X
বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১
রংপুর অঞ্চলের ডিলারদের অভিযোগ

ব্যাপক চাহিদা তবুও বন্ধ করা হয়েছে পণ্য সরবরাহ

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৬ জুন ২০১৬, ১৫:২৭আপডেট : ২৮ জুন ২০১৬, ১৪:১৪

রংপুর টিসিবি’র আঞ্চলিক কার্যালয়ের তথ্যের সঙ্গে বিভাগের আট জেলার স্থানীয় পর্যায় থেকে পাওয়া তথ্যে ব্যাপক গড়মিল পাওয়া গেছে। ঠাকুরগাঁও জেলার কোনও ডিলারই এবার পণ্য ওঠাননি রমজান মাসে।  আর যারা উঠিয়েছেন তাদের অভিযোগ, এ অঞ্চলে নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা বেশি। মাঠে তাদের কাছে টিসিবি’র পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকায় আরও বেশি পণ্য বরাদ্দের আবেদন করেছিলেন তারা। কিন্তু বরাদ্দ বাড়ানো দূরে থাক হুটহাট করেই তাদের বলে দেওয়া হয়েছে, আর পণ্য বরাদ্দ সরবরাহ সম্ভব নয়। তাই, এ অঞ্চলের মানুষ টিসিবি’র পণ্য ক্রয়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।  জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য থেকে প্রাপ্ত চিত্রটি নিম্নরূপ:

টিসিবি রংপুর

রংপুর

জেলা প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদলকে রংপুরের টিসিবি’র আঞ্চলিক কর্মকর্তা মিসকাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, রংপুর অঞ্চলে টিসিবি’র মোট ডিলারের সংখ্যা ৩৬৬ জন। তবে সরবরাহ কম থাকায় এবার রমজানে রংপুর শহরে প্রতিদিন ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এবং অঞ্চলভুক্ত অন্য জেলা শহরগুলোতে ২টি করে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করা হয়। ২৯ মে থেকে ২২ জুন পর্যন্ত এ কার্যকম চলে বলেও জানান তিনি।  আর বরাদ্দ কম থাকায় এসব ‘ট্রাক সেল’ –এর পণ্য একেকদিন দেওয়া হয় একেক ডিলারকে। তবে ডিলারের আর্থিক সামর্থ্য এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিনের বরাদ্দের পরিমাণ এক রকম ছিল বলেও জানান তিনি।  এ কর্মসূচি রমজানে আর চলবে কিনা সে বিষয়ে কোনও নির্দেশনা তার কাছে নেই বলেও জানিয়েছেন মিসকাদুল ইসলাম।

তবে সরেজমিনে গিয়ে ডিলারদের সঙ্গে কথা বললে অনেক ডিলার টিসিবি পণ্য কালোবাজারি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। ক্রেতাদের অনেকেও এমন সন্দেহ করেছেন, যদিও এবিষয়ে কেউ তথ্য প্রমাণ উপস্থিত করতে পারেননি।

তবে রংপুরের আওতাভুক্ত দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও জেলায় টিসিবি’র কোন পণ্য বিক্রি হয়নি বলে জানা গেছে।

রংপুর শহরের টিসিবি’র অনুমোদিত ডিলার ফারুখ আহাম্মেদ জানান, একজন ডিলারকে ৪শ’ কেজি বুট, আড়াই শ’ কেজি চিনি ডাল দেড়শ কেজি এবং ২শ’ লিটার সয়াবিন তেল দেওয়া হচ্ছে।  পরিমাণ খুবই কম হওয়ায় এবং রমজান মাসে চাহিদা বেশি হওয়ায় আসার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, ডিলাররা তাদের জন্য বরাদ্দ করা পণ্যের অর্ধেক আগেই কালো বাজারে বিক্রি করে দিয়ে বাকি অর্ধেক পণ্য নিয়ে আসছেন। ফলে সাধারণ মানুষ তাদের পণ্য পাচ্ছে না।

এদিকে রংপুর প্রেসক্লাবের কাছে যে ডিলার পণ্য বিক্রি করেন তাকে পুরো বরাদ্দ করা মালামাল নিয়ে কখনই আসতে দেখা যায়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শী চাকরিজীবী আবুল হোসেন , গণমাধ্যম কর্মী সাকিল আহাম্মেদ , মানিক সরকারসহ অনেকেই অভিযোগ করেন। তবে ডিলাররা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

দিনাজপুরে পণ্যের সরবরাহ না থাকায় ৮ জুন থেকে বন্ধ হওয়া একটি টিসিবি ডিলারের দোকান

দিনাজপুর

দিনাজপুর প্রতিনিধি বিপুল সরকার সানি জানান,  জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখা সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ৫৫ জন টিসিবির ডিলার রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ২টি ডিলার প্রতিষ্ঠান টিসিবির পণ্য উঠিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, দিনাজপুর সদর উপজেলার কানাই স্টোর ও পার্বতীপুর উপজেলার লতা স্টোর। কিন্তু তারাও এখন টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন চাহিদা মাফিক পণ্য না পাওয়ায়। এদিকে গাড়িতে করে টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম দিনাজপুর জেলা শহরে মাত্র ৪ দিন পরিচালনা করেই বন্ধ হয়ে গেছে। 

পার্বতীপুর উপজেলার টিসিবির  ডিলার লতা স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী মোজাফফর হোসেন জানান, রংপুর থেকে চাহিদা মাফিক পণ্য না পাওয়ার কারণে গত ৮ জুন থেকেই তার পণ্য বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। তারা আরও জানান, টিসিবির  পণ্যের মান খুবই খারাপ। বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ডিলাররা পণ্য ওঠাননি।

কুড়িগ্রাম

জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলায় টিসিবি ডিলারের সংখ্যা ৪০ জন। রাজিবপুরে ২ (একজন পরে বাতিল করেছেন), রৌমারীতে ৯ জন, নাগেশ্বরীতে ৬ জন, চিলমারীতে  ৪ জন, ভূরুঙ্গামারীতে ৪ জন, উলিপুর ৩ জন, রাজারহাটতে ৩ জন ও ফুলবাড়ীতে ৫ জন ডিলার রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯ জুনের মধ্যে মাত্র দুইজন পণ্য তুলেছেন।

জেলা সদ‌রের ফখরুল আহসান শুভ না‌মের এক ডিলার পণ্য ওঠানোর চি‌ঠি পে‌লেও শেষ পর্যন্ত পণ্য ওঠাননি।  ত‌বে এই ডিলা‌রের ভাষ্য ম‌তে টি‌সিবি’র প‌ণ্যের প্র‌তি মানু‌ষের আগ্রহ নেই। এর কারণ হি‌সে‌বে তি‌নি জানান, নিম্নমা‌নের পণ্য মানুষ কিন‌তে চায় না। শুধুমাত্র সয়া‌বিন তেল ছাড়া টি‌সিবি’র অন্যান্য প‌ণ্যের মান অত্যন্ত খারাপ।

নাগেশ্বরীর ফারাজী ট্রেডার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী মো. আবু তাহের জানান, আমি রংপুর গিয়েছিলাম টিসিবির পণ্য ওঠানোর জন্য। কিন্তু চিনির রং ও মান দেখে আমি হতাশ হয়ে আর পণ্য ওঠাইনি। প্রতিটি পণ্যের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। ‘রংপুর থেকে পরিবহন ভাড়া করে টিসিবির পণ্য নিয়ে এসে আমরা লাভের মুখ দেখি না। আর গ্রাম পর্যায়ে স্টোরে এসে মানুষ এসব পণ্য কিনতে চায় না।  টিসিবি যে মূল্যে আমাদের পণ্য সরবরাহ করে তাতে গাড়িতে করে বিক্রি করাও সম্ভব নয়।  এজন্য নাগেশ্বরীর অন্য ৫ জন ডিলার লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং আমিও আগামী বছর লাইসেন্স বাতিল করব।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ

নীলফামারী

জেলা প্রতিনিধি তৈয়ব আলী সরকার জানিয়েছেন, নীলফামারীতে টিসিবি’র অনুমোদিত ডিলারের সংখ্যা ২৪ জন। এদের মধ্যে নীলফামারী সদরে ৫ জন, জলঢাকায় ৩ জন, ডিমলায় ৩ জন, কিশোরগঞ্জে ৭ জন, ডোমারে ৪ জন ও সৈয়দপুরে ২ জন ডিলার রয়েছেন। নীলফামারী সদরে ৩১ মে পর্যন্ত দুই দফায় পণ্য তুলে ৭ জুন টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হয়। তবে ৮ জুন হঠাৎ রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিপো তাদের পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

নীলফামারী সদরের টিসিবির ডিলার সত্যেন্দ্রনাথ রায় ও রুহুল আমিন চুন্নু বলেন, গত ৩১ মে পর্যন্ত আমরা দুই দফায় পণ্য তুলে ৭ জুন পর্যন্ত বাজারে বিক্রি করেছি। ৮ জুন রংপুর ডিপো থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা মালামাল তুলতে পারছি না।

নীলফামারীতে টিসিবির পণ্য বিক্রি

ডিলার ও বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিসিবির ছোলা প্রতি কেজির মূল্য ৭০ টাকা, চিনি ৪৮ টাকা, মসুর ডাল ৯০ টাকা ও ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ৪০০ টাকা ।

অপরদিকে, বাজারে ছোলা ৮৬ থেকে ৯০ টাকা, চিনি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, মসুর ডাল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও সয়াবিন তেল ৪৬০ থেকে ৪৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নীলফামারী চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি প্রকৌশলী এসএম শফিকুল ইসলাম ডাবলু, বলেন, মাহে রমজানে টিসিবির পণ্য সরবারহ বন্ধ থাকায় ক্রেতা সাধারণ দুর্ভোগে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা রমজান মাসে একচেটিয়া বাজার গড়ে তুলছে। যা বাজারে যতেষ্ট প্রভাব ফেলছে। টিসিবির পণ্য বাজারে থাকলে আরও সাশ্রয় মুল্যে ক্রেতাদের সরবারহ করা যেত এবং বাজার মূল্য আরও নিয়ন্ত্রণে থাকত।

পঞ্চগড়

জেলা প্রতিনিধি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ জানিয়েছেন, পঞ্চগড় জেলায় টিসিবির মোট ডিলারের সংখ্যা ১৭ জন। এদেরমধ্যে বোদা উপজেলায় ৩ জন, আটোয়ারী উপজেলায় ৫ জন, দেবীগঞ্জ উপজেলায় ৪ জন, তেতুলিয়া উপজেলায় ১ জন এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ৪ জন। জেলার পাঁচ উপজেলার একজন ডিলারও টিসিবির কোনও পণ্য ওঠাননি।

টিসিবির ডিলার কায়সার হামিদ প্রধান সজীব ও মো. সাইফুল ইসলাম জানান, টিসিবির পণ্য সংগ্রহে ব্যাপক ঝামেলা পোহাতে হয়। আগাম টাকা দিতে হয় তারপরও ঠিকমত পণ্য পাওয়া যায় না। এছাড়া রংপুর থেকে পণ্য আনতে হয়। সেখানে অনেরক হয়রানির শিকার হতে হয়। এ পণ্য আছে তো ও পণ্য নেই। তারপরও অল্প পরিমাণ (১ টন) পণ্য আনতে ট্রাক ভাড়া করতে হয়।

টিসিবির ডিলার আব্দুল হান্নান শেখ জানান, টিসিবির পণ্য বিক্রি করে তেমন লাভ হয় না। অনেক কষ্ট করতে হয়। টিসিবি কর্তৃপক্ষের হয়রানি আর ভোগান্তির জন্য আমি ডিলারশিপ থেকে প্রত্যাহারের আবেদন করেছি।

পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুজ্জামান শাহানশাহ জানান, পঞ্চগড় জেলায় সকল পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকায় ডিলাররা পণ্য উঠিয়েননি। অস্বাভাবিক মূল্য হলে হয়ত টিসিবির পণ্যের চাহিদা থাকতো।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ডিলাররা পণ্য ওঠাননি তাহলে ডিলার হয়েছেন কেন? বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।

রংপুর বিভাগের জেলাভিত্তিক টিসিবি ডিলার ও তাদের কার্যক্রম

জেলা

ডিলার সংখ্যা

পণ্য তুলেছেন

পণ্য তোলেননি

দিনাজপুর

৫৫

৫৩

কুড়িগ্রাম

৪০

৩৮

নীলফামারী

২৪

২২

পঞ্চগড়

১৭

১৭

রংপুর

তথ্য পাওয়া যায়নি, নগরীর ৫ স্থানে বিক্রি হয়

 

 

গাইবান্ধা

৫৬

৫১

লালমনিরহাট

২৬

২০

ঠাকুরগাঁও

৫৫

৫৫

 

গাইবান্ধা

জেলা প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম রেজা জানিয়েছেন, জেলায় মোট ডিলারের সংখ্যা ৫৬ জন। এরমধ্যে সাদুল্লাপুর উপজেলায় ৬ জন, গাইবান্ধা সদরে ৫ জন, গোবিন্দগঞ্জে ১২ জন, পলাশবাড়িতে ১২ জন, সুন্দরগঞ্জে ১৩ জন, সাঘাটায় ৪ জন ও ফুলছড়িতে ৪ জন ডিলার রয়েছেন। শুধু মাত্র মাত্র সদরের ৫ জন ডিলার প্রথম কিস্তিতে টিসিবির  পণ্য উঠিয়েছেন। বাকি ৫১ জন পণ্য ওঠাননি।

গাইবান্ধা সদরের ডিলার মো. আলম জানান, প্রথম কোটা মাল দেওয়ার পর গাইবান্ধার বাজারের যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে টিসিবি।

গাইবান্ধা সদরের হাট দাড়িয়াপুর এর টিসিবির ডিলার এনামুল হক জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টিসিবির পণ্যের গুণগত মান ভালো থাকে না। এছাড়া হটাৎ টিসিবি থেকে সরবরাহকৃত কোনও পণ্যের বাজার দর স্থানীয় বাজারে কমে গেলেও টিসিবি তার বাজার দর সমন্বয় না করার কারণে ডিলাররা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন।  তিনি আরও জানান, রংপুর থেকে টিসিবির পণ্য ওঠাতে হয়।

গাইবান্ধা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি শাহজাদা আনোয়ারুল কাদির জানান, জেলায় টিসিবির ডিলারদের ওপর প্রশাসনের তেমন কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ডিলাররা পণ্য উঠিয়ে কখন কোথায় কিভাবে বিক্রি করে তা সাধারণ ক্রেতা তো দূরের কথা প্রশাসনই জানে না।

লালমনিরহাট

জেলা প্রতিনিধি মোয়াজ্জেম হোসেন জানিয়েছেন, লালমনিরহাট জেলায় টিসিবির ডিলার মোট ২৬ জন। এদের মধ্যে মাত্র ৬ জন টিসিবির বরাদ্দ করা পণ্য উত্তোলন করলেও ২০জন ডিলার পণ্য ওঠাননি। গত ২৯ মে হতে গত ৭ জুন পর্যন্ত এই ৬ জন ডিলার পণ্য উঠিয়েছেন।

ডিলার কাজল হোসেন বলেন, পণ্য ভালো ছিল। ক্রেতাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু হঠাৎ পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।  তার অভিযোগ, মনিটরিং না থাকায় টিসিবি যা ইচ্ছে তাই করে।  তাছাড়া জেলা শহরে টিসিবি’র অফিস ও গোডাউন থাকা দরকার। 

ডিলার মালেক হোসেন বলেন, গত বছর লোকসান হয়েছিল। তাই এবার প্রথমে মালামাল উঠাইনি। কিন্তু এবার লাভ ছিল কিন্তু যখন মালামাল উঠাতে গিয়েছিলাম তখন বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। রংপুর তাজহাট হতে পণ্য উঠাতে হয়। এবারের পণ্য ভালো ছিল তাই লোকসান ছিল না। ক্রেতাদের পছন্দ ভালোমানের ছোলা, চিনি, ভালো খেজুর ও বোতলজাত সয়াবিন তেল চাহিদা বেশি।

লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি শেখ আব্দুল হামিদ বাবু বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিন্তা ভাবনার কারণে টিসিবি ভোক্তা সাধারণের মাঝে পরিচিতিই পায়নি। তবে সরকারি টিসিবিকে কার্যকর করতে হলে দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং গ্রহণযোগ্য লোককে ডিলার নিয়োগ করতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষ তথা বাজারে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না টিসিবি।

ঠাকুরগাঁও

জেলা প্রতিনিধি জাকির মুস্তাফিজ মিলু জানিয়েছেন, রংপুর টিসিবির  বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র ও ঠাকুরগাঁওয়ে টিসিবির  কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের নেজারত ডিপুটি কালেক্টর আব্দুল মোমিনের তথ্যমতে জেলায় মোট ৫৫ জন টিসিবি ডিলার রয়েছেন। এর মধ্যে সদরে ৫ জন , পীরগঞ্জ উপজেলায় ৮ , রাণীশংকৈল উপজেলায় ৭ , রুহিয়া থানায় ১ , বালিয়াডাঙ্গীতে ৩ ও হরিপুর উপজেলায় ১ জন ডিলার।

পীরগঞ্জ উপজেলার ডিলার মহসিন আলী জানান প্রত্যেক ঈদে রোজার ১ সপ্তাহ আগে থেকে টিসিবির  পণ্য বিক্রি শুরু হলেও এ বছর রোজার মাঝামাঝি সময়েও কোনও খবর বা এ সংক্রান্ত কোনও চিঠি তারা পাননি।

রাণীশংকৈল উপজেলার ডিলার মঞ্জুর আলম বলেন, সরকার যদি মনে করেন , তবে এ সময়েও একটা বরাদ্দ দিতে পারেন । গত বছরে টিসিবির  কিছু পণ্যের বাজার দরের চেয়ে বেশি দাম থাকায় রাণীশংকৈলে তারা বরাদ্দ উত্তোলন ও ব্যবসা করতে পারেননি এ কথা উল্লেখ করে তিনি জানান এ বছর ব্যবসা হতে পারতো তবে তারা কোনও বিভাগীয় চিঠি বা বরাদ্দের খবর পাননি । ডিলাররা জানান, রংপুর বিভাগীয় সদরেই শুধু টিসিবির  অফিস আছে তাই জেলা বা উপজেলা থেকে যোগাযোগটা কঠিন হয়ে পড়ে। 

নেজারত ডেপুটি কালেক্টর ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল মোমিন জানান , টিসিবি মালামাল বিক্রির মনিটরিং করার দায়িত্ব জেলা প্রশাসন পালন করে থাকে। তবে এবার এখন পর্যন্ত কোনও চিঠি তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে পাননি বলে জানান।

/এইচকে/টিএন/

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ:

রোজায় ১৮ জেলায় পৌঁছায়নি টিসিবি’র পণ্য

চট্টগ্রামের ৬ জেলার মানুষ পাননি টিসিবি’র কোনও পণ্য

খুলনা অঞ্চলে পণ্য তুলেছেন মাত্র ২৩ শতাংশ ডিলার, দেওয়া হয়নি তেল-খেজুর

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নারিনকে ছাপিয়ে বাটলার ঝড়ে রাজস্থানের অবিশ্বাস্য জয়
নারিনকে ছাপিয়ে বাটলার ঝড়ে রাজস্থানের অবিশ্বাস্য জয়
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ
অপরাধে জড়িয়ে পড়া শিশু-কিশোরদের সংশোধনের উপায় কী
অপরাধে জড়িয়ে পড়া শিশু-কিশোরদের সংশোধনের উপায় কী
সর্বাধিক পঠিত
ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন: সবাই সব জেনেও ‘চুপ’
ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন: সবাই সব জেনেও ‘চুপ’
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ১৩ জনের
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ১৩ জনের
উৎসব থমকে যাচ্ছে ‘রূপান্তর’ বিতর্কে, কিন্তু কেন
উৎসব থমকে যাচ্ছে ‘রূপান্তর’ বিতর্কে, কিন্তু কেন
চুরি ও ভেজাল প্রতিরোধে ট্যাংক লরিতে নতুন ব্যবস্থা আসছে
চুরি ও ভেজাল প্রতিরোধে ট্যাংক লরিতে নতুন ব্যবস্থা আসছে
প্রকৃতির লীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের ভিড়
প্রকৃতির লীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের ভিড়