X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০

অপ্রত্যাশিত ধাক্কা!

বিভুরঞ্জন সরকার
২৩ জুন ২০১৭, ১২:২৬আপডেট : ২৩ জুন ২০১৭, ১২:৩০

বিভুরঞ্জন সরকার সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। খোশ মেজাজে কাটছিল সরকারের দিনকাল। কোনও দিক থেকেই কোনও উৎপাত নেই।  চ্যালেঞ্জ নেই।  সংসদের বিরোধী দল সরকার অনুগত, সরকারের অংশীদার।  আর রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি এখন ঘরমুখী। সরকারের অনুমতি ছাড়া কিছইু করতে পারে না।  জাতীয় পার্টির একজন নারী সংসদ সদস্য এর মধ্যেই বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ‘আগামী পাঁচ-দশ বছর দেশে কোনও নির্বাচন দরকার নেই।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যেভাবে চলছে, সেভাবেই উন্নয়নের পথে চলুক। ’ এই বক্তব্যে গণতন্ত্রের লেশমাত্র না থাকলেও জাতীয় পার্টির নারী এমপির বিরুদ্ধে না জাতীয় পার্টি, না আওয়ামী লীগ খুব একটা কটু কথা বলেছেন বলে শোনা যায়নি।  তাই মনে হয় তিনি হয়তো আওয়ামী লীগ এবং তার মিত্রদের অনেকের মনের কথাই বলেছেন।  নির্বাচন দিয়ে কী হবে? দেশের উন্নতি হচ্ছে কিনা সেটাই তো বড় কথা।  ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের কোনও কোনও নেতা ‘কম গণতন্ত্র, বেশি উন্নয়ন’ এই থিওরি প্রচার শুরু করেছিলেন।  একবার বিনা ভোটে ‘নির্বাচিত’ হওয়ার সুখ যারা পেয়েছে তারা আর নির্বাচনের হাঙ্গামায় যেতে চাইবে না-সেটাই হয়তো স্বাভাবিক।  কিন্তু আমাদের দেশের মানুষেরা আবার ভোট দিতে না পারলে মন ভরে না।  ভোট তাদের কাছে একটা উৎসব। 
জাতীয় পার্টির নারী সংসদ সদস্যের বক্তব্যটিকে কেউ কেউ হয়তো গুরুত্ব দিতে চাইবেন না।  বলবেন, কে কী বললো তা নিয়ে সব সময় মাতামাতি করলে কাজের কাজ আর কিছুই করা হবে না।  তবে ব্যাপারটি উপেক্ষা করা যেতো যদি জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলা হতো, তার বক্তব্য, তার ব্যক্তিগত।  জাতীয় পার্টি অবস্থান সেরকম নয়।  জাতীয় পার্টি দেশে নির্বাচন চায় এবং অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।  না, এমন কথা এরশাদ, রওশন এরশাদ, জি এম কাদের, জিয়া উদ্দীন বাবলু, কাজী ফিরোজ রশীদ বা অন্য কেউ বলেননি।  আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও জাতীয় পার্টির নারী সংসদ সদ্যের বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়নি, এসব আকাশ কুসুম কল্পনা।  সবার মৌনতা দেখে মনে হচ্ছে, ওই নারী সংসদ সদস্য যেন সবার মনের কথাই  প্রকাশ করেছেন।
সরকার কি তাহলে নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থাকার কোনও ফন্দি আঁটছে।  তাও মনে হয় না।  হাওয়া দেখে বরং মনে হচ্ছে একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলেই দলকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।  সঙ্গে সঙ্গে এই সতর্ক বাণীও উচ্চারণ করেছেন, তিনি দেশে আর কোনও বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চান না।  আগামী নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক।  ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে অংগ্রহণ না করলেও পরবর্তী অর্থাৎ একাদশ সংসদ নির্বাচনে খুব সংখ্যক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলই নির্বাচনের বাইরে থাকবে।

নির্বাচনের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে না শুধু রাজাকারের দল হিসেবে পরিচিত, মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামীর।  জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে।  দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে আর কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, এ ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।  কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, দলগতভাবে না হলেও জামায়াত ‘স্বতন্ত্র’ভাবে অংশ নিয়েছে এবং কোনও কোণে সাফল্যও পেয়েছে।  তাই ধরে নেওয়া যায় আগামী নির্বাচনে দলীয় পরিচয়ে না হলেও নির্বাচনের মাঠে থাকবে।  আগামী নির্বাচনে জামায়াতের কৌশল কী হবে, তার বিএনপির সঙ্গেই থাকবে নাকি আওয়ামী লীগের দিকে ঝুঁকবে-সেটা বোঝার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি।  নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে তা থেকে জানা যায় আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।  দেড় বছর আগে থেকেই দেশের মধ্যে একটি নির্বাচনমুখী হাওয়া বইছে।  কেউ কেউ একে ভালো লক্ষণ হিসেবে দেখলেও অন্যরা একে ‘কৃত্রিম’ বলে মনে করছেন। দেশে নির্বাচন হবেই।  কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেমন নির্বাচন হবে।  রাজনীতি সচেতন যেকোনও মানুষকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় আগামী নির্বাচনের ফলাফল কী হবে, তাহলে প্রায় ব্যতিক্রমহীন ভাবেই উত্তর পাওয়া যাবে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের জেতার সম্ভাবনা কম।  কেউ মনে করতে পারেন এটা একটি সংঘটিত প্রচারণা।  আওয়ামী লীগ বা ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধীরাই এই প্রচারণা শুরু করেছে।  এটা হয়তো আওয়ামী লীগকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করার একটি কৌশল।  ২০০১ সালে নির্বাচনের আগেও সারাদেশে রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে নির্বাচনে বিএনপি জিতছে।  সেই প্রচারণ সুফল তারা পেয়েছিল।  এবারও হয়তো সুদূর প্রসারী লক্ষ্য নিয়ে এটা রটিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করবে।  দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কি সত্যিই বিএনপির অনুকূলে চলে গেছে?

টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগ মানুষের কাছে সমালোচিত হচ্ছে, এটা ঠিক।  ক্ষমতায় থাকার লাভ-ক্ষতি দুটিই আছে।  লাভ হলো, দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেরই দিনকাল ভালো থাকে, টাকা-পয়সার অভাব হয় না।  ক্ষতি হলো, সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি হয়।  দলের মধ্যেও পাওয়া না-পাওয়ার দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়।  আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় একদিকে যেমন দেশের প্রচুর উন্নতি হচ্ছে, তেমনি দুর্নীতিও হচ্ছে অবাধে।  বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যেমন তাদের নেতা-কর্মীদের টাকা-পয়সা হওয়ার ব্যাপারটি মানুষের কাছে গোপন ছিল না, তেমনি এখন আওয়ামী লীগেরটাও নেই।  কারো বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে তিনি তা স্বীকার করতে চান না। আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করছে এটা বললে তারাও স্বীকার করবে না।  কিন্তু মানুষের চোখতো সব দেখছে।  মানুষতো চোখ বুজে বসে নেই।  পাঁচ-সাত বছর আগে কী অবস্থা ছিল, আর এখন কেমন হয়েছে তা মানুষ সাদা চোখেই দেখছে।  কিন্তু তারপরও প্রশ্ন হলো, বিএনপির দিকে মানুষ অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়েছে এটা কিভাবে বোঝা যাচ্ছে? বিএনপির জনপ্রিয়তা কি এতটাই বেড়েছে যে, মানুষ হৃষ্টচিত্তে তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে? বিএনপির অতীত রেকর্ড কি মানুষ ভুলে গেছে? এসব নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য কোনও জরিপ হয়েছে বলে শোনা যায় না।  তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক কিছু বক্তৃতা শুনে মনে হয়, এক ধরনের আতঙ্ক তাদের মধ্যেও আছে।  দুর্নীতির ব্যাপারটিকে তিনি ঝেড়ে ফেলতে পারছেন না।  ওবায়েদুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ না করলে টাকা-পয়সা যারা কামিয়েছেন তাদের তা নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। ’ ক্ষমতাসীনদের এক কাপড়ে বিদায় দেওয়ার কথা খালেদা জিয়াও বলেছেন।  তার মানে আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।

বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেই-এটা কি নিশ্চিত? অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বিএনপি আর নির্বাচনের বাইরে থাকতে চায় না।  আওয়ামী লীগকে তারা আর ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবে না।  আওয়ামী লীগও সেটা বুঝতে পারছে।  আমাদের দেশে সাধারণত একবার ক্ষমতায় গেলে দ্বিতীয়বার ভোটে জেতা সহজ হয় না।  আমাদের দেশের মানুষ পরিবর্তন পছন্দ করে।  শুধু একটি দল ‘খাবে’ সেটা মানুষের কাছে যেন গ্রহণযোগ্য নয়। একবার এরা ‘খাক’, পরের বার ওরা ‘খাবে’-এ নীতিতেই যেন এতোদিন নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছিল।  ব্যতিক্রম ঘটলো গত নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে না আসায় যারা ‘খাচ্ছিল’ আবারও তাদের ‘খাবার’ ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হয়।

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য টানা কয়েক মেয়াদে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার পক্ষে দেশের জনগণের একটি অংশ অবশ্যই আছে।  তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ কিনা তা নিয়ে বিতর্ক করা যেতে পারে।  তবে আওয়ামী লীগ চাইছে অন্তত আরেক দফা ক্ষমতায় থাকতে।  ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী।  তারপরের বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি।  এই দুটি বড় ঘটনা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেই উদযাপন করতে চায়।  তাছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার দেশে যেসব মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে তা বাস্তবায়নের জন্যও তাদের আরো সময় প্রয়োজন।  এই সময় তারা পাবে কি?

আমাদের দেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে যেমন রসিকতা আছে, রাজনীতি নিয়েও তাই।  বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলে কড়া রোদ উঠবে, বৃষ্টি হবে না বললে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে।  নির্বাচনের আগেও জয়-পরাজয় নিয়ে যেসব পূর্বাভাস দেওয়া হয়, নির্বাচনের পরে তা উল্টে যায়।  শুরুতেই বলছিলাম, দেশে প্রবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বা প্রতিপক্ষ দৃশ্যমান না থাকায় সরকারের মধ্যে এক ধরনের ফুরফুরে ভাব ছিল।  আগামী নির্বাচনে তারা জিতবেই এমন কথা আওয়ামী লীগের অনেকেই প্রকাশ্যেই বলেছেন।  তারা কোথাও বিএনপি দেখতে পাননি বা পান না।

বিএনপির চেয়ারপারসন সম্প্রতি ইফতার পার্টিতে এই বলে হুঙ্কার ছাড়ছিলেন, আর বেশি দেরি নেই।  সরকারের বিদায় হলো বলে।  এসব হুমকি-ধামকি সরকার খুব আমলে না নিলেও সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা সরকারের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে।  সরকারের জন্য প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ আসে হাওর থেকে।  আর দ্বিতীয় বড় চ্যালেঞ্জ এসেছে পাহাড় থেকে। আকস্মিক প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।  চালে দামে তার বিরূপ প্রভাব পড়েছে।  প্রবল বর্ষণের কারণেই পাহাড় ধসে দেড়শতাধিক মানুষের করুণ মৃত্যু হয়েছে।  বিএনপিকে মোকাবিলা করার কৌশল সরকারের জানা থাকলেও প্রকৃতির রোষের কাছে সরকার যে অসহায় এটা হাওরের ও পাহাড়ের ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে।  বিএনপি দিনের পর দিন আন্দোলন করে সরকারকে কাবু করতে না পারলেও হাওর ও পাহাড় থেকে প্রকৃতি যে ধাক্কা দিল তা সামাল দিতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  বাজারে চালের দাম অসম্ভব বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাজছে।  চাল নিয়ে রাজনীতি আওয়ামী লীগের জন্য সুখের স্মৃতি বহন করে না।  শুধু চাল নয়, বাজারে সব নিত্য পণ্যের দামই ঊর্ধ্বমুখী, নিয়ন্ত্রণহীন।  এর সঙ্গে ঢাকা শহরে শুরু হয়েছে ভয়াবহ ব্যাধি চিকনগুনিয়া।  মশার কামড়েই এই রোগের উৎপত্তি।  মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতার কথা মানুষের মুখে মুখে।  চিকনগুনিয়া আতঙ্ক এখন ঘরে ঘরে।  এসব ধাক্কা সামাল দিয়ে সরকার পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে কতটা সক্ষম হয় তার ওপরই রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ হবে বলে মনে হচ্ছে।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট 

[email protected]

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
গানের শহরে খালিদ খালিদ কান্না...
গানের শহরে খালিদ খালিদ কান্না...
হলমার্ক দুর্নীতি মামলা: কারাদণ্ডের আদেশ শুনে পালিয়ে গেলেন আসামি
হলমার্ক দুর্নীতি মামলা: কারাদণ্ডের আদেশ শুনে পালিয়ে গেলেন আসামি
এনসিসি ব্যাংক ও একপের মধ্যে চুক্তি সই
এনসিসি ব্যাংক ও একপের মধ্যে চুক্তি সই
‘বিএনএমের সদস্য’ সাকিব আ.লীগের এমপি: যা বললেন ওবায়দুল কাদের
‘বিএনএমের সদস্য’ সাকিব আ.লীগের এমপি: যা বললেন ওবায়দুল কাদের
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ