X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা সমস্যা ও সমাধান

চিররঞ্জন সরকার
২৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:২৮আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:৩২

চিররঞ্জন সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, বেঁচে থাকা, খাদ্য-পুষ্টি, ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কোনও শেষ নেই। পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন দেখে, তাদের ওপর নির্মম নির্যাতনের ভয়াবহ কাহিনি শুনে আমরা কতজন চোখের জল ফেলেছি। বলা চলে একটা মানবিক টান আমাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল এই ভাগ্যহত মানুষগুলোর কাছে। আমরা কয়েকজন প্রখর রোদ ও উষ্ণতাকে উপেক্ষা করে ঘরে ঘরে গিয়েছি। আন্তরিকভাবে জানা ও বোঝার চেষ্টা করেছি তাদের দুঃখের কারণগুলো। তাদের আশু চাহিদাগুলো।
কিন্তু আমি সবচেয়ে বিস্মিত হয়েছি তাদের মধ্যে একটা ‘নিশ্চিন্ত’ অভিব্যক্তি দেখে। কোনও কোনও নারীর চোখেমুখে কিছু বিষণ্নতার ছাপ দেখলেও কোনও পুরুষের মধ্যে তা দেখিনি। তারা নিজেরা কী ভাবছে, কী করতে পারে (আয়-উপার্জনের ক্ষেত্রে), ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী–এসব নিয়ে তাদের মধ্যে কোনও ভাবনা-চিন্তা, উদ্বেগ বা বিকার খুঁজে পাইনি। আমি জিজ্ঞেস করেছি, একমাস পর যদি রিলিফ বন্ধ হয়ে যায়, তখন আপনারা কী করবেন, কী খাবেন? তারা নিশ্চিন্তে বলেছে, আল্লাহ যা করে তাই হবে!
আমরা তাদের কাছে, জানতে চেয়েছি, তারা রাখাইনে ফিরে যেতে চায় না। তাদের বেশিরভাগই বলেছে, তারা আর সেখানে ফিরতে চায় না। কেউ বলেছে, তাদের ওপর কোনও নির্যাতন হবে না, তারা যে যেখানে ছিল সেখানে সে অবস্থায় আবার যদি ফিরে যাওয়ার গ্যারান্টি দেওয়া হয়, তাহলেই কেবল তারা ফিরবে! জিজ্ঞেস করেছি, এই গ্যারান্টি কে দেবে? বলেছে– জাতিসংঘ! কিন্তু ওদের কে বোঝাবে, জাতিসংঘ আজ পর্যন্ত নিজের আবাসভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া কোনও জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু ত্রাণ সহায়তা ছাড়া আর কিছুই দেয়নি, দিতে পারেনি!
তাদের মধ্যে অনেকের মধ্যে এই ধারণাও আছে, বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে মাত্র। কিন্তু খাবারের ব্যবস্থা করছে জাতিসংঘ! এবং জাতিসংঘ তাদের অনন্তকাল ধরে খাওয়াতে বাধ্য! আল্লাহ’র পরেই দেখলাম তারা জাতিসংঘের ওপর আস্থাশীল!
আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ ছিল তাদের ‘রাজনৈতিক’ মনোভাবটা জানা। সত্যি সত্যি তাদের কেন রাখাইন ছাড়তে হলো? আমরা যে ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা ‘আরসা’র কথা শুনি, মিয়ানমার সরকার যাদের একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে, যারা দাবি করে, রাখাইন প্রদেশের স্বাধীনতার জন্য তারা লড়ছে, এই সংগঠনের ব্যাপারে তাদের মনোভাব কী? ওই সংগঠনের হয়ে রোহিঙ্গারাও কি ফাইট করতে, স্বাধীন আরাকান প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চায়? রোহিঙ্গাদের জন্য পৃথক আবাসভূমি চায়?
কিন্তু প্রশ্নগুলো ‘সেনসেটিভ’ হওয়ায় এবং সময় ও সুযোগের অভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাইনি। তাছাড়া যাদের এই প্রশ্নগুলোর দু'য়েকটা করেছি, তারা কৌশলে উত্তর এড়িয়ে গেছে। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, ওরা ‘আরসা’র নাম সবাই জানে। কিন্তু এ ব্যাপারে মুখ খুলতে ভয় পায়। তারা ত্রাণ বা সুযোগ-সুবিধা ছাড়া অন্য কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। এক্ষেত্রে তারা ‘ভাষা’ বোঝে না! রাজনৈতিক বা ‘সেনসেটিভ’ প্রসঙ্গ এড়ানোর এটাই সম্ভত তাদের কৌশল!
তবে ‘রাখাইন প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদই রোহিঙ্গাদের দুঃখের কারণ’–এমন মন্তব্য করে আমাকে চমকে দেয় এক যুবক। উখিয়ার বালুখালী আশ্রয় শিবিরে সুফিউর রহমান নামে এক যুবককে পাই। একটি তাবুর সামনে ছায়ায় দাঁড়িয়ে সে মোবাইল ফোনে ইংরেজিতে কার সঙ্গে যেন কথা বলছিল। মোবাইলে তার ইংরেজিতে কথা বলা শুনে আমি চমকে যাই। তাকে টার্গেট করি। এক সময় তার মুখোমুখি হই। সে ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়েছে বলে জানায়। সে ইংরেজি জানে। বাংলাও বলতে পারে। তার চেহারা ও দৃষ্টির মধ্যে একটা ধারালো ভাব ছিল। আমি তার সঙ্গে একটু খাতির জমানোর চেষ্টা করি। ছেলেটি আস্তে আস্তে মুখ খোলে। আমি তার সঙ্গে ‘রাজনৈতিক’ প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করি। সেও অত্যন্ত সাবলীলভাবে তাদের দুঃখ-দুর্দশার পেছনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করে। তার মতে, রাখাইন মুসলমানদের মিয়ানমারে বর্ণনা করা হয় ‘বাঙালি’ বলে। মিয়ানমারের বৌদ্ধ এবং শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী, রোহিঙ্গারা হচ্ছে ‘বিদেশি’ বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী- যাদের ভাষা ও সংস্কৃতি আলাদা। তারা কোনোদিনই রোহিঙ্গাদের প্রতি সদয় ছিল না। একটা সন্দেহ-ক্ষোভ-অবিশ্বাস তাদের মধ্যে কাজ করত।
তার মতে, গত কয়েক বছর ধরে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পরিস্থিতিকে জটিল ও অসহনীয় করে তোলে। মিয়ানমার সরকারের মতে, রাখাইনে সাম্প্রতিক সহিংসতার জন্য ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’রা দায়ী।
ওই যুবকের মতে, আরসা নামের এই সংগঠনটির কৌশল বেশ দুর্বল এবং বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এদের সমর্থন করে না। ওই যুবক মনে করে, ‘আরসা’ একটা অজুহাত মাত্র। মূলত বার্মার সামরিক সরকার রোহিঙ্গাদের দেশ ছাড়া করতে চায়। ২৪ আগস্ট বিভিন্ন সেনাক্যাম্পে আরসার আক্রমণ মিয়ানমার সরকারকে একটা বড় সুযোগ তৈরি করে দেয়।
আমি প্রশ্ন করি, রাখাইন থেকে বাংলাদেশে যারা এসেছে তাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। যুবকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। অনেকেই বলাবলি করছেন, অনেক যুবক মিয়ানমারে রয়ে গেছে ‘যুদ্ধ করার’ জন্য। এ প্রসঙ্গে সুফিউর রহমান বলেন, এটা সত্য নয়। পুরুষরাও এসেছে। তাদের দেখা যায় কম। ত্রাণ সংগ্রহ করতে নারীরা বেশি যায়। বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও নারীরা বেশি যায়। ছেলেরা ঘরে বসে থাকে। তাই তাদের সংখ্যা কম বলে মনে হয়।
তবে কিছু পুরুষ এখনও মিয়ানমারে রয়ে গেছেন বলে তিনি স্বীকার করেন। তারা ভয়ের জীবনযাপন করছেন। অনেক কষ্ট করে টিকে আছেন!
সে একজন ঝানু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতো বলতে থাকেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের প্রধান কারণ রাখাইন প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ। মিয়ানমারের সামরিক শাসকেরা, যারা গত কয়েক দশক ধরে দেশের এই প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাট করেছে, বিক্রি ও বিলিবণ্টন করছে।
যদি রাখাইন প্রদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ না হতো এবং যদি চীন ও তার বাইরে তেল ও গ্যাসের পরিবহণে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রুট না হতো তাহলে সম্ভবত মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে এতটা কঠোর হতো না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি শক্তিধর দেশ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৩ সালে চীনে মিয়ানমারের উপকূল থেকে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শুরু করে যা রাখাইন প্রদেশের মধ্য দিয়ে নির্মিত। চীন মিয়ানমারের সামরিক শাসকের সঙ্গে ৩০ বছরের একটি চুক্তি করে। মিয়ানমারের লোভী শাসকগোষ্ঠীর কাছে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের মাধ্যমে আয়-উপার্জনের জন্য বহু-বিলিয়ন ডলারের চুক্তি যে অগ্রাধিকার পাবে এটাই স্বাভাবিক এবং হয়েছেও তাই।
সুফিউর বলতে থাকে আর আমি মুগ্ধ হয়ে শুনি- সৌদি আরবও বার্মা এবং চীন সরকারের সঙ্গে রাখাইন প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপাদন, বিপণন এবং শিল্পায়নের জন্য এক সঙ্গে কাজ করছে। সৌদি আরব ও তার ঘনিষ্ট কয়েকটি পারস্য উপসাগরীয় প্রতিবেশী ২০১১ সালে মিয়ানমারের তেল-সম্পদের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হয়ে পড়ে। সেই সময় রিয়াদ ও বেইজিং একটি সম্মতিপত্রের স্বাক্ষর করে যার মধ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে ২০০,০০০ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহের অঙ্গীকার করেছে। রাখাইন রাজ্যের তেল শিল্পের দখলদারিত্ব বাড়াতে সংযুক্ত আরব আমিরাত রাস্তা ও হোটেলও তৈরি করে। ২০১৪ সালে কাতার মিয়ানমারের মাধ্যমে চীনে মিথেন পরিবহন শুরু করে। চীনের সঙ্গে আরব উপসাগরীয় দেশগুলোকে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভাগ পেতে ভারত ও রাশিয়াও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনের চেষ্টা করছে।
তার মতে, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের এই ভোগ-দখল রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারকে তুচ্ছ বিষয়ে পরিণত করেছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কখনোই ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাইবে না। এ জন্য রোহিঙ্গাদের ওপর যতো স্টিম রোলার চালানো প্রয়োজন চালাবে। এটা সুস্পষ্ট যে সু চি তার বর্তমান ভূমিকায় থাকার জন্য শয়তানের সঙ্গে চুক্তি করেছে। বর্তমানে যা চলছে, রাখাইন প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও ব্যবসায়িক স্বার্থে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে যেভাবে জড়িয়ে গেছে, তাতে রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়ন সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিশ্রাম নেবে বলে মনে হয় না। আমাদেরও রাখাইনে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না!
আমি প্রশ্ন করি, তাহলে আপনারা কী করবেন? ফাইট? সে বলল দেখা যাক! এরপর সে দ্রুতই আমার সঙ্গে হাত মিলিয়ে হারিয়ে যায়! আমার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা আর হয় না!
এরপর আমার কথা হয় রাখাইন থেকে আসা কয়েকজন হিন্দু পরিবারের সঙ্গে। কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় চারশ হিন্দু পরিবার। তারাও মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে আসা। তারও অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার। গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে নতুন করে দমন অভিযান শুরু হয়। এর শিকার হয় হিন্দু পরিবারগুলোও। তবে তাদের তথ্যের সঙ্গে মুসলিম রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বৈপরীত্য লক্ষ করা গেছে।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, মিয়ানমারে মুখোশধারী একটি দল ওই হিন্দুপল্লিতে হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করে। পরে তারা ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে তারও বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের অভিযোগের তীর মুসলিম রোহিঙ্গাদের দিকেই। কুতুপালংয়ে পালিয়ে আসা রমণী শীল ও নিরঞ্জন রুদ্র বলেন, ‘মুখোশধারী কিছু মানুষ বন্দুক, লাঠি ও ছুরি দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।’
গত কয়েকবছর ধরেই রাখাইনে হিন্দুদের ওপর মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছে। সেখানে অনেক গণকবর আছে, যারা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা জঙ্গিদের হাতে খুন হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। মিয়ানমার সরকার ও আর্মিদের ওপর দায় চাপাতে এমনটি করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
এমন পরস্পরবিরোধী তথ্যের সত্যতা কিভাবে যাচাই করা সম্ভব? আমরা এর কোনও কূলকিনারা করতে পারিনি!

লেখক: কলামিস্ট

এসএএস

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ধারণার চেয়ে কম সেনা প্রয়োজন ইউক্রেনের: সিরস্কি
ধারণার চেয়ে কম সেনা প্রয়োজন ইউক্রেনের: সিরস্কি
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ