত, চিঠি-ফুল এসব ছুড়ে দিত চলন্ত রিক্সায়, ওই মেয়েটির রিক্সার পেছন পেছন সাইকেল চালিয়ে বাড়ি পর্যন্ত চিনে নিয়েছিল ছেলেটি।
প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় সেই বখাটে ছেলেটা শেষে একদিন স্কুলের পথে মেয়েটিকে বোতলে করে কিছু একটা ছুড়ে মারে রিক্সায়। প্রথমে মনে হয়েছিল পানি জাতীয় কিছু, কিন্তু পরক্ষণেই ভীষণ জ্বলুনি অনুভব করলো মেয়েটি, যেন গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে কেউ। কপাল ভালো মেয়েটির যে রিক্সার হুড তোলা ছিল তাই, খুব বেশি এসিড গায়ে লাগেনি, কাঁধ আর হাতের কিছু অংশ পুড়িয়েই সারাজীবনের জন্য দগদগে একটা দাগ রেখে এসিড সে যাত্রা রেহাই দিয়েছে মেয়েটাকে। একটাই অপরাধ ছিল মেয়েটির- বখাটে অশিক্ষিত রাস্তার ওই অসভ্য ছেলেটির প্রেমে সে সাড়া দেয়নি। কয়েকদিন স্কুলে ছাত্রী-শিক্ষকের মাঝে খুব উত্তেজনা দেখা গেল, মেয়েটি কিছুদিন স্কুলে কামাই দিল, পরে যখন আবারও সে স্কুলে আসতে শুরু করলো তখন বোরখা পড়ে নিজেকে আড়াল করে বাবা কিংবা ভাইয়ের সঙ্গে; যেন অপরাধ তার! ওদিকে ছেলেটিকে ঠিকই দেখা গেলো স্কুলের মোড়ের চায়ের দোকানের সামনে- বীরদর্পে হিন্দি চটুল গান গেয়ে চলেছে।

ওই মেয়েটার সৌভাগ্য সে বেঁচে আছে, বেঁচে গেছে সে যাত্রায়। সব মেয়ে বাঁচতে পারে না, এদের কারও কারও নাম হয় রিশা।

২. বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে জানা যায়, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওবায়দুল বলেছে, প্রায় একবছর আগে সুরাইয়া আক্তার রিশা ও তার মা কাপড় বানানোর জন্য তার টেইলার্সে গেলে প্রথম দেখাতে সুরাইয়া আক্তার রিশাকে তার পছন্দ হয়। এর ২/৩ দিন পর সে রিশার মায়ের কাপড়ের মাপ জানার অজুহাতে তার কাছে থাকা রিশার মায়ের মোবাইল নাম্বারে ফোন দেয়। ফোন রিশা ধরলে ওবায়দুল জানতে পারে ওই ফোন নম্বরটি রিশা ব্যবহার করে। এরপর থেকে ওবায়দুল প্রায়ই রিশার মোবাইলে ফোন দিতে থাকে এবং মোবাইলের মাধ্যমে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়, এমনকি রিশার সঙ্গে কথা বলার জন্য রিশার স্কুলের সামনেও হাজির হয় ওবায়দুল। রিশার সঙ্গে জোর করে কথা বলতে চাইলে রিশা অস্বীকৃতি জানায় ইতোমধ্যে ওবায়দুল জানতে পারে, অন্য একটি ছেলের সঙ্গে রিশার প্রেমের সম্পর্ক আছে। এই কথা জানার পর তার মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওবায়দুল বলে, রিশা যাতে অন্যকোনও ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক করতে না পারে সেজন্য সে তাকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার উপযুক্ত শিক্ষা মেয়েটি পেয়েছে বৈকি। ওবায়দুলের ছুরির আঘাতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রিশার মৃত্যু হয়।

প্রেমের প্রস্তাবে সম্মত না হলে যে কতটা করুণ পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে তার প্রমাণ কোনও মেয়ে দেয় এসিড দগ্ধ হয়ে বেঁচে থেকে, কেউবা প্রমাণ দেয় জীবন দিয়ে। কাউকে পছন্দ করা বা ভালোবাসা মানে সেই ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে মূল্যায়ন করা, তার পছন্দ-অপছন্দকেও ভালোবাসা - একথা তরুণ প্রজন্মকে যেন কেউ শেখায় না। আমাদের সমাজে প্রেম নিয়ে গুরুজনের সঙ্গে কথা বলা যায় না, এখানে প্রেম-ভালোবাসা হলো ট্যাবু। তাই তরুণেরা শেখে না যে, রাস্তায়-স্কুল, কলেজের সামনে মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিব্রত করা, ফোনের নম্বর জোগাড় করে মেয়েটিকে বারবার প্রেম নিবেদন করা অপরাধ। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে মেয়েটির অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে ঈর্ষাকাতর হয়ে তাকে এসিড ছুড়ে মারা অপরাধ, হত্যা করা অপরাধ।

ধর্ম গ্রন্থেই কেবল ইউসুফ-জুলেখা আর রাধা-কৃষ্ণের বসবাস, গল্প উপন্যাসেই কেবল ‘মোরা আর জনমের হংসমিথুন’ প্রেমের দেখা মেলে, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্মতিতে প্রেমকে ভালো চোখে দেখা হয় না এখনও। একবার এক আত্মীয়া বয়স্ক ভদ্রমহিলা এক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরে বেশ কটাক্ষ করে জানালেন- এ তো ছেলে-মেয়ের নিজেদের পছন্দের বিয়ে। লাজ-লজ্জার বালাই নেই কোনও, বরং নতুন বর-কনে খুবই হাস্যোজ্জ্বল ছিল বিয়ের সন্ধ্যায়। কনে নাকি বিদায়ের বেলায় মাকে জড়িয়ে ধরে একটুও কাঁদেনি।

হাসতে হাসতে উত্তর দিয়েছিলাম - বিয়ে তো কারাদণ্ড নয় যে মেয়েকে হাপুস নয়নে কাঁদতে হবে। পছন্দের মানুষের সঙ্গেই তো জীবন আর স্বপ্নের বেসাতি গড়তে হয়, অপছন্দের মানুষকে কেউ কেন বিয়ে করবে? আমার উত্তর খুব পছন্দের হয়নি যে, তা আমার সেই আত্মীয়ার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।

নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্মতির প্রেমকে আমরা খুব মজার কিছু নাম দেই- কখনও এর নাম 'অসামাজিক কার্যকলাপ', আবার কখনও এর নাম হয় 'শৃঙ্খলাভঙ্গ'।

পত্রিকারই সূত্রে জেনেছিলাম, গতবছরের মার্চে বগুড়ার ওয়ান্ডারল্যান্ড এমিউজমেন্ট পার্কে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কিছু তরুণ-তরুণীকে আটক করেন। তাদের জরিমানা করা হয়। কান ধরে উঠবসের শাস্তি দেওয়া হয়। তাদের ছবি তুলে সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া হয়। তাদের অপরাধ, তারা পার্কে গিয়েছিল, পাশাপাশি বসে গল্প করেছিল। আর একে নাম দেওয়া হয়েছে ‘অসামাজিক’ কার্যকলাপ। আবার গত মে মাসের ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর বন্ধুদের গড়া ভালোবাসার বৃত্তের মাঝে দাঁড়িয়ে একে অন্যকে প্রেম নিবেদনের ঘটনাটাকে কমার্স কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’। এই পারস্পরিক সম্মতিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় ওই দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই কিশোর-কিশোরীর স্কুল ড্রেস পরে প্রেম নিবেদনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আমারও নজরে আসে। ঠাট্টার ছলে হেসে মনে মনে বলেছিলাম, এই কিশোর-কিশোরীগুলোকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলতাম - বেশি ছোট যে তোরা এখনও। প্রেম খুব বড় একটা শব্দ, ওই গুরুগম্ভীর সম্পর্কের বোঝা বইবার মতো শক্ত কাঁধ আর জীবনবোধ এখনও তৈরি হয়নি তোদের। তোরা বরং হাত মিলিয়ে বন্ধু হ- বন্ধুত্বের চেয়ে প্রেম বা অন্য কোনও সম্পর্ক কখনোই বড় নয়।

আমরা বন্ধুত্ব বুঝিনা, প্রেমের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি। আমরা পারস্পরিক সম্মতি বুঝিনা, অনৈতিকতার বেড়াজালে জড়াই তাকে। দুজন নরনারী হাত ধরে পথ চললে দেশ-সংস্কৃতি-সমাজ রসাতলে গেল বলে ছি ছি করে ওঠি আমরা, অথচ পাশের ফ্লাটের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া যখন নির্যাতনের পর্যায়ে চলে যায় তখন ওদের নিজেদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে আমরা বসার ঘরের টিভির ভলিউমটা বাড়িয়ে দেই শুধু। পরদিন পত্রিকার পাতায় পারিবারিক নির্যাতনের সংবাদ পড়ে আহা উহু করি মাত্র।
৩.
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেয়েরা এগিয়ে চলেছে, পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাই নারীর সহাবস্থান স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, চাকরি আর ব্যবসাক্ষেত্রে। প্রত্যহ যে হাজার হাজার মেয়ে পড়াশুনা আর কাজের জন্য ঘরের বাইরে বের হয়, তাদের বিশাল অংশই কোনও না কোনওভাবে হয়রানির শিকার হয়। পথে-ঘাটে যৌন হয়রানি ছাড়াও ছোট-খাটো হয়রানি, হেনস্তা যেন গা সওয়া বিষয়। মুদি দোকানদার, পাড়ার উঠতি মাস্তান, চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা প্রেমিক-ভেকধারী পুরুষ এমনকি বাসের কন্ডাকটার থেকে রিক্সাওয়ালা- কেউই ‘চুমকি’ একা পথ চললে নিরব থাকে না বরং চটুল গান গেয়ে ওঠে, শিস্ বাজায়, বিশ্রী অঙ্গভঙ্গি করে চুমকির সঙ্গী হতে চায়!

ওবায়দুল-রা একদিনেই কিন্তু হন্তারক হয়ে ওঠেনি। গত একটা বছর ধরে সে রিশার মোবাইল ফোনে ফোন করে উত্যক্ত করেছে, মেয়েটির স্কুলের সামনে উপস্থিত হয়ে মেয়েটিকে তার সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য করেছে। ক্লাস এইটে পড়া মেয়েটি দিনের পর দিন এই হয়রানি সহ্য করেছে, কারণ তাকে পরিবার শিখিয়েছে, সমাজ শিখিয়েছে - মেয়েদের বুক ফাটে কিন্তু মুখ ফোটে না।

বাংলা ট্রিবিউনের সূত্র ধরেই জানতে পারি, রিশাকে ফোনে উত্যক্ত করার বিষয়টি জানতে পেরে রিশার মা ও দাদী ওবায়দুলকে নিষেধ করে রিশার সঙ্গে যোগাযোগ করতে। প্রশ্ন জাগে রিশার দাদী বা মা কেন বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানায়নি? কেন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি তারা? দেশে কি আইন নেই? অবশ্যই আছে।

যে কোনও রকমের নারী নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর আইনের প্রণয়ন আর প্রয়োগ আছে আমাদের দেশে। হয়রানি আর নির্যাতন মোকাবিলায় দেশের প্রচলিত আইন আর নিজেদের অধিকার সম্পর্কিত বিষয়ে নারী ও শিশুদের অজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশ ও ডেনমার্ক সরকারের যৌথ সমন্বয়ে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১২ সালে।

যে কোনও ধরনের শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, অগ্নিদগ্ধ, ইভ-টিজিং সহ যে কোনও ধরনের যৌন হয়রানির বিষয়ে হেল্পলাইনটি গোপনীয়তার সঙ্গে সাহায্য প্রার্থীকে আইনি সহায়তা, পুলিশি সাহায্য, টেলিফোন কাউন্সিলিং ও তথ্য দিয়ে সাহায্য করে। হেলপলাইনটির সঙ্গে সংযোগের নম্বর ১০৯২১। এই হেল্পলাইনটির সেবা একেবারেই বিলামূল্যে পাওয়া যায় সপ্তাহের সাত দিন, প্রতিদিন চব্বিশ ঘণ্টা।
খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়, এর পর দেশের যে কোনও অঞ্চলে যেখানেই কোনও মেয়ে, নারী ইভ-টিজিং সহ যে কোনও হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার হবে, সাথে সাথেই এর প্রতিকার চাওয়া হবে, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। এটুকু সামান্য প্রত্যাশা, ওবায়দুলদের ১২০ টাকায় কেনা ছুরির আঘতে আর অকালে ঝরে যাবে না একটি প্রাণও।

লেখক: আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মী।
[email protected]

আরও খবর: ‘১২০ টাকায় ছুরি কিনি, পেটের বাম পাশে আঘাত করি’

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বিরল সূর্যগ্রহণ দেখতে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে জড়ো হবেন ১০ লাখ দর্শনার্থী
বিরল সূর্যগ্রহণ দেখতে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে জড়ো হবেন ১০ লাখ দর্শনার্থী
নামাজ চলাকালে মসজিদের এসি বিস্ফোরণ, মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক
নামাজ চলাকালে মসজিদের এসি বিস্ফোরণ, মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ