‘আমরা গত ৭ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী, প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সুযোগ্য সন্তান মাহবুব উর রহমান রুহেলকে জেতানোর জন্য অনেক অপকর্ম করেছি। আমরা আগামী ৮ তারিখ কোনও অপকর্ম ছাড়া ভোট কেন্দ্র খোলা রাখবো।’ সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়ায় এক কর্মী সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া এসব কথা বলেন।
মীরসরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমানের ঘোড়া মার্কার সমর্থনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এদিকে, একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য মীরসরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে সমাবেশে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রার্থী বলেছেন, “ভোটকেন্দ্রে আসবেন, যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন”– এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। যদি কেউ ভোট কেন্দ্র বন্ধ করার পাঁয়তারা করেন, একজন একাধিক ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন– আমরা ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে সেখানে বিক্ষোভ করবো। কেউ আপনাদের দিকে আঙুল দেখালে সে আঙুল ভেঙে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও অবস্থাতেই আর কোনও অপকর্ম করতে চাই না। ভোট নিয়ে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে– আজকে বিএনপি ভোটকেন্দ্রে যায় না, আওয়ামী লীগের লোকেরাও ভোটকেন্দ্রে যেতে চায় না। শেখ হাসিনা সেজন্য চেষ্টা করেন মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’
তিনি দলীয়ভাবে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কোনও দলীয় প্রতীক রাখেননি। দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দিতে তিনি বারণ করেছেন। তাই আমি বলতে চাই, মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে– মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের কোথাও কোনও ইউনিয়নে ও ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী বা দলের পক্ষে কাউকে প্রার্থী করার সুযোগ নেই। প্রত্যেকে আওয়ামী লীগ করেন। যেহেতু বিএনপির কোনও প্রার্থী নেই, তাই সৎ ও সুন্দরভাবে পছন্দের প্রার্থীকে আমরা ভোট দেবো।’
এ সময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেখ আতাউর রহমান (ঘোড়া), প্রচার সম্পাদক প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, বারইয়ারহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন ভিপি, দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আবু সুফিয়ান বিপ্লব, খইয়াছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা কালু কুমার দে, আবুল হোসেন, হিঙ্গুলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইফতেখার উদ্দিন পিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা এসএম সরোয়ার, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুল হক মাহফুজ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমরান হোসেন সোহেল, আওয়ামী লীগ নেতা এসএম সেলিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য চেয়ারম্যান পদে ৫ জন , ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমান ও কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী এনায়েত হোসেন নয়ন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী না দিলেও মীরসরাইয়ের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এনায়েত হোসেন নয়ন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাইফুল ইসলামকে (চশমা) সমর্থন দেওয়ার গুঞ্জন উঠলে মীরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রুপিং প্রকাশ্যে উঠে আসে।
