X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

কূটনীতির হাস্যরস

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৭ মে ২০১৭, ১৯:০৬আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:০৩

শেখ শাহরিয়ার জামান ১.
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাভোস সফরের পরে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে অংশ নেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানের বিকেলের সেশনে প্রধান বক্তা এই বুদ্ধিমান ও রসিক পররাষ্ট্র সচিব। কিছুটা ঝিমিয়ে যাওয়া শ্রোতাদের দেখে তিনি তাদের উজ্জীবিত করার জন্য ভিন্ন রাস্তা ধরলেন। তিনি আলোচনা যেভাবে শুরু করলেন, তার হুবহু বর্ণনা তুলে ধরছি, যার কিছুই পাঠকদের জানা হয় না কখনও।
তিনি বলে চললেন, ‘আমি গতকাল এ অনুষ্ঠান নিয়ে বাসায় চিন্তা করছিলাম। তখন আমার স্ত্রী কৌতূহলী হয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি টেলিভিশন দেখা বাদ দিয়ে কী নিয়ে এত চিন্তা করছ? আমি বললাম, ডাভোস প্রসেসে বাংলাদেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবছি। কথা শুনে সে বললো, তুমি সংসার এগিয়ে নেওয়ারই চিন্তা করতে পারো না, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করবে কীভাবে? চিন্তা করে দেখলাম, আসলেই আই অ্যাম এ স্টুপিড ফরেন সেক্রেটারি, এ বিষয়ে আমার চিন্তা করা উচিত না।’ সবাই হো হো করে হেসে ওঠার পরে তিনি তার স্বাভাবিক বক্তব্য শুরু করেন।
২.

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঢাকায় এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক চলছিল। মনমোহন সিং ঢাকায় আসার আগেই ভারতীয়রা জানিয়ে দিয়েছিল তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না এবং তারা এ সফরকে অর্থবহ করার জন্য অন্তত স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকলটি স্বাক্ষর করতে চায়। এ প্রটোকলটির একটি ধারায় কয়েকটি শব্দ নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তি ছিল। সেটি নিয়ে দর কষাকষি করছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণা। ওই সময় সাংবাদিকরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে অপেক্ষা করছিলেন। কারণ সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। আলোচনার শেষদিকে অনেক মন্ত্রী ও সচিব শাপলা হলে নির্ধারিত আসনে অপেক্ষা করছিলেন। সাংবাদিকরা যেখানে বসেছিলেন, তার ঠিক সামনেই বসেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান শিকদার, যার কাছে স্থল সীমান্ত প্রটোকলের হার্ড কপিগুলো ছিল। হঠাৎ তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মোহামেদ মিজারুল কায়েস দৌড়ে এসে শিকদারকে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রটোকলের সফট কপি আছে? ‘না’ সূচক উত্তর দিলে হার্ড কপি কয়টা আছে জানতে চাইলেন তিনি। জবাবে স্বরাষ্ট্র সচিব জানালেন, তিনটি। মিজারুল কায়েস তিনটি হার্ড কপি নিয়ে আবার দৌড়ে শাপলা থেকে বের হয়ে গেলেন। পরবর্তী সময়ে জেনেছিলাম প্রটোকলটির বিতর্কিত ধারাটি পরিবর্তন করতে ভারতীয়রা রাজি হওয়ার পরপরই হার্ড কপিতে হাতে লিখে সংশোধন করা হয়। সেটিতেই স্বাক্ষর করা হয়।

লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, বাংলা ট্রিবিউন

/এসএএস/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: ‘অপরাধ আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে’
প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: ‘অপরাধ আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে’
মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো সেনাসহ ২৮৮ বিজিপি সদস্যকে
মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো সেনাসহ ২৮৮ বিজিপি সদস্যকে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে বাইডেনের সই
ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে বাইডেনের সই
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ