X
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
২৭ বৈশাখ ১৪৩১
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস আজ

বিপন্ন উপকূলের বন্যপ্রাণী, রক্ষায় নেই কার্যকরী উদ্যোগ

কাজী সাঈদ, কুয়াকাটা
০৩ মার্চ ২০২৪, ১১:১০আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪, ১১:১০

খাদ্য আর বাসস্থানের সংকট প্রকট হওয়ায় বিপন্ন হচ্ছে উপকূলের বহু প্রজাতির বন্যপ্রাণী। একটা সময় অহরহ বন্যপ্রাণীর দেখা মিললেও এখন সেই সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন বসন্তে সুমধুর কণ্ঠে কোকিলের ‍কুহুতান ধ্বনি শোনা যায় খুবই কম। পচা আর মরা কোনও প্রাণীকে খেতে শকুন আসে না। এমনকি শীত মৌসুমে আগের মতো অতিথি পাখিরাও আসছে না। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২-এর সর্বত্র সঠিক প্রয়োগ, সকলের অংশগ্রহণ ও মানুষের সচেতনতাই পারে বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে—এমনটাই বলছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠনের দায়িত্বশীলরা। তাদের মতে, নিষ্ঠুরভাবে বন উজাড়, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং পাখি শিকারিদের ফাঁদে উপকূল থেকে বন্যপ্রাণীদের আশঙ্কাজনকভাবে বিলুপ্তি ঘটেছে।

তথ্যমতে, ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনে ৩ মার্চকে বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানানো হয়। ২০১৪ সালে বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের প্রতি গণসচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রথম এ দিবস পালন করা হয়।

বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের প্রতি গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩ মার্চকে বন্যপ্রাণী দিবস ঘোষণা করা হয়

প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের গবেষণামতে, বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৩১টি। তবে এ সংস্থাটির দাবি, বাংলাদেশে ১৬০০-এর বেশি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। যাদের মধ্যে ৩৯০টি একেবারে বিলুপ্তির পথে।

মৌসুমি ফল রক্ষায় অনেকে আজকাল কারেন্ট জাল বিছিয়ে রাখে আর তাতে জড়িয়ে প্রাণ হারায় নিরীহ পাখিরা। কিছু মানুষ আছে, যাদের হাজার রকম খাবার বাদ দিয়ে নজর পড়ে বন্যপ্রাণীর দিকে। আর তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য ঘৃণিত ও আইনবহির্ভূত পেশা বেছে নিয়েছে কিছুসংখ্যক শিকারি। কিছু মানুষের আবার আছে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ সংগ্রহ করে শোপিস হিসেবে প্রদর্শন করার বদঅভ্যাস।

মৌসুমি ফল রক্ষায় অনেকে আজকাল কারেন্ট জাল বিছিয়ে রাখে

স্বেচ্ছাসেবী প্রাণিকল্যাণ ও পরিবেশবাদী সংগঠন অ্যানিম্যাল লাভার অব পটুয়াখালীর ডাটা কালেক্টর বায়েজিদ মুন্সি বলেন, ‘আমাদের উপকূলে একটা সময় বিপুল পরিমাণ বন্যপ্রাণী বসবাস করতো। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে মানুষের অসচেতনতা। তারা বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব সম্পর্কে জানে না। বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কারের কারণে শিয়ালের মাংসসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী হত্যা করে খাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না। ফলে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কৃষকদের অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।’

পরিবেশ ও প্রাণী নিয়ে কাজ করা সিনিয়র সংবাদকর্মী মেজবাহ উদ্দিন মান্নু বলেন, ‘বন উজাড়ের পাশাপাশি গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে বেশি বয়সের গাছ না থাকা এবং খাদ্যের অভাবে অস্তিত্ব সংকটে এসব বন্যপ্রাণী। সচেতনতা সৃষ্টি করে এসব প্রাণীদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে সবার।’

উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে

পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রতিবছরই কমছে বন্যপ্রাণী। তবে আমরা সচেতন হলে কমে আসবে বিলুপ্তির পরিমাণ।’

পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপবন সংরক্ষক) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আধুনিক নগরায়ণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আশঙ্কাজনক হারে বন্যপ্রাণীদের উপস্থিতি কমছে। বন হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল। আমরা সব সময় বন উজাড় বন্ধ করার চেষ্টা করছি।’

/কেএইচটি/
সম্পর্কিত
পাঁচ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন
মৎস্যঘের থেকে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কুমির উদ্ধার
বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
ভারতে পাচারের সময় আড়াই কেজি সাপের বিষ উদ্ধার
ভারতে পাচারের সময় আড়াই কেজি সাপের বিষ উদ্ধার
ইউক্রেনের খারকিভ দখলে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া
ইউক্রেনের খারকিভ দখলে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া
পাঁচ ‘বুবলী’ নিয়ে থানায় অপু!
পাঁচ ‘বুবলী’ নিয়ে থানায় অপু!
সাবিনা গোল করলেও জিততে কষ্ট হলো নাসরিনের
সাবিনা গোল করলেও জিততে কষ্ট হলো নাসরিনের
সর্বাধিক পঠিত
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
রাশিয়াকে ঠেকাতে আরও অস্ত্র চাইলেন জেলেনস্কি
রাশিয়াকে ঠেকাতে আরও অস্ত্র চাইলেন জেলেনস্কি
সাতক্ষীরায় আম পাড়া শুরু, ২৫০ কোটি টাকা বিক্রির আশা
সাতক্ষীরায় আম পাড়া শুরু, ২৫০ কোটি টাকা বিক্রির আশা
চীন বিষয়ে বিশেষজ্ঞকে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
চীন বিষয়ে বিশেষজ্ঞকে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র