X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

'চমৎকার' ডিজিটাল বাংলাদেশ

নাদীম কাদির
১৭ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:০৭আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:৪১

নাদীম কাদির সম্প্রতি অনলাইন সংবাদপত্র ইন্ডিপেন্ডেন্টের সম্পাদকের সঙ্গে পরিচিত হলাম। প্রিন্ট সম্পাদক অমল রঞ্জনের পর ৩৮ বছর বয়সী ব্রিটিশ এই সাংবাদিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ডিপ্লোম্যাটিক প্রেস অ্যাটাচেস অ্যাসোসিয়েশন, লন্ডন এবং ব্রিটেনের মূলধারার লন্ডন প্রেস ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন ক্রিশ্চিয়ান ব্রটন। তিনি তার সংবাদপত্রটি ডিজিটাল হওয়ায় বিষয়টিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন- এতে আরও বেশি পাঠকের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে এবং মুনাফাও বাড়ছে, যা বাংলাদেশের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।
আমি যখন তাকে আমাদের সজীব ওয়াজেদ জয়ের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রকল্পের কথা বললাম, ব্রটন বললেন, ‘চমৎকার’। তিনি বলেন বাংলাদেশ সস্তা এপিপিএস নিয়ে সব বয়সের পাঠক পেতে পারতো। তিনি আরও বলেন, ‘এতে প্রয়োজনীয় রেভিনিউ আসতো, কারণ বিনামূল্যে সংবাদ সরবরাহ করার অনলাইন উৎস কমে আসছে।’
একজন বললেন ছাপা কাগজ পড়া অনলাইনে পড়ার চেয়ে বেশি আরামদায়ক, তাতে এই তরুণ সম্পাদক হেসে বললেন, ‘আপনারা উপলব্ধি করুন, এটা (অনলাইন সংবাদপত্র) আছে’।
তিনি বলেন, রেভিনিউয়ের নানা উৎস অনুসন্ধান করতে হবে এবং মানুষকে জানতে হবে যে ভালো সাংবাদিকতা বিনামূল্যে পাওয়া যায় না- তাতে যদি এক বা একাধিক বিজ্ঞাপনও দেখতে হয়, তা-ও অযথার্থ নয়, এ জন্যে খরচ করা মানায়।
বিশ্বজুড়ে অনলাইন পত্রিকা ইন্ডিপেন্ডেন্টের ৭০ মিলিয়ন নিবন্ধিত পাঠক রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের অনলাইন পত্রিকাগুলো, বাংলা ট্রিবিউনসহ অন্যান্য যে গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন পোর্টালগুলো রয়েছে তাদের সবারই উচিত বিজ্ঞাপন ও সম্পাদকীয় কৌশল নিয়ে ভাবা।
প্রথমত আপনাকে কোনও প্রতিষ্ঠান চালাতে হলে টাকা লাগবে। আমি এ জন্যে খুশী যে ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদপত্রটি ব্রডশিট থেকে ট্যাবলয়েড ফরম্যাটে চলে গিয়েছে।এতে খরচ কমেছে, কাগজ আর কালির খরচও কমে এসেছে, কিন্তু অন্য সকল দৈনিকের মতো এরও রয়েছে বিনামূল্যে একটি অনলাইন ভার্সন। ব্যবস্থাপকদের অর্জিত মুনাফা ও প্রদেয় বেতন সম্পর্কেও ভাবতে হয় কারণ এরা অন্য অনেকের মতো নয়- যারা ঠিক সময়ে কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করে না।
বাংলা ট্রিবিউন ও অন্যান্যরা কিছু প্রতিবেদন শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে পড়া যাবে এমনভাবে সংরক্ষণ করতে পারে। বিশেষ ও অবশ্যপাঠ্য প্রতিবেদনগুলোকে এভাবে রাখা যেতে পারে। ব্রটন নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানেন, মানুষ যখন একবার টাকা দিয়ে পড়তে শুরু করে সেটা তাদের অভ্যাস হয়ে যায়। পাঠক যখন বুঝে যায় একটা নির্দিষ্ট বিভাগে অবশ্যপাঠ্য প্রতিবেদনগুলো থাকে তারা স্বপ্রণোদিত হয়েই অল্প মূল্যের বিনিময়ে তা কেনে। মাত্র ২০ টাকা থেকেই শুরু হতে পারে বিশেষ প্রতিবেদনের মূল্যমান।   
এরপর এক্সক্লুসিভ ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো পড়ার জন্য তারা আরও অর্থ ব্যয় করতে চাইবেন যা থেকে সংবাদপত্রের আয় বাড়তে পারে। কেননা, প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে এটাকে ব্যবসা হিসেবেও বিবেচ্য করতে হবে।
জয়ের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নিয়ে কথা বললাম ক্লাবের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও। তারা জানতে চাইলেন বাংলাদেশে ব্রিটেনের মতো এই সংবাদ পোর্টালগুলো চালানোর কোনও নির্দিষ্ট নীতিমালা আছে কিনা। কিছুটা গর্বের সঙ্গেই আমি তাদের জানালাম, ‘আমাদের দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রয়েছে। যে কেউ যে কোনও কিছু নিয়ে কথা বলতে ও লিখতে পারেন।’ এও এক আশ্চর্য বিষয় যে বাংলাদেশের সংবাদপত্র কোনও রকম হলুদ সাংবাদিকতা ও ওয়াচডগ ছাড়াই চলছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশিত হয় মিথ্যা খবর, এও সঠিক।  তবে আরও ভালো সাংবাদিকতা পেতে হলে আমাদের একটি নীতিমালাও প্রণয়ন করার বিষয়ে ভাবতে হবে।  
বাংলাদেশের বুমিং আইটি সেক্টরের এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে এর প্রয়োজন রয়েছে। সত্যিকার অর্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে গত নির্বাচনে বেশি ভোট পেতে সাহায্য করেছিলো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি।  
লেখক: সাংবাদিকতায় জাতিসংঘের ড্যাগ হ্যামারসোল্ড স্কলার এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
বিএসএমএমইউ’র দায়িত্ব নিয়ে যা বললেন নতুন ভিসি
বিএসএমএমইউ’র দায়িত্ব নিয়ে যা বললেন নতুন ভিসি
বাজেটে শিক্ষা খাতে ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি
বাজেটে শিক্ষা খাতে ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি
ডিএনসিসির কাওরান বাজার আঞ্চলিক অফিস যাচ্ছে মোহাম্মদপুরে
ডিএনসিসির কাওরান বাজার আঞ্চলিক অফিস যাচ্ছে মোহাম্মদপুরে
ভাতা বাড়ানোর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ভাতা বাড়ানোর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ