X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জ: ইসির ‘র‌্যাগ ডে’!

তুষার আবদুল্লাহ
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৩:৪৩আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:০৪

তুষার আবদুল্লাহ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেলিনা হায়াৎ আইভি এবং সাখাওয়াত হোসেন যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুখোমুখি হবেন, তখন অর্থাৎ ২২ ডিসেম্বরের আগেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে আলোচনা শুরু হয়ে যাবে। বিরোধী দল বিএনপি তাদের ১৩ দফা প্রস্তাব পেশ করে ফেলবেন। অন্যদলগুলোও জানাবেন তাদের সুপারিশ।
নির্বাচন কমিশন আইনের মাধ্যমে গঠন-পুনর্গঠন প্রত্যাশিত হলেও বাংলাদেশে এটি হচ্ছে না। কারণটাও সবার জানা। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সরাসরি স্বার্থ জড়িত। এক কথায় বলা যায় আমাদের নির্বাচন কমিশন বরাবরই রাজনৈতিক দলের 'ইচ্ছার পুতুল'। নির্বাচন কেমন হবে, নির্বাচনে কমিশন কতটা সক্রিয় বা উদ্যোগী হবে, হতে পারবে সেটাও নির্ভর করে রাজনৈতিক দলের ওপর। আসলে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন কিভাবে করতে চায় সেই দৃষ্টিভঙ্গিটিই জরুরি। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে অভিযোগ, সেই একই অভিযোগ আওয়ামী লীগের তরফ থেকে উঠতে দেখা গেছে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবুহেনা থেকে শুরু করে বর্তমান রকিবউদ্দিন আহমেদকে দেখছি পেশাগত দিক থেকে, এর আগে নির্বাচন কমিশন নিয়ে সংবাদ করার অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু অন্যদের কাজও দেখেছি। সব কিছু মিলিয়ে বলতে পারি কোনও নির্বাচন কমিশনই সার্বভৌম ছিল না। সবার ওপরই সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের চাপ ছিল। নরম করে বলতে পারি ক্ষমতাসীন দলের বায়না মিটিয়েই তাদের চলতে হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের বায়না মেটাতে গিয়ে বা প্রশ্রয় দিতে গিয়ে কমিশনের ভেতরও বিভক্তি তৈরি হতে দেখেছি। আবার পুরো দেশবাসীই দেখেছে রাজনৈতিক প্রভাবের মধ্যে থেকেও কিভাবে কোনও কোনও প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজের ব্যক্তিত্ব দিয়ে নির্বাচনকে সাধারণের কাছে অনেকটা গ্রহণযোগ্য করেছেন। কিংবা নির্বাচন নিয়ে দ্বিধা থাকলেও জনগণের মাঝে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেননি।
বর্তমান কমিশন ৫টি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছিল সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী এবং গাজীপুরে। কিন্তু এটি সেই পাঁচটি নির্বাচন তারা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করেছিল, নাকি সরকারের স্বদিচ্ছার কারণেই নির্বাচনগুলো সুন্দর হয়েছিল, এ নিয়েও জনগণের মাঝে প্রশ্ন আছে। প্রশ্ন আরও তীক্ষ্ণ হয়েছে পরবর্তী উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব দেখে। তারা মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ওপর নিজেদের অধিকার বা ক্ষমতার প্রভাব রাখতে পারেননি। নির্বাচনের পরিবেশ এবং ভোট গ্রহণ সম্পর্কেও জনগণের জিজ্ঞাসার সদুত্তর দিতে পারেননি।

এখন তাদের বিদায় বেলা। বিদায়ের ‘র‍্যাগ ডে’ বা নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনটি কেমন হবে, তারা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করে দিয়ে বলে যেতে পারবেন – ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’। এই স্বক্ষমতাটি কি তাদের আছে? বিদায়ী নির্বাচনের কমিশনের দুর্ভাগ্য হচ্ছে- জনগণ বিশ্বাস করেন সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো চাইলেই নরায়ণগঞ্জ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে। তারপরও তাদের কাছ থেকে ‘সারপ্রাইজ’ আশা করতেই পারি। ‘সারপ্রাইজ’ আসুক বা না আসুক। এই যে আশা করছি সেটাই হয়তো তাদের বিদায়ের উপহার হবে জনগণের দিক থেকে।

লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ভ্যাটেই মিলবে রাজস্ব, অথচ ভ্যাট বাড়াতে অনীহা
ভ্যাটেই মিলবে রাজস্ব, অথচ ভ্যাট বাড়াতে অনীহা
বাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের ফল দৃশ্যমান হচ্ছে
গ্লোবাল স্কিলস ফোরামে বক্তারাবাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের ফল দৃশ্যমান হচ্ছে
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ