X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সমস্যার পেছনের ‘অর্থনীতি’

লুৎফুল হোসেন
২৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৫৩আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৫৬

লুৎফুল হোসেন খুব ছোটবেলায় গল্প শুনেছিলাম ‘ভুলু’ পালোয়ানের। গল্প শুনেই ভক্ত। একবার নাসের ভুলু দলবল নিয়ে এলো আমাদের শহরে। স্টেডিয়ামের মাঝখানে কুস্তির জন্য বড় মঞ্চ বানানো হলো। তার চারপাশে গোটা স্টেডিয়ামজুড়ে দর্শকদের বসার জায়গা। অনেক দূর থেকে পালোয়ানদের ছোট ছোট মনে হয়। তাদের মারামারি ছোটাছুটি তবু তীব্র আলোয় সদ্য কৈশোরের তাজা চোখে বেশ স্পষ্ট দেখা যায়। সাদাকালো টেলিভিশনে দেখা রেসলিং চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে গভীর করে দেয়।
সেই রেসলিং এখন আরও বেশি হয়, রঙিন টিভির চ্যানেলে চ্যানেলে। তবে তফাৎ হলো এই যে, আগে এটা ছিল সত্যি সত্যি মল্লযুদ্ধে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। এখন টাকা কামানোর সাজানো নাটক। রেসলিংয়ের স্ক্রিপ্ট লিখিয়েরা হলিউডের মুভি বা অন্য সব স্ক্রিপ্ট রাইটারদের চেয়ে নাকি ঢের বেশি টাকা পায়।
মল্লযুদ্ধের মতো পৃথিবীর তাবৎ বিষয়বস্তুই বর্তমানে স্রেফ সাজানো নাটক, নাট্যকারের ইচ্ছা ও অর্থের ফায়দাকে ঘিরে চমক। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা আর তাদের কারণে সৃষ্ট বাংলাদেশে বিদ্যমান দীর্ঘদিনের শরণার্থী সমস্যা তাই যত রকমের আঙ্গিকেই বিশ্লেষিত হোক না কেন অর্থনৈতিক বিবেচনাই আসলে বেঁধে দিয়েছে এর সব সূত্র।

বাংলাদেশ, ভারত, চীন, লাওস, থাইল্যান্ড দেশগুলোকে সীমান্তের চারপাশে নিয়ে মিয়ানমার বিশ্বের চল্লিশ শতাংশ মানুষ পরিবেষ্টিত একটি দেশ। প্রতিবেশী এই দেশগুলোর সম্মিলিত অর্থনৈতিক সামর্থ্য পনেরো ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্ব জিডিপির কুড়ি শতাংশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ভূখণ্ড মিয়ানমার হলো সর্বনিম্ন ঘনবসতির একটা দেশ। যাদের আছে বিস্তীর্ণ ঊর্বর ভূমি আর বিপুল খনিজ সম্পদের সমৃদ্ধি।

দেশটায় আশি শতাংশ প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ এযাবৎকালে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ খাতে সীমাবদ্ধ ছিল। সেটা ২০১৩ সালের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন থেকে লাফিয়ে বেড়ে ২০১৬ সালে প্রায় সাড়ে ৯ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৭ সালে নতুন বিনিয়োগ নীতিমালার ফলে তা হুট করে প্রায় অর্ধেকে নেমে আসার তথ্য মিললেও ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া বিনিয়োগ সংশ্লিষ্টতা মিয়ানমারের সঙ্গে দৃঢ় স্বার্থের বন্ধন তৈরি করে দিয়েছে বিশ্বের মাথা মাথা দেশগুলোর।

মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় আইনি সংস্থাটি হলো মার্কিনিদের, যা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের তথ্য ও বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়ার কাজটিই করছে মূলত। মিয়ানমারে অবস্থানরত বিদেশিদের মধ্যে মার্কিনিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিনিয়োগ দৌড়ে মিয়ানমারের কাছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনের চেয়ে বহুগুণ পিছিয়ে থাকলেও মিয়ানমারকে ঘিরে মার্কিন স্বার্থ সজাগ সচল ও উদগ্রীব। ওবামা আমলে সু চি’র সাক্ষাৎ-পরবর্তী মার্কিননীতির উদারীকরণের ফলে মিয়ানমারকে ঘিরে সেদেশের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ধীরে ধীরে  বাড়ছে।

তেল-গ্যাস ছাড়া স্রেফ সবুজ জেড পাথরের একচ্ছত্র বৃহত্তম মজুদকে ঘিরেই মিয়ানমারের রয়েছে বিশাল অর্থনৈতিক মেরুকরণ। মিয়ানমারের উত্তরাংশের পাহাড়ি অঞ্চলে জেড পাথর উত্তোলনের খনিগুলো মূলত দশটি প্রভাবশালী সামরিক ও সরকার সংশ্লিষ্ট পরিবারের হাতে কুক্ষিগত। গ্লোবাল উইটনেসের প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৪ সালেই মিয়ানমারের জেড পাথরের উৎপাদন ছিল ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা তাদের সে বছরের জিডিপির ৪৮ শতাংশ। সাধারণ মানুষ অবশ্য এর কিছুমাত্রও ভাগীদার নয়। প্রমাণ এই যে, এ অংকটা মিয়ানমারের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের চেয়ে ৪৬ গুণ বেশি।

রাশিয়ার সঙ্গে কেবলি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা নয়, পারমাণবিক গবেষণা সংক্রান্ত চুক্তিও হয় ২০০৭ সালে। মান্দালে প্রদেশের নঙলেইঙ গ্রামে পাহাড়ের অভ্যন্তরে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর স্থাপনে উত্তর কোরিয়ার সহায়তাও মিয়ানমার নিয়েছে। তদুপরি ১৯৯৩ সালে কেমিক্যাল ওয়েপন চুক্তি স্বাক্ষর করলেও তার শর্ত বাস্তবায়নে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া মিয়ানমার রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন প্রতিবেদনও আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মিয়ানমার সে সংবাদের সত্যতা অস্বীকার করলেও কোনও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষককে অনুসন্ধানের জন্য প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।

২০১৮ সালে পারস্পরিক সহযোগিতার ৭০ বছর উদযাপন করবে মিয়ানমার ও রাশিয়া। ২০১৪ সালে ২০.৪ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র আমদানি করা মিয়ানমার রাশিয়ার বৃহত্তম অস্ত্র ক্রেতা। ২০০৯-১০ সালে ৫১১ মিলিয়ন ডলারের যুদ্ধ বিমান ক্রেতা মিয়ানমার। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের ২০১৫ সালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৩০.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পশ্চিমা দেশগুলোর বিবিধ বাণিজ্যিক অবরোধে ভুক্তভোগী এই দুই দেশ পারস্পরিক সম্পর্কের বাড়তি আন্তরিকতা নিয়ে প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে। চলতি বছরে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিধি ৫০০ মিলিয়নে পৌঁছানোর কথা।

 অন্য সব দেশের তুলনায় চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক পরিধি ধারণার চেয়ে বহুগুণ বেশি। দশ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অংকের এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের মধ্যে অস্ত্র থেকে শুরু করে আছে বিবিধ পণ্য ও অবকাঠামোগত নির্মাণ, সেবা ও বাণিজ্য। জেড পাথর ঘিরে আছে চীনের প্রায় সর্বাংশ সংশ্লিষ্টতা। যদিও তা অপ্রচলিত পন্থার ভেতর দিয়েই হচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে। গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনে মায়ানমারের সঙ্গে চীনের সংশ্লিষ্টতা শুধুই কারিগরি পর্যায়েরই নয়, চীনের এতে সত্তর শতাংশ মালিকানাও আছে। গ্যাস কেনার জন্য মিয়ানমার থেকে চীনে গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণের কাজও চলছে জোর গতিতে। কেবল ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্প বা ৩ হাজার ২১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চীন পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোর’ (সিপিইসি) নয়, গভীর সমুদ্র বন্দরের মালিকানা ও অন্যান্য অবকাঠামোগত খাতের চৈনিক সম্পৃক্ততা ঘিরে চীনের দীর্ঘতম রেল টানেলের নির্মাণ কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। নিজেদের উদ্ভাবিত টানেল বোরিং মেশিন ব্যবহার করে ইউনান প্রদেশের গোয়ালিগং পর্বতমালার ভেতর দিয়ে সাড়ে ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ডালি-রুইলি রেল টানেল প্রজেক্ট শেষ হতে বেশি দেরি নেই। ৩৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল প্রজেক্টটি সম্পন্ন হলে এটাই হবে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। তখন মিয়ানমার সীমান্তের রুইলি থেকে চীন যেকোনও সময়ই মিয়ানমারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন সম্পন্ন করতে পারবে। অচিরেই পাকিস্তানের সীমানা মাড়িয়ে চীনের ‘ওয়ান ওয়ে ওয়ান রোড’ ইয়োরোপের সীমানায় পৌঁছে যাবে। এমনটাই চীনের পরিকল্পনা ছকে আঁকা।

এতসব যজ্ঞের সবচেয়ে বেশি প্রভাব মায়ানমারের সমুদ্রতীরবর্তী রাখাইন প্রদেশ বা প্রাচীন আরাকানের ওপর পড়ছে সবচেয়ে বেশি। কৃষি, খাদ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, শিল্পোৎপাদন—এসব শ্রমনির্ভর খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সুনির্দিষ্ট কিছু খাতের ওপর নির্ভরশীল না রাখার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার সূত্র ধরে বিবিধ মেগা প্রজেক্ট ঘিরে ইকোনোমিক জোন তৈরি করবার যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। তার উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে নির্ধারিত ভূখণ্ড রাখাইন। রোহিঙ্গা তাড়িয়ে সম্ভবত ভূমি অধিগ্রহণের কাজটিই প্রচ্ছন্নভাবে করে নিচ্ছে মিয়ানমার সরকার।

অতীতের ঘটনাবলির জের ধরে সাম্প্রতিক জাতিগতভাবে নির্মূল করার প্রক্রিয়াটির নৃশংসতার আড়ালে যদি ভূমি অধিগ্রহণকেই লুকিয়ে থাকে, তবে সেটা আশ্চর্য হওয়ার কিছু নয়। চীন, রাশিয়া, আমেরিকার গণবিরোধী ও মানবতার প্রতি নির্বিকার থেকে গণহত্যাকে এড়িয়ে মিয়ানমার সরকারকে সমর্থন দেওয়ায়ও নেই অবাক হওয়ার কিছু। বিদ্যমান সমাজ ও রাষ্ট্রের নৈতিক আচরণে মানবতার চেয়ে টাকাই অধিক গুরুত্বের বিষয়। তাই অস্ত্র বিক্রেতা আরও কয়টি দেশের মতো ভারতও সেই মিয়ানমারের পক্ষেই। কারণ, তাদেরও বাজার সম্প্রসারণ চাই। পুরনো শত্রু চীন মিয়ানমার জুড়ে কী কী সব করে ফেললো সেসবের হদিস রাখার স্বার্থে সুসম্পর্কের গভীরতা ভারতকে বাড়াতে হবেই।

মাঝে নানা অজুহাতে গৃহহীন, সহায় সম্বলহীন, মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গার জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। দুই প্রজন্ম আগে মিয়ানমারের সাংসদ হওয়ার পরেও অন্তত দশটি রোহিঙ্গা পরিবারের উত্তরসূরিরা আজ মিয়ানমারের নাগরিকত্বটুকুও ধারণ করতে পারছে না।

কথা হলো, আন্তর্জাতিক বুদ্ধি-পরামর্শ, অস্ত্র সরবরাহ, অর্থায়ন—এসবের সম্মিলিত মদদে প্রশিক্ষিত পৃথিবীর দ্বাদশ বৃহত্তম সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুষ্টিমেয় বিপ্লবীর সহিংসতার চেয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রভাব নিঃসন্দেহে অধিক কার্যকর হতো। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সেই সত্য পাথরচাপা পড়ে থেকেছে সম্ভবত সরকারি সহিংসতা সংঘটনের একটা সুযোগ সৃষ্টির  উদ্দেশ্যেই। না হয় জেলখানার মতো গ্রামে গ্রামে রোল কল করা, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হলে সামরিক বাহিনীর ছাড়পত্র লাগা, শিক্ষার সুযোগ ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার মতো নিষেধাজ্ঞা ও সেবা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা ঘিরে একটা মানবেতর জীবন যাপনের রোহিঙ্গারা অস্ত্র সংগ্রহ ও বোমা মজুদের মতো কাজ সম্পন্ন করে এবং দুটা মাত্র হামলা চালিয়ে উত্তরণের কোনও পথ করতে পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কি! এটা একটা প্রশ্ন।

এমন অবস্থায় মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে পুরনো এমন এক চুক্তির কথা বলছে, যেখানে তাদের মর্জিই শেষ কথা হয়ে বিদ্যমান থাকবে। ঐতিহ্যের জের ধরে নানা টালবাহানা করে সময় পার করতে করতে শেষমেষ মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের কিছুই বাস্তবায়ন করবে কিনা, সন্দেহ আছে। অথচ দিন যাচ্ছে আর আগের ও বর্তমান সময়ের উদ্বাস্তু মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়ের নামে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গারা সংখ্যায় দশ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে বলা হচ্ছে। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সামাজিক, পরিবেশগত, স্বাস্থ্যগত, অর্থনৈতিক, অপরাধ জগতভিত্তিক প্রভাব বাংলাদেশকে কী কী বা কতটুকু ক্ষতির সম্মুখীন করছে ও আগামীতে করবে, তার প্রয়োজনীয় সমীক্ষা অনুপস্থিত। আন্তর্জাতিক আর্থিক বা ত্রাণ সাহায্য সহযোগিতার বিপরীতে সংকট নিরসনে বৈদেশিক কূটনৈতিক সমর্থন বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এ জন্য আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা ছাড়া কোনও পন্থায়ই কার্যকর হওয়ার কিছুমাত্র সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। আর সেটা করতে যত বেশি দেরি হবে, তত বেশি ক্ষতি অপূরণীয় হয়ে আমাদের গভীরতর জটিলতায় ঠেলে দিতে থাকবে।  

লেখক: কথাসাহিত্যিক

 

এসএএস/এমএনএইচ

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তরল খাদ্য দিচ্ছে ডিএমপি
দাবদাহে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তরল খাদ্য দিচ্ছে ডিএমপি
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ