X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

কারচুপির নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রে?

নাদীম কাদির
২৪ অক্টোবর ২০১৬, ১২:২৪আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৩০

নাদীম কাদির রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসী অথবা মুসলিমদের পছন্দ করেন না, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই তিনি নিজের চরিত্রে যোগ করেছেন নতুন মাত্রা- নির্বাচনে কারচুপির সম্ভাবনার প্রশ্ন তুলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকেই অসম্মান করেছেন তিনি।  
আমেরিকানরা এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আগামী নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন। আমি এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমেরিকানরা মাথা গরম জাতি, তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিতিয়েও দিতে পারেন। আমার মতে ট্রাম্প একজন আগ্রাসী, নোংরা এবং পুরুষাধিপত্যবাদী চরিত্র। 
ট্রাম্পের বিষয় আমার কাছে ভয়াবহ মনে হয়, তিনটি বিতর্কের পর হিলারি ক্লিনটনের জনপ্রিয়তাও বোঝা যাচ্ছে। আশা করি আগামী ৮ নভেম্বর, ২০১৬ নির্বাচনে আমেরিকানরা সঠিক প্রার্থীকেই বেছে নেবেন।
আমি ট্রাম্পের বিবৃতি ও হুমকি নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী।
ট্রাম্প তার বিবৃতিতে বলেন তিনি নির্বাচনে জয়ী হলে ফলাফল মেনে নেবেন। আর তার হুমকিটা হচ্ছে, নির্বাচনে হেরে গেলে তিনি আদালত পর্যন্ত যাবেন, যা প্রাক-নির্বাচন প্রচারণার চেয়েও কুৎসিত।
ওহাইয়োর প্রচারণায় তিনি বলেন, ‘আমি এই মহান ও ঐতিহাসিক নির্বাচনের ফলাফল পুরোপুরি মেনে নেব, যদি আমি জিতে যাই।’
কিন্তু ভয়ের কথা যা তিনি বলেছেন তা হচ্ছে, ‘আমি স্বচ্ছ নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেব, কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হলে আমি অবশ্যই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার আইনি অধিকার প্রয়োগ করতে চাই।’
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটরকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘কোনও প্রমাণ ছাড়া নির্বাচনে কারচুপির প্রশ্ন তোলা একটি ভয়াবহ ব্যাপার, কেননা তাতে অযৌক্তিকভাবে বিশ্বাস ভঙ্গের কারণ ঘটে।’
হিলারির মতে ট্রাম্পের এই মন্তব্য ‘ভীতিকর’ কেননা এতে ‘গণতন্ত্রকেই কলঙ্কিত করা হয়েছে।’
বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নির্বাচনকেই এভাবে খারিজ করা হয় ও নানা রকম আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপও হয়ে থাকে।

কিন্তু ১৯৯১ ছাড়া সব নির্বাচনেই স্পষ্ট প্রমাণ আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হেরে যাওয়ার কারণ হচ্ছে নির্বাচনে কারচুপি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান ২০০১ সালে শপথ গ্রহণের আগে কূটনীতিকদের এক তালিকা তৈরি করেন এবং তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেন।

নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগেই বিএনপিপন্থীদের নির্বাচনি খেলা স্পষ্ট বোঝা যায়।

আমি কিছু ভোটকেন্দ্রে গিয়েছি যেখানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, যাদের আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক বলে সাধারণত বিবেচনা করা হয়, তাদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। আমেরিকান ও ভারতীয়দের স্বার্থ ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গেই জড়িত ছিল। ফলে এ ছিল এক ধরনের বাছাই, নির্বাচন নয়।

বিএনপির অব্যাহত চিৎকার যা নির্বাচনের আগে ও পরে সমানভাবে জারি ছিল, তাতে জনগণেরও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর বিশ্বাসকে দুর্বল করে ফেলে।

কিন্তু ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির ভয় কোথা থেকে পেলেন? সম্ভবত সেই নির্বাচন থেকে যেখানে রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ বুশ ভুলক্রমে জিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শত বছরের ইতিহাসে একমাত্র ঘটনা।

যদি নির্বাচনের ফলাফল ট্রাম্পের আশঙ্কার সঙ্গে মিলে যায়, আমেরিকার গণতন্ত্র কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রেই বা কী বয়ান দেবে আমেরিকা?

বিশ্লেষক জিল আব্রাহামসন লন্ডনের সংবাদপত্র গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘নির্বাচনের পর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে ট্রাম্প মার্কিন রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও গণতন্ত্রকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবেন।’   

তিনি আরও বলেন কারচুপির আশঙ্কা করে জনমনে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কেই সন্দেহ প্রবেশ করাচ্ছেন ট্রাম্প।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই উদাহরণ কাজে লাগানো প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের ওপর ভরসা রেখে জনগণের কণ্ঠস্বরকে সম্মান করতে শেখা প্রয়োজন।

লেখক: সাংবাদিকতায় জাতিসংঘের ড্যাগ হ্যামারসোল্ড স্কলার এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার

আরও খবর: ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনে যা করতে চান ট্রাম্প

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ