X
রবিবার, ১২ মে ২০২৪
২৯ বৈশাখ ১৪৩১
নিখোঁজ হওয়ার আগে বাবাকে তামিমের শেষ বার্তা

‘আমার লগ ছাড়ি দেও, আমি আল্লাহর নামে আছি’

সিরাজুল ইসলাম, সিলেট
২১ জুলাই ২০১৬, ১০:৫৪আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৬, ১৪:৩৫

তামিম আহমদ চৌধুরী ‘আমার লগ (সঙ্গ) ছাড়ি দেও, আমি আল্লাহর নামে আছি’ — সন্দেহভাজন জঙ্গি তামিম আহমদ চৌধুরী পাঁচ বছর আগে তার কানাডা প্রবাসী বাবাকে এমনটাই জানিয়েছেন। এরপর থেকে তামিমের সঙ্গে  বাবা-মায়ের কোনও যোগাযোগ নেই। এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজারের দুবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

চেয়ারম্যান আরও জানান, তামিমের চাচাতো ভাইদের মধ্যে ২/১ জন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে। তবে, এদের সঙ্গে তামিমের যোগাযোগ আছে কিনা সেটা তার জানা নেই বলে জানান চেয়ারম্যান।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সম্প্রতি নিখোঁজ যে ২৬২ জন জঙ্গির তালিকা প্রকাশ করেছে-তাতে বিয়ানীবাজার উপজেলার বড়গ্রামের তামিম আহমদ চৌধুরীর নামও রয়েছে। গ্রামটি বাংলাদেশ সীমান্তের শেষ প্রান্তে অবস্থিত।

তামিম কবে থেকে নিখোঁজ, এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানা যায়নি। তবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানিয়েছে তার পাসপোর্ট নম্বর-এএফ-২৮৩৭০৭৬ ইস্যু-০৪/০৮/২০১৩, মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ:  ০৩/০৮/২০১৬ পুরাতন পাসপোর্ট নং- এল ০৬৩৩৪৭৮ জম্ম নিবন্ধন নং: ১৯৮৬০০৯১২৪১০০১৩৪২।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবের আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে তথ্য পেয়ে তামিমের বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েছেন পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার তামিমের বাড়িও পরিদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু তামিমের ব্যাপারে নিকটাত্মীয়, এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি কেউ কোনও তথ্য দিতে পারছেন না।

বিয়ানীবাজার থানা পুলিশসহ স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, তামিমের পিতা শফিকুর রহমান চৌধুরী ওরফে সোনা মিয়া চট্টগ্রাম শিপইয়ার্ডে চাকরি করতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। এরপর তিনি সেখানে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে পরিবারের সঙ্গে সোনা মিয়ার যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। 

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, কানাডায় যাওয়ার পর থেকে তামিমের বাবার সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ কম। এ কারণে কেউই তাদের কানাডার ঠিকানাও দিতে পারছেন না। এ প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তামিম ও তার পরিবার সম্পর্কে পরিবারের সদস্যদের দেওয়া বক্তব্যেও গরমিল রয়েছে। বিষয়টির প্রতি নজরদারী অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান ওসি।

তামিমের চাচাতো ভাই স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম আহমদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘তামিম ভাই আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়। সম্ভবত ১৯৯৫ সালে তিনি একবার গ্রামের বাড়িতে এলে একবার দেখা হয়। তবে আমি ছিলাম অনেক ছোট। তখন তামিম ভাইয়ের বয়স ছিল আনুমানিক ১৪-১৫ বছর। এরপর থেকে আর তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।’

তামিমের আরেক চাচাতো ভাই তাজিন আহমদ চৌধুরী বিয়ানীবাজারের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ২০০১ সালে তারা স্বপরিবারে বাংলাদেশে এলেও গ্রামের বাড়িতে একবারের জন্যও আসেননি। সিলেট নগরীতে বাসা ভাড়া করে প্রায় তিন মাস থাকার পর তারা আবার ফিরে যান কানাডায়। তবে বাংলা ট্রিবিউনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানার জন্য তাজিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

স্বজনরা জানান, ব্যক্তিগত জীবনে তামিম বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক। তারা তিন ভাই ও এক বোন। ফেঞ্চুগঞ্জের নানা বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে, নানা বাড়ির ঠিকানা জানাতে পারেননি তার চাচাতো ভাই ফাহিম।

আরও পড়ুন-

টঙ্গীতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে র‌্যাবের অভিযান, জেএমবি'র দক্ষিণাঞ্চল প্রধানসহ ৪ জঙ্গি আটক

জঙ্গি হামলার ঝুঁকিমুক্ত নয় মসজিদ-মাদ্রাসা-দরগা

নিখোঁজ তরুণদের নিয়ে চুপ থাকার পরামর্শ জঙ্গি পাতায়!

/এইচকে/এফএস/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নিজ্জার হত্যায় আরও এক ভারতীয় কানাডায় গ্রেফতার
নিজ্জার হত্যায় আরও এক ভারতীয় কানাডায় গ্রেফতার
মায়েরা নিজের জন্য সময় বের করবেন কীভাবে?
মায়েরা নিজের জন্য সময় বের করবেন কীভাবে?
প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসি’র ফল হস্তান্তর
প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসি’র ফল হস্তান্তর
ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধে প্রাণ গেলো কলেজছাত্রের
ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধে প্রাণ গেলো কলেজছাত্রের
সর্বাধিক পঠিত
ইএফডিতে নজর দিয়ে হিরো হতে পারেন এনবিআরের চেয়ারম্যান
ইএফডিতে নজর দিয়ে হিরো হতে পারেন এনবিআরের চেয়ারম্যান
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
মান ভাঙলো মিমির, এলো ‘তুফান’র দ্বৈত ঝলক
মান ভাঙলো মিমির, এলো ‘তুফান’র দ্বৈত ঝলক
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
সোনার দাম আরও বাড়লো
সোনার দাম আরও বাড়লো