X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লড়াই আপনারও

রুমিন ফারহানা
২৯ জুলাই ২০১৯, ১৫:৩৩আপডেট : ২৯ জুলাই ২০১৯, ১৫:৩৮

রুমিন ফারহানা আমরা প্রায়ই বলি ‘পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়’। প্রায় সব ক্ষেত্রে কথাটা সত্যিও। কিন্তু একজন নোয়াম চমস্কি কিংবা অনেক ক্ষেত্রেই তার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করা স্লোভো জিজেক যখন থাকবেন না, তখন পৃথিবীতে তৈরি হওয়া নতুন কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক-সামাজিক ঘটনা বা প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশ্লেষণ করার মতো মানুষ থাকবেই, কিন্তু চমস্কি কিংবা জিজেকের বিশ্লেষণের অভাব কি আমরা বোধ করবো না? কীর্তি এভাবেই কিছু মানুষকে ‘অপরিহার্য নয়’-এর সীমা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই দেশে একজন বেগম জিয়া আমাদের প্রায় সবার জন্য প্রযোজ্য ‘কেউ অপরিহার্য নয়’ এর সীমা পেরিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকে অপরিহার্য করে তুলেছেন। এটা প্রমাণ করা খুব সহজ—একটা চরম কর্তৃত্ববাদী সরকার তার অনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ মনে করেছে বেগম জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রাখাকে। শুধু কারারুদ্ধ করে রাখাই যথেষ্ট হয়নি, একজন খালেদা জিয়া এরপরও এতই ভীতি ছড়ান যে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা এবং শরিক দলের চাটুকাররা ক্রমাগত বিষোদগার করেই যাচ্ছেন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। এতেই প্রমাণিত হয়, এই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের জন্য একজন বেগম খালেদা জিয়া কতটা অপরিহার্য।

আমরা নিশ্চয়ই এটা ভুলে যাইনি, স্বৈরাচারী এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান সরকারি দল নির্বাচিত সরকার হটিয়ে তার ক্ষমতা দখলকে সানন্দে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেছিল তারা অসুখী নন। আমরা ১৯৮৬ সালকেও ভুলে যাইনি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে স্বৈরাচারী এরশাদকে বৈধতা দিয়ে আরও অনেক দিন ক্ষমতায় রেখে দেওয়ায় তাদের যে চেষ্টা সেটি কাজ করেনি একজন খালেদা জিয়ার আপসহীন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কারণে। এরপর বর্তমান সরকারের ‘আন্দোলনের ফল’ এক এগারোর সরকারের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিদেশে চলে গেলেও, খালেদা জিয়া তাতে রাজি হননি। অসাংবিধানিক সরকারের বিরুদ্ধে আবার রুখে দাঁড়ান বেগম জিয়া, যেটা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফিরে আসতে সাহস জোগায়। জনগণের সামনে আবারও প্রমাণ হয়, বর্তমান বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একমাত্র প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার প্রতি স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদের ভীতি ছিল, আছে সব সময়ই। তাই রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী বা কর্তৃত্ববাদী শাসন চালিয়ে যাওয়ার পূর্বশর্তই হচ্ছে তাকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করা। বেগম জিয়ার এই চরিত্র এরশাদ জানতো, জানতো মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং জানে বর্তমান সরকারও। তাই মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়া আজ কারারুদ্ধ।
কীভাবে মিথ্যা অভিযোগে বেগম জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, সেটার খুঁটিনাটি তথ্য এই দেশের মানুষ জানে। সেই বিষয়ে তাই আর বিস্তারিত আলোচনা অপ্রয়োজনীয়। শুধু এটুকু বলি, একজন আইনজীবী হিসেবে আমি নিজে দুদকের মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত অভিযুক্তদের মামলায় কাজ করেছি এবং আপিল গ্রহণকালেই জামিন পেতে দেখেছি। স্থায়ী জামিন নিয়ে তাদের অনেকেই এখন বিদেশেও আছেন। এটা যদি হয় একজন সাধারণ অভিযুক্তের ক্ষেত্রে, তাহলে বেগম জিয়ার মতো একজন মানুষের ক্ষেত্রে কী হওয়ার কথা ছিল?

জামিন লাভের ক্ষেত্রে প্রধান যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়, তার মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো—ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এবং সামাজিক অবস্থান। আর যে বিষয় আদালত দেখে তা হলো—অভিযুক্তের পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা এবং সাক্ষীকে ভয়ভীতি দেখানো বা আলামত নষ্ট করার ভয় আছে কিনা। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আদালত যেকোনও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক জামিন দিতে পারেন। এই আশঙ্কাগুলোর কোনটি বেগম জিয়ার ক্ষেত্রে সত্য, সেটা বিচারের ভার আমি পাঠকদের ওপরই ছেড়ে দিলাম।

তাই আমার আইনের জ্ঞান, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বেগম জিয়ার মামলার মেরিট, তার শারীরিক অবস্থা, সামাজিক অবস্থান, বয়স, জেন্ডার সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তিনি তাৎক্ষণিক জামিন লাভের যোগ্য। জামিন পাওয়া তার অধিকার। আর সবকিছু বাদ দিলেও বর্তমানে তার যে শারীরিক অবস্থা, শুধু সেটাও যদি বিবেচনায় নিই, তাহলে আদালত যদি ন্যূনতম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতেন, তাহলে তাকে জামিন দিতে বাধ্য হতেন।

তার সাম্প্রতিক শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমাদের দলের মহাসচিব দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক বেশি খারাপ হয়েছে। তিনি এখন বিছানা থেকেই উঠতে পারছেন না। তাকে সবসময় দু’জন সাহায্য করতে হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, সম্প্রতি তার জিহ্বায় ক্ষত তৈরি হয়েছে। তিনি ভালোভাবে খেতে পারেন না; তীব্র দাঁতের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন। তার নতুন শারীরিক জটিলতা হিসেবে যুক্ত হয়েছে ডায়াবেটিস, যা একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন। সঙ্গে তার হাত-পায়ে আগের তীব্র ব্যথা তো আছেই। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থায় অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তিনি হয়তো আর কখনোই পুরোপুরি সুস্থ হবেন না।

গ্রেফতারের পর যখন আদালত থেকে তাকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছিল তখনও তিনি সুস্থ শরীরে হেঁটে গাড়িতে ওঠেন, তারপর ক্রমান্বয়েই তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। যেহেতু কারাগারে তিনি সম্পূর্ণ সরকারের হেফাজতে ছিলেন, সুতরাং তার স্বাস্থ্যের এই ক্রমাবনতির জন্য একমাত্র দায়ী করা যায় সরকারকে।

এটা একেবারেই স্পষ্ট, বেগম জিয়া ন্যূনতম প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও পাচ্ছেন না। শুরু থেকেই সরকার তার পছন্দের হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। কারা অন্তরীণ অবস্থায়ও চিকিৎসার খরচ নিজে বহন করার শর্তে ব্যক্তিগত পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার নজির অনেক আছে। এক এগারোর সরকারের সময় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল ও মোহাম্মদ নাসিমকে ল্যাবএইড হাসপাতালে আর শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও এই সুবিধা গ্রহণ করে স্কয়ার হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।

এমনকি বর্তমান অবস্থায় পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসার অনুমতিও কোনোভাবেই যথেষ্ট না। বেগম জিয়ার শরীর এখন এতটাই ভেঙে পড়েছে যে, যদি বেঁচে থাকতে হয় তাহলে চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্ত জীবনে ফিরে আসতেই হবে। আবারও বলছি, শুধু তার বর্তমান শারীরিক অবস্থাই তাকে জামিন দেওয়ার জন্য যথেষ্টের বেশি।

সরকারকে এভাবে দোষারোপ করতে দেখে সরকার এবং তার ‘উচ্ছিষ্টভোগী’ বুদ্ধিজীবীরা যে কুতর্ক করে, সেটা কেউ করতে চাইতে পারেন, যুক্তি দিতেই পারেন—বেগম জিয়ার জামিন তো আদালতের এখতিয়ার, এখানে সরকারের কিছুই করার নেই। মজার ব্যাপার হলো, এই দেশের অতি সাধারণ মানুষও জানে, দেশে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা বলে আদৌ কিছু বিরাজ করে না। এজন্যই এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কোনও অপরাধ ঘটলে আমরা দেখি ভুক্তভোগীর স্বজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান। এতে এটা প্রমাণিত হয়, যে বিচার একটা স্বতঃস্ফূর্ত ব্যাপার হওয়ার কথা, সেটাও এই দেশে চাইতে হয়। আরও কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হলো, বিচার চাইতে হয় নির্বাহী বিভাগের প্রধান প্রধানমন্ত্রীর কাছে। ওই মানুষগুলোও জানেন, বিচার বিভাগ বলে স্বাধীন কোনও প্রতিষ্ঠান নেই বাংলাদেশে, সবকিছুই আসলে সরকারের হাতে।

এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় একই ধরনের মামলা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও হয়েছিল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সেইসব মামলা হাইকোর্টে ‘খারিজ করানো’ হয়। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মে সেই মামালার আপিল করা হয়নি। কেন আপিল করা হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইনজীবী মিডিয়ায় জানান, দুদক থেকে তাকে আপিল করতে বলা হয়নি। সেই আপিল করা হলেও কী হতে পারতো, সেই বিষয়ে কথা না হয় না-ই বললাম। এদিকে বেগম জিয়ার মূল মামলা তো বটেই, এমনকি তার জামিন ঠেকানোর জন্য পর্যন্ত সরকার সর্বোচ্চ আদালতে ‘যুদ্ধ করে’ যাচ্ছে। এই সরকারের সময়ে এই দেশের বিচার বিভাগ, ‘All are equal but some are more equal than others’ উক্তিটির এক দুর্দান্ত প্রতিচ্ছবি।

সরকারের হাত থেকে নিম্ন আদালতকে মুক্ত করে প্রকৃত অর্থেই স্বাধীন করার চেষ্টার মাশুল দিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি জনাব এসকে সিনহা। শুধু যে তার নামে যে শুধু মামলা দেওয়া হয়েছে তা নয়, পরিস্থিতি তাকে ভিনদেশে অ্যাসাইলাম চাইতেও বাধ্য করেছে। এ ধরনের নজিরবিহীন ঘটনা দেশের নিম্ন থেকে সর্বোচ্চ সব আদালতকেই একটা স্পষ্ট বার্তা দেয়। এ প্রসঙ্গে আমরা স্মরণ করবো নিম্ন আদলতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতির নীতিমালা সংক্রান্ত শুনানিতে প্রধান বিচারপতির সেই বিখ্যাত উক্তি, ‘দেশে আইনের শাসন নেই’, ‘সরকার নিম্ন আদালত কব্জা করার পর উচ্চ আদালতের দিকেও হাত বাড়িয়েছে’।

বেগম জিয়ার জেলে থাকা মানে শুধু একজন ব্যক্তির জেলে থাকা না, তার জেলে থাকা মানে দেশের আপসহীন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রতীকে পরিণত হওয়া মানুষটির জেলে থাকা। তার জেলে থাকা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন করা আমাদের দেশটির সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মতো বিচার বিভাগও একেবারেই ভেঙে পড়েছে। এই রাষ্ট্র এখন কার্যত টোটালিটারিয়ান চেহারা নিয়েছে।

বেগম জিয়ার জেলে থাকা আসলে একটি উপসর্গ, যেটা আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভেঙে পড়াকেই প্রমাণ করে। তাই বেগম জিয়ার অধিকারের পক্ষে কথা বলা মানে আসলে আমাদের রাষ্ট্রটির কাঠামো টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে শামিল হওয়া। বেগম জিয়ার রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে যে কারো দ্বিমত থাকতেই পারে, তার কাজের সমালোচনাও থাকতে পারে যে কারো মনে। সেই দ্বিমত প্রকাশিত হোক, সমালোচনা হোক। কিন্তু তারপরেও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের তার মুক্তির সংগ্রামে যুক্ত হওয়া জরুরি। এই লড়াই শুধুমাত্র একটি বিশেষ দল বা মতাদর্শের মানুষের নয়।

আমাদের এটা বোঝা দরকার, এটা শুধু বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লড়াই না, এটা আসলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আর ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতে উপর্যুপরি রুদ্ধ হওয়া গণতন্ত্রকে মুক্ত করার সংগ্রাম, আইনের শাসন আর ন্যায়বিচার কায়েমের সংগ্রাম, নির্বাহী বিভাগের কড়াল থাবা থেকে বিচার বিভাগকে মুক্ত করার সংগ্রাম, রাষ্ট্রের মালিকানা গণমানুষের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার সংগ্রাম। তাই এই সংগ্রাম আপনার, আমার, আমাদের সবার।

লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট। জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য

    

 

/এসএএস/এমএমজে/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ