X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘তৃতীয় শক্তি’র ভবিষ্যৎ

আমীন আল রশীদ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৫৩আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:০০

আমীন আল রশীদ ২০০৬ সালের ৬ জুন সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমান সম্পাদিত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার উদ্বোধনী সংখ্যার প্রধান শিরোনাম ছিল ‘থার্ড ফোর্স আসছে না’। এর ছয় মাস পরেই ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পালাবদল ঘটে। ফখরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে এবং ওই সরকারের উপদেষ্টাদের সবাই ছিলেন সুশীল/নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি—যারা দুই বছর ক্ষমতায় থাকেন।
ওই সময় থেকেই রাজনীতিতে ‘থার্ড ফোর্স’ বা ‘তৃতীয় শক্তি’ কিংবা ‘বিকল্প শক্তি’ শব্দগুলো বেশ জোরালোভাবে উচ্চারিত হতে থাকে। প্রশ্ন হলো, এই ‘তৃতীয় শক্তি’ বলতে কাদের বুঝায় এবং কেন এই টার্মটি রাজনীতিতে যুক্ত হলো? আর আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন ছোট ছোট দল যেসব জোট গঠন করছে, যেমন যুক্তফ্রন্ট, বাম গণতান্ত্রিক জোট, এরশাদের নেতৃত্বে ইসলামিক দল ইত্যাদি এবং যারা নিজেদের ‘তৃতীয় শক্তি’ বলে ভাবতে পছন্দ করছে, তাদের ভবিষ্যৎইবা কী?
মনে রাখা দরকার, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যে সরকার গঠিত হয়, সেখানে ওই অর্থে বিরোধী দল বলে কিছু ছিল না। বাস্তবিক কারণে তখন দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষই আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে তখন পর্যন্ত কেউ দাঁড়াতে পারেনি। জাসদের মতো বামপন্থী রাজনৈতিক দলও ওই সময়ে জনমনে কোনও আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির জনককে হত্যার পরে দেশের রাজনীতিতে প্রথম বড় ধরনের মেরুকরণ শুরু হয়। খন্দকার মোশতাকের তৈরি করা পথে ক্ষমতায় আসেন জিয়াউর রহমান। তার সময়ে আওয়ামী লীগ কোণঠাসা। ফলে বিরোধী দল বলে তখনও ওই অর্থে কিছু ছিল না। এরপর ক্ষমতায় আসেন আরেক সামরিক শাসক এরশাদ। তার ৯ বছরের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ে সংসদ ছিল অকার্যকর। বস্তুত এই সময়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় দেশের রাজনীতিতে নতুন করে জন্ম হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির। এ দুই দলের নেতৃত্বে যে যুগপৎ আন্দোলন হয়, তাতে পতন হয় এরশাদ সরকারের এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়া নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। এরপর ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে দুবার বিএনপি (১৯৯১-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬) এবং একবার আওয়ামী লীগ (১৯৯৬-২০০১) রাষ্ট্র পরিচালনা করে।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই শিবিরে যে বিভক্ত, সেটি পাকাপোক্ত হয় এই ১৫ বছরে। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় আছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টি সংসদের বিরোধী দল হলেও মানুষ বিরোধী দল বলতে বিএনপিকেই বোঝে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যখন প্রথম শক্তি, বিএনপি তখন দ্বিতীয়; বিএনপি যখন প্রথম আওয়ামী লীগ তখন দ্বিতীয়। জনগণ একটি দলকে আরেকটির বিকল্প হিসেবে ভাবে। আর এ কারণেই ২০০৬ সালের টালমাটাল রাজনীতির পথ বেয়ে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ওয়ান ইলেভেন বা এক-এগারোর পটপরিবর্তনে যে সরকার গঠিত হয়—তখন অনেকে ওই সরকারকে ‘তৃতীয় শক্তি’ বলে অভিহিত করেন। অর্থাৎ দীর্ঘদিন পরে দেশের মানুষ দেখলো, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে একটি শক্তি ক্ষমতায় আরোহণ করছে, সেটি যেভাবেই হোক এবং যে কারণেই হোক।

স্মরণ করা যেতে পারে, এক-এগারোর পরে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস একটি রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। একই সময়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীও পিডিপি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন, যেখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা যোগ দেন। তখন সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কল্যাণ পার্টিও আলোচনার জন্ম দেয়। এসব দলই তখন রাজনীতিতে ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসেবে উল্লিখিত হচ্ছিলো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পরে ‘কিংস পার্টি’ বলে পরিচিত এই দলগুলো গুরুত্ব হারাতে থাকে এবং ধীরে ধীরে রাজনীতির মাঠ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অর্থাৎ ‘তৃতীয় শক্তি’ উত্থানের প্রক্রিয়া সে যাত্রা ভেস্তে যায়।

বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে এতটাই বিভক্ত যে দীর্ঘ নয় বছর শাসনক্ষমতায় থাকার পরও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ নিজেকে প্রথম শক্তি মনে করেন না। কারণ, তিনি জানেন এই দেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে মোটা দাগে মানুষের ভাবনা কম। ফলে এই সাবেক রাষ্ট্রপতিও নিজেকে ‘তৃতীয় শক্তি’ মনে করেন। গত বছরের ৭ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত জাতীয় জোট নামে তিনি একটি নতুন জোটের ঘোষণা দেন–যেখানে অধিকাংশ দলই ধর্মভিত্তিক। ৫৮টি দলের মধ্যে ৫৬টির কোনও নিবন্ধনই নেই। অধিকাংশ দলের নাম দেশের মানুষ জানেই না। ভোট তো দূরে থাক, সাধারণ মানুষের মধ্যে এসব দলের কোনও গ্রহণযোগ্যতাও নেই।

এরপর গত ১৮ জুলাই বামপন্থী ৮টি দল মিলে বাম গণতান্ত্রিক জোট নামে একটি নতুন জোটের ঘোষণা দেয়। এর আগে বিকল্প ধারা, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্য মিলে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর গঠন করে যুক্তফ্রন্ট। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম যুক্তফ্রন্ট গঠনের আগের বৈঠকগুলোতে বেশ কয়েক দফা অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত যুক্তফ্রন্টে যোগ দেয়নি; যা জোটের অন্য দলগুলোর সঙ্গে তার এক ধরনের টানাপড়েন তৈরি করেছে বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে। ইদানীং যুক্তফ্রন্ট নেতাদের বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে। তারা নিয়মিত মিটিং করছেন। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে যাচ্ছেন। মোটামুটি প্রতিদিনই সংবাদ শিরোনাম হচ্ছেন।

কথা হচ্ছে, কেন ‘তৃতীয় শক্তি’ শব্দটি রাজনীতিতে যুক্ত হলো? এর সহজ জবাব, দেশের প্রথম ও দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে স্বীকৃত বড় দুটি দল অনেকবার ক্ষমতায় থাকলেও তারা জনগণের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি। দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে কারণে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ‘বিকল্প শক্তি’ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে এবং করছে। প্রশ্ন হলো, যারা এই চেষ্টাটি করছে, তারা কারা এবং জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?

এ মুহূর্তে যারা নিজেদের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প অর্থাৎ ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসেবে দাবি করছেন, তারা জনগণের কাছে কতটা পরীক্ষিত? সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন যতদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর আমলে, ততদিন মানুষের কাছে তার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল, পরবর্তীতে রাজনীতির মাঠে যে তিনি সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেননি তার প্রমাণ তার দল গণফোরাম। একসময়ের বামপন্থী এবং সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না অনলবর্ষী বক্তা এবং তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে খ্যাত হলেও নাগরিক ঐক্য নামে যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, তার সঙ্গে কতজন মানুষ আছেন? সাবেক বিএনপি নেতা এবং প্রখ্যাত চিকিৎসক বি. চৌধুরীর বিকল্পধারা, আ স ম আব্দুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বা জেএসডি এবং বঙ্গবীর খ্যাত কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির গ্রহণযোগ্যতাইবা কী? আমার মনে হয় এই দলগুলো এককভাবে নির্বাচন করলে সব দলের প্রধানও হয়তো জয়ী হবেন না। আবার এও মনে হয়, তারা যে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেছেন, তারাও যদি বিএনপি-আওয়ামী লীগের বাইরে গিয়ে তৃতীয় জোটের ব্যানারে নির্বাচন করেন, তাতেও গোটা দশেক আসন পাবেন কিনা সন্দেহ।

তাদের সামনে পথ একটাই, তা হলো বিএনপির সঙ্গে ঐক্য। কারণ, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যাবে বলে মনে হয় না এবং আওয়ামী লীগের প্রয়োজনও নেই। সুতরাং এই যুক্তফ্রন্ট কিংবা অন্যান্য ছোট ছোট দলগুলো মিলে যদি এ মুহূর্তের দ্বিতীয় শক্তি বিএনপির সঙ্গে জোট করে, সেটি তাদের কিছুটা সুবিধা দেবে। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে মিশে গেলে আর সেটি ‘তৃতীয় শক্তি’ হবে না।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া যে ৫ দফা দাবির ঘোষণা দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, ইসি পুনর্গঠন, নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে নির্বাচনের পরে ১০ দিন পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা বাতিলের দাবি। দেখা যাচ্ছে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিরও একই দাবি। তার মানে বিএনপির সঙ্গে এই দুটি জোটের চিন্তায় ঐক্য রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে, জামায়াত ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের মতদ্বৈধতা আছে। জামায়াত এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল না হলেও বিএনপির সঙ্গে তার একটা নির্বাচনি এবং আদর্শিক ঐক্য রয়েছে। কিন্তু যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যে রাজি নয়। ফলে জামায়াত প্রশ্নে বিএনপি তার অবস্থান না বদলালে শেষমেশ বিএনপির নেতৃত্বে বৃহত্তর ঐক্যের সম্ভাবনা কম।

বাকি থাকে এরশাদের জাতীয় পার্টি। এরশাদ বহুদিন ধরেই বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তার দল তিনশ’ আসনে প্রার্থী দেবে। তিনি আওয়ামী লীগের জোট থেকে বহুবার বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আবার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত পদে বহাল থেকেছেন এবং এখনও আছেন। শুধু তাই নয়, তার দল সংসদের প্রধান বিরোধী দল হওয়ার পরও সরকারের মন্ত্রিসভায় তাদের একাধিক সদস্য আছেন। যেকোনও সময় মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাবেন—এমন কথাও বলা হয়েছে বহুবার এবং সেই কথা শুনতে শুনতে নির্বাচনের সময়ই ঘনিয়ে এসেছে। ফলে এরশাদ সাহেব এবং তার দল কখন কী বলে না বলে, রাজনীতিতে এর খুব বেশি তাৎপর্য নেই। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, এককভাবে নির্বাচন করলে জাতীয় পার্টি হয়তো গোটা তিরিশেক আসন পাবে। বিভিন্ন সময়ে এরশাদ ইসলামিক নামধারী দলগুলোর সঙ্গেও জোট করতে চেয়েছেন। সেসব দলও যদি তার সঙ্গে যোগ দেয়, তাতেও যে আসন খুব একটা বাড়বে—এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।

এসব বিবেচনায় এটি বলা যায় যে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অর্থাৎ দুই শক্তির মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এই দুই দল ও জোটের বাইরে গিয়ে নতুন কোনও অর্থাৎ তৃতীয় কারও সফল হওয়া খুব কঠিন। এর বড় কারণ যারা এই তৃতীয় বা বিকল্প শক্তির কথা বলছেন, তাদের মধ্যে এরশাদের জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য কোনও দলের ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরে থাক, বড় আকারে বিরোধী দলের থাকারও অভিজ্ঞতা নেই। আবার এসব দলের প্রধানরা মূলত দলছুট। অর্থাৎ বড় দুটি দল থেকে ছিটকে পড়ে বিকল্প কিছু একটা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানুষের কাছে তারা পরীক্ষিত নন এবং রাজনীতিতে জনআস্থার যে বিষয়—তাও এসব দলের ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ।

এই উপমহাদেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির সবচেয়ে বড় উদাহরণ ভারতের আম আদমি পার্টি। ভোটাররা এরকম একটি ছোট দলকে বিজয়ী করেছে, কারণ এই দলটি সাধারণ মানুষের সঙ্গে থেকেছে। সব গণতান্ত্রিক এবং সামাজিক ইস্যুতে সোচ্চার থেকেছে। কিন্তু আমাদের দেশে যারা নিজেদের বড় দুটি দলের বিকল্প হিসেবে ভাবছে, জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের অবস্থান কী? কোনও একটি ইস্যুতে তারা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বড় কোনও আন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছে? রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি লাগে—তা তাদের আছে?

সম্প্রতি পাকিস্তানে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের ক্ষমতায় আসাকেও  সে দেশে ‘তৃতীয় শক্তি’র উত্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যত সমালোচনাই থাকুক এবং তিনি যতই সেনা আশীর্বাদপুষ্ট হোন না কেন, ইমরান খান প্রচলিত ধারার রাজনীতির কঠোর সমালোচক। ক্ষমতায় গিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলেছেন; প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলেছেন। শেষমেশ কতটা পরিবর্তন করতে পারবেন বা পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী এবং জঙ্গিদের যে নিয়ন্ত্রণ তাতে তিনি শেষমেশ কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, তা এখনই বলা না গেলেও দেশটির সাম্প্রতিক নির্বাচন এই উপমহাদেশ শুধু নয়, সারা বিশ্বের ছোট দলগুলো, বিশেষ করে যারা নিজেদের ‘তৃতীয় শক্তি’ ভাবে—তাদের জন্য একটি উদাহরণ।

লেখক: সাংবাদিক

 

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
অবৈধ অটোরিকশা-ইজিবাইককে লাইসেন্সের আওতায় আনার দাবি
অবৈধ অটোরিকশা-ইজিবাইককে লাইসেন্সের আওতায় আনার দাবি
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি এবং ৫টি সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি এবং ৫টি সমঝোতা স্মারক সই
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পার্সেলে তরুণদের কাছে আসছে কোটি টাকার মাদক
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পার্সেলে তরুণদের কাছে আসছে কোটি টাকার মাদক
গাজার হাসপাতালে গণকবর, আতঙ্কিত জাতিসংঘ অধিকার প্রধান   
গাজার হাসপাতালে গণকবর, আতঙ্কিত জাতিসংঘ অধিকার প্রধান  
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ