ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মন্দিরের বৈদ্যুতিক বাতি চুরিতে বাধা দেওয়ায় চার জনকে পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তিন জনকে আটক করেছে।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করতে গেলেও বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল নাগাদ এ বিষয়ে থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ, অভিযোগ মন্দির কমিটির। তারা জানান, মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর এলাকার রাধানগরের শ্রী শ্রী রাধামাধব আখড়ায় বার্ষিক ছয় দিনব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন শুরু হয়েছে। বুধবার রাত ১২টার দিকে তিন যুবক আখড়া মন্দিরের সাজসজ্জার বৈদ্যুতিক বাতি ছিনিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। বিষয়টি নজরে এলে আখড়া মন্দিরে থাকা কয়েকজন ভক্ত বাধা দেন। একপর্যায়ে বাতি ছিনতাইয়ে জড়িত ওই যুবকেরা দৌড়ে পালাতে থাকে। এ সময় আখড়া মন্দিরের ভক্তরাও তাদের পিছু নেয়। এরই মধ্যে ওই যুবকেরা ফোন করে লোকজন জড়ো করে। আখড়া মন্দিরের ভক্তরা শান্তিনগর পৌঁছামাত্র তাদের ওপর হামলা হয়। হামলায় আপন চৌহান (২৫), বিশাল ঘোষ (২৫), শ্রেষ্ঠ ঘোষ (২২), দুর্জয় শীল (১৪) আহত হন।
তাৎক্ষণিকভাবে তারা আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। রাতেই পুলিশ রাধানগরের শান্ত নামে এক যুবকসহ তিন জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
রাধামাধব আখড়া কমিটির নির্বাহী সভাপতি চন্দন কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক অলক কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আখড়া মন্দিরের উৎসবের ইতিহাসে এই প্রথম পুলিশ ছিল না। আমরা পুলিশের জন্য থানায় আবেদনও করেছিলাম। তবে বুধবার রাতে পুলিশকে ঘটনা জানানোর পর তারা দ্রুতই তিন জনকে আটক করে। তবে বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে থানায় গেলে ওসি সাহেব মামলা নিতে গড়িমসি করেন। বলেন, মন্দিরের বিষয়টি মামলায় উল্লেখ করা যাবে না। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ওসির এমন আপত্তিতে আমরা অনীহা প্রকাশ করে অভিযোগ না দিয়েই থানা থেকে চলে আসি।’
আখাউড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল বাবু বলেন, ‘মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি পুরো ঘটনাটি জেনেছি। দুর্বৃত্তদের হামলা এবং পুলিশের মামলা না নেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’ এ সময় তিনি দ্রুত মামলা নথিভুক্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মামলা নিতে না করিনি। আমি বলেছি, আহতদের কারও অভিভাবক অভিযোগ দিলে ন্যায়বিচার পাবে।’
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’