ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) চাল আত্মসাতের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে মোংলা উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও পাঁচ দিনেও জবাব দেননি শাহিনুর।
এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে ইউএনও বলেন, ‘তাকে সোমবার এ বিষয়ে বলা হয়েছে। তিনি (শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান) আজকের (৩০ এপ্রিল) মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেবেন বলেছেন। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হলে শাহিনুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। পরে শিক্ষা অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের এক কর্মচারী জানিয়েছেন, স্যার ঠিকমতো অফিসে আসেন না। সপ্তাহে দু’তিন দিন অফিস করেন। আমাদের নাম বলবেন না, তাহলে চাকরি খেয়ে দেবে।
এদিকে, খোলাবাজারে বিক্রির ওএমএসের চাল আত্মসাতের ঘটনায় উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার রাজিব মৃধার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মোংলা থানায় যেকোনো সময় তার বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানালেন মোংলা সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল হক।
তিনি বলেন, ‘সোমবার মামলা দায়েরের জন্য থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু এজাহারে কিছু সংশোধন আনায় মামলাটি করা যায়নি। আজ সংশোধন করে ডিলার রাজিব মৃধার বিরুদ্ধে মামলার এজাহার দেওয়া হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৪ এপ্রিল মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বড়ইতলা গ্রামে সুবিধাভোগীদের ৩০ কেজির বস্তায় চার কেজি চাল কম দিচ্ছিলেন ডিলার। খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন ইউএনও নিশাত তামান্না। জব্দ করেন ওজনে কম দেওয়া ১৫-২০ বস্তা সরকারি চাল। এ সময় ডিলার রাজিব মৃধাকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। ওই এলাকায় চাল বিতরণে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে থাকার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে উপস্থিত ছিলেন না।
পরে ওএমএস চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ডিলার রাজিব মৃধার বিরুদ্ধে সরকারি চাল আত্মসাতের মামলা করার সুপারিশ করে উপজেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দায়িত্বে পালনে অবহেলার কারণে শাহিনুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।