X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

মনোনয়নে জয় হোক তারুণ্যের

তুষার আবদুল্লাহ
২৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:৩৭আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:১৫

তুষার আবদুল্লাহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনও ইন-আউট চলছে। মনোনয়ন দেওয়ার শর্ত এবং যোগ্যতায় নতুন নতুন সূত্র ও গণিত উদ্ভাবন হচ্ছে। সকালে যার মুখে ভোরের আলো, রাতেই তার মুখে অমাবস্যা। রাতভোর চাঁদের আলোয় স্বপ্ন দেখে, দিনের আলোয় হতাশায় নিমজ্জিত। গণমাধ্যমে প্রতিদিনই বিভিন্ন আসন নিয়ে দল এবং জোটের শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকাশ আসছে। অর্থাৎ ঘোষণা হচ্ছে হচ্ছে বলেও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি কেউ। জোটের বন্ধন মনোনয়নকে আরও জটিল করে তুলছে। আছে তৃণমূলের ক্ষোভ-অভিমান। যেহেতু দেরি হচ্ছে, মনোনয়ন তালিকা ঘোষণার, তাই দাবি রাখতে চাই তরুণদের হয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় প্রাধান্য পাক তারুণ্য। এই দাবি সব রাজনৈতিক দলের কাছেই।

আওয়ামী লীগ তরুণদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছিল। বলা হয়েছিল, তরুণদের এবার অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সেই আশ্বাসে মাঠে উজ্জীবিত হয়েছিল তরুণ নেতৃত্ব। শুধু যে তরুণরাই উজ্জীবিত হয়েছিল, তা নয়। ভোটাররাও হয়ে উঠেছিলেন আশাবাদী। তরুণ স্পর্শে রাজনীতি নতুন রঙ পাবে। দেশ গড়ার ক্ষেত্রে নতুন স্বপ্ন ও গতি যুক্ত হবে বলে তারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন। কারণ সব দলেরই পুরনো নেতাদের নিয়ে, খোলামেলা বলতে হলে বলা যায় সংসদ সদস্য বা প্রার্থীদের নিয়ে ভোটাররা হাঁপিয়ে উঠেছেন। ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। অনেক প্রবীণ ও পুরনো নেতা আছেন, যারা ভাবনায় ও কাজের গতিতে এখনও তরুণ। কিন্তু তারা ব্যতিক্রমই। সংখ্যাটি হাতেগোনা। বেশিরভাগই জনবিচ্ছিন্ন। দুর্নীতিসহ নানা কারণে বিতর্কিত। এই ধরনের প্রবীণেরা রাজনৈতিক চিন্তার দিক থেকেও সেকেলে। তারা স্থানীয়ভাবে তরুণ বা নতুন নেতৃত্ব তৈরি হতেও দেন না। তাদের হাতে যে নতুনের জন্ম হয়, তাও পারিবারিক গণ্ডির বাইরের নয়। অথচ সব দলেই ছাত্র ও যুব সংগঠন রয়েছে। অন্য অঙ্গ সংগঠনেও আছে তরুণ। তৃণমূল থেকে ওঠে আসা বা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থাকা এই তরুণরা স্থানীয় উন্নয়ন, শুদ্ধ রাজনৈতিক চর্চায় যেমন ভূমিকা রাখতে পারবেন, তেমনি কেন্দ্রীয়ভাবেও এই সময়ের তারুণ্যের চাহিদাকে উপস্থাপন করতে পারবেন। এভাবেই নতুন নেতৃত্ব তৈরির আঁতুড় ঘরগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে, অর্থাৎ ছাত্র সংসদ নেই কোথাও। সেখানে এখনও যে মাঠপর্যায়ে তরুণেরা নেতাকেন্দ্রিক রাজনীতি করার পরও জনমানুষের ইশতেহার নিয়ে ভাবেন, এই ভাবনাকে শ্রদ্ধা বা ভালোবাসা জানানোর দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকেই জানা-আওয়ামী লীগ সভাপতি তৃণমূলের অনেক নেতার কথা শুনেছেন। তারা সভাপতির সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের শক্তি ও নিজেদের স্বপ্নের কথা বলেছেন। তাদের কারও কারও কথায় আওয়ামী লীগ সভাপতি আবেগাপ্লুত হয়েছেন এবং নতুন দ্যুতি দেখে আশান্বিতও হয়েছেন। বিশ্বাস রাখাই যায়, তিনি শেষমুহূর্তে এসে তরুণদের বিশেষ সুযোগ করে দেবেন। তরুণরা ভোট থেকে জিতে আসতে পারবেন না, এই ধারণা ঠিক নয়। কারণ, পুরনো অনেক মন্ত্রী সংসদের সঙ্গে দুর্নীতি ও বিতর্কের দাগ যুক্ত আছে। সেখানে এই তরুণরা দাগমুক্ত।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং তাদের শরিক বিএনপির কাছেও তরুণদের প্রবল দাবি রয়েছে। বিএনপির তরুণরা কিছুটা হয়তো সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন, কারণ তাদের অনেক প্রবীণ নেতার বয়সজনিত কারণে নির্বাচনের লড়াইয়ের সামর্থ্য নেই। সেখানে তরুণরা আসতে পারেন। এখানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলের কাছেই নিবেদন রাখতে চাই–তরুণ মানেই একথা ভাবা যাবে না যে, প্রবীণের পারিবারিক উত্তরাধিকার তরুণই যথার্থ। প্রবীণের যিনি উত্তরাধিকার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, তারাও জনবিচ্ছিন্ন ও রাজনৈতিক চর্চার সঙ্গে যুক্ত থাকেন না। অন্য পেশা থেকে এসে পারিবারিক উত্তরাধিকার হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে যান। এটা স্থানীয় নির্বাচনেও দেখা যায়। এই প্রক্রিয়া তরুণ নেতৃত্বকে আরও হতাশ করে একইসঙ্গে রাজনীতিবিমুখও করে তোলে। তাই মনোনয়ন দেওয়ার বেলায় সেই তরুণকেই বিবেচনায় রাখতে হবে–যিনি রাজনৈতিক অনুশীলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উঠেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ তারুণ্যে গতিশীল হোক এবং সংসদ কক্ষে উচ্চারিত হোক তারুণ্যের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।

লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি

/এসএএস/এমএনএইচ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ