নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের পর্যটনকেন্দ্র রেগুলেটর এলাকায় পর্যটকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ফেনীর সোনাগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তসলিম হুসাইনের বিরুদ্ধে। তার মারধরে আহত হয়েছেন আলী আজগর (৩৬) তার ভাই পুলিশ কনস্টেবল ওমর ফারুক (৩১) ও আজগরের স্ত্রীসহ (২৭) বেশ কয়েকজন।
এ ঘটনায় আলী আজগর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে আজগরের খারাপ আচরণের কারণে ভুল-বোঝাবুঝি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের কিছু ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
এর আগে গত শুক্রবার (ঈদের পরদিন) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুছাপুর রেগুলেটর সড়কে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা সবাই নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
আলী আজগর অভিযোগ করে জানান, ঈদে স্ত্রী, দুই সন্তান, ভাই ওমর ফারুক ও তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে মুছাপুর ক্লোজারে ঘুরতে যান আজগর। ঘোরাঘুরি শেষে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেল করে ফিরছিলেন তিনি। কিছু পথ আসার পর বিপরীত দিক থেকে একটি পুলিশের গাড়ি আসে। এর মধ্যেই সড়কের দুপাশে জ্যামের সৃষ্টি হয়। তখন গাড়ি থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) তসলিম হুসাইন একটি লাঠি নিয়ে নেমে আসেন। নেমেই লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ শুরু করেন।
আজগর বলেন, আমি (আজগর) তাকে গালাগালি করতে নিষেধ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কলার ধরে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। আমাকে বাঁচাতে আমার স্ত্রী ও পুলিশ কনেস্টবল ভাই ওমর ফারুক এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করেন তিনি। একপর্যায়ে গাড়িতে থাকা তার পাঁচ-ছয় জন পুরুষ আত্মীয় এসে আমাদের সবাইকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয় এবং আমার ভাইয়ের হাত মচকে যায়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করলে আমার চলে আসি এবং কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। সেখানে এক দিন চিকিৎসা শেষে আমার বাড়িতে ফিরে যাই। একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক সাধারণ মানুষের প্রতি এমন নির্মমতার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেবো।
বিষয়টি ভুল-বোঝাবুঝি দাবি করে এএসপি তসলিম হুসাইন বলেন, ‘ওই দিন আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমি মুছাপুরে ঘুরতে আসি। সড়কের জ্যাম থাকায় আমি প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে চেয়েছি। কিন্তু এ সময় সড়কের উল্টো পাশে একটি মোটরসাইকেলে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আজগর। আমি তাকে সরতে বললে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে আমার ভাইসহ অন্যরা নেমে আসে এবং আজগরের ভাই ফারুক আমাকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিলে আমরা কথা বলি। তর্কবির্তকের এক পর্যায়ে আজগর আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে শুরু করলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আমি ও ওমর ফারুক এগিয়ে গিয়ে তাদের শান্ত করি।
তবে কাউকে মারেননি বলে দাবি করেন এএসপি। বিষয়টি তাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে ফেনী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ ফেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
