রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট সড়কের জিরো পয়েন্টে পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে তল্লাশিকালে সুমন খন্দকার (২১) নামের এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ। গ্রেফতার তরুণ উপজেলার দৌলতদিয়া শাহাদৎ মেম্বার পাড়ার সেকেন খন্দকারের ছেলে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন পালিয়ে গেছে। শনিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (১৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস জানান, গ্রেফতার সুমন খন্দকারসহ একটি চক্র প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে তল্লাশি চালাতো। এ সময় সুযোগ বুঝে চক্রটি গুরুত্বপূর্ণ মালামালসহ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতো। চক্রের ১০-১২ সদস্য রয়েছে। অন্যতম সদস্য সুমন খন্দকার। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।
ওসি জানান, গত শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে থানার এএসআই অনুপ চন্দ্র সরকারসহ পুলিশের একটি দল ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ডিউটিতে ছিলেন। তারা দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় অবস্থানকালে জানতে পারেন, ফেরিঘাট সড়কের জিরো পয়েন্টে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী গাড়ি থামিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। ওই এলাকায় কোনও পুলিশ নেই নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের সন্দেহ হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। এ সময় দেখতে পান, গাড়ির যাত্রী মোহাম্মদ মনির শেখ (৩০) ও আমির হামজা মীর মালত (২২) নামের ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা এলাকার দুই জনকে কয়েকজন ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের মোবাইল টিম তাদের পরিচয় জানতে চাইলে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। তারা কোন থানায় কর্মরত আছেন বিপি নম্বর কত জানতে চাইলে কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যান। তবে হাতেনাতে সুমন খন্দকারকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে নিজেকে ভুয়া পুলিশ বলে স্বীকার করে। পরে সুমনের সঙ্গে থাকা পাঁচ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেন এবং অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের কথাও জানান।
পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সুমন খন্দকারের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর দ্রুত বিচার আইনে একটি এবং ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর পেনাল কোড-১৮৬০ এর ধারায় আরেকটি মামলা রয়েছে। তার সঙ্গে থাকা পলাতক অপর পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় দ্রুত বিচার আইনেসহ একাধিক ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদক মামলা রয়েছে।
ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রবিবার রাতেই গ্রেফতার সুমন খন্দকারসহ পাঁচ জনকে চিহ্নিত এবং অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ধারা-১৭০/৩৪ পেনাল কোড মামলা (নং-২১) করা হয়েছে। সুমনকে সোমবার দুপুরে রাজবাড়ীর মুখ্য বিচারিক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।