X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

পুরুষ নির্যাতন, পিতৃতন্ত্রের মধুর প্রতিশোধ

সাদিয়া নাসরিন
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৪:১৯আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৯
image

সাদিয়া নাসরিন পুরুষরা নাকি নারীর হাতে নির্যাতন সহ্য করতে করতে নিরবে মানসিকভাবে মৃত্যুবরণ করছেন, অথচ বলতে পারছেন না।  নারীবাদিরা এইসব নির্যাতন নিয়ে কথা বলেন না।  অভিযোগ গুরুতর বটে! পুরুষ নির্যাতন নিয়ে পুরুষরা কেন সোচ্চার না হয়ে সেই দায়িত্ব ও নারীর কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছেন তা আমি বুঝি না। তবু নিজের কৌতুহল বশেই বেশ কিছুদিন ধরে পুরুষ নির্যাতন নিয়ে কথা বলে, নিজের এবং বন্ধুদের পরিবারের ভেতরের কিছু দাম্পত্য পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে চাইলাম পুরুষ আসলে কিভাবে নির্যাতিত হয়, সে নির্যাতনের মোটিভটাই বা কী? স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই, অনেক নারীই এমন আচরণ করেন যা একটা সম্পর্কের জন্য মারাত্মক এবিউজিভ।  পুরুষ ও এবিউজিভ সম্পর্কের শিকার হয় এই সত্য মেনে নিয়েই আমি বুঝেছি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘পুরুষ নির্যাতন’ আসলে ক্রিয়ার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া মাত্র।  পুরুষতন্ত্রের চোরাগলিতে পথ হারিয়ে পুরুষরা নিজের জীবনে এই নিপিড়নকে স্বাগত জানিয়েছেন।  আসুন, কিছু ঘটনা বিশ্লেষণ করা যাক।
১) আমার বন্ধু ‘ক’।  একটু দেরীতে বিয়ে করেছে বয়সে দশ বছরের ছোট এক মেয়েকে।  মেয়েটি শিক্ষিত।  তাদের দুটো বাচ্চা।  আরেক বন্ধু ‘খ’।  বিয়ে করেছে একই ডিপার্টমেন্টের চার বছরের জুনিয়র মেয়েকে।  মেয়েটি চাকরি করতো, বাচ্চা হওয়ার পর কাজ ছেড়ে দিয়েছে।  কারণ সে নাকি বাচ্চাদের ‘পারফেক্টলি’ মানুষ করতে চায়।  দুটি সংসারেই পুরুষরা একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি, স্ত্রীরা রোজগার করেন না, ঘরেই থাকেন।  প্রাইভেট চাকরির হ্যাপা সামলিয়ে অফিস শেষ হতেই বাসায় ছুটতে হয় দুজনকে।  একটু দেরী হলেই ফোনের ওপর ফোন করেন।  ছুটা-বাঁধা সাহায্যকারী নিয়েও, সারাদিন ঘরে থাকা বউরা কিছু করতে পারেন না বলে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে নাকি পেঁয়াজ রসুন তরকারি কেটে দিতে হয়, হাঁড়ি পাতিল ধুয়ে দিতে হয়।  বাচ্চা স্কুলে দিয়ে আসা, বাচ্চার ডাক্তার দেখানো, বউয়ের ডাক্তার দেখানো, বউ এর শপিং থেকে সেনিটারি ন্যাপকিন কেনা, লন্ড্রিতে কাপড় দেওয়া, সবকিছু নিজে গিয়ে করতে হয়।  পাঁচ মিনিটের হাঁটা দুরত্বের পথ ও তাদের বউরা একা যেতে পারে না বলে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং পোস্টপন্ড রেখে হলে ও তাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়।  কারণ, তাদের বউরা নাকি তাদের ছাড়া কিছুই করতে পারে না!  
আপাত দৃষ্টিতে এই আচরণগুলো কিছুটা বিরক্তিকর এবং এবিউজিভ মনে হয় বৈকি! এরকম লক্ষ লক্ষ রোজগেরে নারীই তো অফিসের হ্যাপা সামলিয়ে, বাসের সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে, ঘামে নেয়ে ঘরে ঢুকে ব্যাগটা কোনরকমে ছুঁড়ে ফেলে রান্নাঘরে ঢুকেন, রাঁধতেই রাঁধতেই বাচ্চার হোমওয়ার্ক করান।  একজন রোজগার ও করবে আবার তাকেই ঘরে এসে গৃহস্থালি সামলাতে হবে, সেটা তো নারী-পুরুষ সবার জন্যই এবিউজিব।  মজার বিষয় হলো, আমার বন্ধুরা যখন বলছিলো তারা নির্যাতিত, লক্ষ্য করলাম, মুখে নিজেদের নির্যাতিত বললেও, তাদের চোখের ঝিলিকই বলে দিচ্ছিলো, বউরা তাদের ছাড়া কিছু করতে না পারাটা খুব নিশ্চিন্ত করেছে ওদের।  বুঝলাম, বউরা একা একা তাদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো সামলাতে পারুক, বাইরের দুনিয়া চিনে ফেলুক, স্বামীর উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ফেলুক এটা খুব ইন্সিকিউর করে তাদের।  তাই ‘আমার বউ আমাকে ছাড়া চলতে পারে না’ এই বোধ তাঁদের ‘অহমের’ গোড়ায় জল ঢেলেছে, যে জল পেয়ে তারা নিজেদেরকে স্ত্রী’র সর্বময় রক্ষাকর্তা ভাবছেন এবং এসব ‘মধুর’ নির্যাতন হজম করছেন।
(২) এবার বেশ একটা সিরিয়াস পুরুষ নির্যাতনের (?) ঘটনা বলি।  তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্ত্রী ব্যাংকার।  ১৩ বছরের একজন কন্যা সন্তান আছে তাদের।  গত এগারো বছরের ও বেশি সময় ধরে তার সঙ্গে স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্ক নেই।  কথা বলেন না, দুজন দু’রুমে থাকেন।  কেন? দেখে শুনে পছন্দ করে বিয়ে করলেও এক সুন্দর সকালে ভদ্রলোকের মনে হলো তার স্ত্রীর শরীরটা ওনার পছন্দ নয়, যথেষ্ট যৌনাবেদন তৈরি করতে পারে না।  তিনি মনে করছেন তার স্ত্রী তাকে ঠকিয়ে বিয়ে করেছে (মনে হয় তিনি বিয়ের আগেই একটা প্রীতি ম্যাচ চেয়েছিলেন)।  তাই তিনি নিজের ঘর আলাদা করে ফেলেছেন। স্ত্রী কখনও তার ঘরে ঢুকে পড়বে বলে তিনি একটা ছুরি সঙ্গে রাখেন।  এখন ভদ্রলোক মনে করছেন তিনি চরমভাবে নির্যাতিত।  কারণ, তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইলে তার স্ত্রী নারী মামলা করার হুমকি দেন, অথচ দীর্ঘবছর শারীরিক সম্পর্কবিহীন একটা জীবন যাপন করছেন।  রোজগার করা স্বত্ত্বেও ওনার স্ত্রী সংসারের বা বাচ্চার কোনও খরচ বহন করেন না।
বাহ! সুস্থ মস্তিষ্কে বিয়ে করে একটি বাচ্চা হয়ে যাওয়ার পর, এক সুন্দর সকালে তিনি আবিষ্কার করলেন বউকে আর ভালো লাগছে না।  দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইছেন, কিন্তু ডিভোর্স দিতে চাইছেন না।  তাতে নাকি ‘তাঁর’ সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট হবে।  মন মতো শরীর নয় বলে তিনি একপেশে, উদ্ধত এবং অবিবেচকের মতো স্ত্রীকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে যখন নিজেকে নির্যাতিত বলছিলেন, তার প্রতিটি লাইনের বর্ণনায় কিন্তু নিজের পৌরুষের অহংকার প্রচ্ছন্ন হয়ে উঠছিলো।  তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, পছন্দ না হলেই তিনি একতরফা নিজের বিছানা আলাদা করে নিতে পারেন।  আর দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায়, স্ত্রী হয়ে উঠলো নির্যতনকারী? সত্যি, বিচিত্র এই নির্যাতন অনুভূতি! বলুন তো, ঘটনাটা উলটো হলে কী হতো? এই দেশের কত লক্ষ নারী প্রতিদিন ইচ্ছের বিরুদ্ধে বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হয় সে হিসেবটা কি কারও আছে? কত অযুত নিযুত নারী স্বামীর একপেশে উদ্ধত অহংকারী পছন্দের সেচ্চাচারিতা মেনে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমুতে বাধ্য হচ্ছেন সে হিসেবটাও কি আছে?
(৩) স্বামীরা বলছেন, স্ত্রীরা তাদের এটিএম মেশিন মনে করেন, ঘরে ক্যাশ টাকা রাখলে সরিয়ে নেয়, বাবার বাড়িতে টাকা পাচার করে, শ্বশুর শ্বাশুড়ির সঙ্গে থাকতে চায় না বা খরচ দিতে দেয় না।  কেন করে? কারণ, আপনি চান আপনি তো টাকা বানানোর মেশিন হয়ে, কারো ভাত কাপড়ের মালিক হয়ে থাকতে চেয়েছেন।  পুরুষতন্ত্র আপনার মনস্তত্ত্বে পুরে দিয়েছে নিজেকে রক্ষাকর্তা ভাবার চাপ।  সেই ঘেরাটোপে পড়ে উপার্জনের চাবিটি কেড়ে নিয়ে আপনি দিনের পর দিন ‘বউ’ বানিয়ে তাকে ব্যস্ত রেখেছেন বাচ্চা পালা-রান্না-বাজার-বিলিং-স্কুলিং, টিভি সিরিয়াল, শপিং, পার্লার, হেয়ার কাট আর হট পিংক লিপিস্টিকের পেছনে। এখন সে আপনাকে এটিএম মেশিন মনে করবে না কেন? আপনি বসের ঝাডি খেয়ে, দম বন্ধ করা ডেডলাইনের চাপ সামলে, বাসে ঝুলে, ঘামে নেয়ে, নিজের টিফিনটা কত কম খরচে করে পরিবারের জন্য রোজগার করেন, সেই চাপটা তো তাকে বুঝতে দেননি আপনি মহান পৌরুষের অহমে।  সেও নিতে চায়নি, কারণ সে জানে তার এই না চাওয়া আপনাকে খুশি করবে।  সে দামী শাড়ি গয়নার বায়না করে, নিজেকে আপনার ‘মিসেস’ করে তুলতে সে পার্লারে পড়ে থাকে। কারণ সে জানে আপনার কাছে তার মূল্য বাঁধা আছে ওই শাড়ি গয়না আর আপনার ‘স্ট্যাটাস’ রক্ষার দায়ে।
পুরুষতন্ত্রে নারী-পুরুষ উভয়েরই মানসিক গঠন এমন হয়েছে যে, পুরুষ ছাড়া নারী অসহায়।  সুতরাং আপনার স্ত্রী, যে নিজে স্বনির্ভর হতে পারেনি কখনও, নিজেকে বিশ্বাস করেতে পারেনি কোনদিন, সে নিজের নিরাপত্তার জন্য আপনাকে পুরোটাই দখল করতে চাইবে এটাই তো স্বাভাবিক।  আপনার বাবা-মা-ভাই-বোন সেখানে অনাহুত।  আবার আপনার মাও তাই, তিনিও আপনাকে হাতছাড়া করতে চান না একই কারণে।  এখন এই বউ-শ্বাশুড়ির যুদ্ধে আপনি স্যান্ডুইচ হয়ে যান! আপনি কিন্তু আসলে স্যান্ডুইচ হন পকেটের চাপে।  যে পকেটে টাকা থাকে, যে পকেটে ক্ষমতা থাকে।  আপনার স্ত্রীর নিজের পকেট হবে সেই বোধই তৈরী হতে দেননি আপনি।  তাই সে আপনার পকেট কেটে টাকা সরিয়ে রাখে, টাকা দেয় তার বাবার বাড়িতে।  কারণ, সন্তান হিসেবে তারও অধিকার আছে তার বাবা-মার পাশে থাকার।  এই পুরুষতন্ত্রের পারপাস সার্ভ করতে গিয়েই আপনাকে বিয়ের হাটে চড়া দেন মোহরে স্ত্রীকে কিনে নিতে হয়। যেহেতু এই দেন মোহরই নারীর সংসারের নিরাপত্তা বলে তার মনস্তত্বে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, সুতরাং সংসার টেকাতে এই দেনমোহরের অংককেই সে ব্যবহার করে।
অফিস ফিরতে দেরী হলে বারবার ফোন করে, নজরদারী করে, অফিস থেকে ফিরতে আধঘণ্টা দেরী হলেই সে সন্দেহবাতিক হয়ে ওঠে, বাসায় ফিরলেই সে আপনার মোবাইল চেক করে।  কারণ, সে আপনাকে নিয়ে ইনসিকিউরিটিতে ভোগে।  আপনিই তো তাকে ভাবতে বাধ্য করেছেন সে আপনার মতো যোগ্য পাশের চৌকশ সহকর্মী কিংবা তুখোড় বান্ধবীটির সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সুখ সুখ ভাব নিয়ে ঘরে ফেরা আপনার কাছে যে এই বাচ্চা পালা আর সিরিয়াল দেখা ‘ঘরের বউ’ নিজেকে ‘ইনফিরিওর’ ভাবতে পারেন তা তো আপনি কখনও ভাবেননি।  ইনফিরিওর মানুষ তার সঙ্গীকে নিয়ে ইনসিকিউরিটিতে ভুগবে সেটাই তো স্বাভাবিক।  এই ইন্সিকিউরিটি তো সে আপনার কাছে থেকেই শিখেছে, যে ইন্সিকিউরিটির জন্য আপনি তাকে বাইরের আলোটা দেখতে দেননি, স্বনির্ভরতার সাদ বুঝতে দেননি।
স্ত্রী ফেসবুকে আসক্ত হয়ে গেছে? আপনাকে এটেন্ড করেনা? পরকিয়া করে? আপনি তাকে টিভির রিমোর্ট তুলে দিয়ে নিজের নিশ্চিন্তের ব্যস্ততা গড়ে তুলেছেন, আবার সে সিরিয়ালে অভ্যস্ত হয়ে গেলে আপনি বলছেন, আপনাকে গুরুত্ব দেয় না, আপনি নির্যাতিত? নিজের পেশা, নিজেকে আরও যোগ্য করে তোলা, আরও সাফল্যের লড়াই করতে করতে যখন আপনি পাশের মানুষটির দিকে তাকানও না, বছরের পর বছর যখন সে নিরুত্তাপ দাম্পত্যে অভ্যস্ত হতে থাকে, তখন সে ফেসবুকে বা ইনবক্সে ব্যস্ত হয়ে গেলে আপনি মনে করেন সে আপনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, নিশ্চয়ই পরকিয়া করছে? পরকিয়াও যদি করে, যে পুরুষের সঙ্গে জড়ায় আপনার স্ত্রী, সে পুরুষ কোনও শূন্যস্থান পূরণ করছে না তো? বলুন তো, আপনি যখন ইনবক্সে দাপুটে ইংরেজি জানা মেয়েটিকে ফ্লার্ট করে যান, তখন আপনার ‘স্ত্রী’ কী পরিমাণ ‘খ্যাত’ সেই তুলনা করেন না?
‘পেট্রিয়ারকি’ বা পিতৃতন্ত্রের ধরনটাই এমন, যেখানে সে নারীকে পিষেছে বিধি-নিষেধের শিল পাটায়, আপনাকেও চুষে নিয়েছে দায়িত্বের যাঁতাকলে।  পুরুষ শাসিত সমাজে যে নিয়ম কানুনগুলো তৈরি করেছে পুরুষ নিজেদের সুবিধার জন্য, সে নিয়ম কানুনগুলো মেনে চলতে গিয়েই নারী হয়ে উঠেছে নিপিড়ক। পিতৃতন্ত্র নারীর মনস্তত্ত্বে যে দাসত্বের বীজ বপন করেছে, তা শেকড় ছড়িয়ে ফেললে সে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পুরুষকেই আক্রমন করে বৈকি! তখন আসলে নারী নয়, আপনাকে নিপীড়ন করে আপনার অহম, আপনার পৌরুষ, আপনার উপর আরোপিত দায়িত্বের বোঝা, আপনার অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার ভয় আর সেচ্চাচারিতার শিক্ষা।  এটি আসলে মহান পিতৃতন্ত্রের মধুর প্রতিশোধ। ইউরোপে একটা কথা প্রচলিত আছে, ম্যান ক্যান বি জাজড বাই হিস ওমেন চয়েস।  একজন পুরুষ কেমন সঙ্গী বেছে নেয় তা দিয়ে তার মানসিকতা মাপা যায়।  আপনি যদি আপনার পকেটের দিকে তাকিয়ে থাকা সঙ্গী নির্বাচন করে থাকেন তবে তাকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন, সে যে লতার মতো আপনাকে জড়িয়ে ধরে বাঁচবে সেটাই এনজয় করুন।  কারণ আত্মবিশ্বাসহীন পুরুষের জন্য সেই যোগ্য সঙ্গী।  মনে রাখবেন, যে পুরুষ নিজের ওপর আস্থাশীল, সঙ্গী হিসেবে সে মানসিকভাবে স্বাধীন, শারীরিকভাবে সক্ষম, এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর একজন নারীকে পছন্দ করবে।  সে নারীরা তুচ্ছ কারণে একজন পুরুষের শক্তির ওপর নির্ভর করে তার চাপ বাড়ায় না, ঘর সামলানো থেকে ঘরের ড্রিল-কার্পেইন্টিং, বাসা শিফটিং, সংসারের খরচ পর্যন্ত সামর্থ অনুযায়ী ভাগ করে নেয়।  তাই এবিউজিভ সম্পর্ক থেকে বাঁচতে চাইলে, তবে পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বাস ও চর্চাকে চ্যালেঞ্জ করতেই হবে আপনাকে।  সমতার সম্পর্ক, দিনের শেষে আপনাকে লাভবানই করবে।
‘স্ত্রী’ নয়, সঙ্গী ভেবেই বাইরের পৃথিবীটা, যোগ্যতার লড়াইটা, সমতার আলোটা দেখতে দিন তাকেও।  নিজের দায়িত্ব, প্রয়োজনে পুরো সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার মতো শারিরীক সক্ষমতা, মানসিক সবলতা, অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা তাকে অর্জন করতে দিন।  হোঁচট খেলেও তাকে হাঁটতে দিন নিজের পায়েই। তখন সে সম্পর্কটা আক্ষরিক অর্থেই পার্টনারশিপের হবে।  সে সম্পর্কে কেউ কাউকে নিয়ন্ত্রণ করবে না, কেউ কাউকে নিপীড়ন করবে না।  
লেখক: কলামিস্ট; প্রধান নির্বাহী, সংযোগ বাংলাদেশ

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ