ভারত থেকে বন্যার পানিতে বাংলাদেশে ভেসে আসা হাতিটি হার্ট অ্যাটকে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্য ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভ্যাটেরেনারি সার্জন ডা. মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি জানান, অতিরিক্ত গরমে ও পানিশূন্যতায় ‘বঙ্গ বাহাদুর’ নামের এই হাতিটি হার্ট অ্যাটাক করে। আজ মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামেই হাতিটির ময়নাতদন্ত হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে মারা যায় হাতিটি। অতিরিক্ত চেতনানাশক ব্যবহার ও চিকিৎসা না পাওয়ায় হাতিটি মারা গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তবে ভ্যাটেরেনারি সার্জন ডা. মুস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, অতিরিক্ত গরম, খিঁচুনি ও দীর্ঘদিন ধরে স্ট্রেসে থাকার প্রভাবে হার্ট অ্যাটাক হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
হাতির ময়না তদন্তের বিষয়ে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে জামালপুরের স্থানীয় প্রশাসনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডা. মুস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, কয়রা গ্রামে হাতিটি যেখানে মারা গেছে সেখানেই সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের কাজ হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন ভারতীয় এই বন্য হাতিটি বন্যার পানিতে ভেসে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। প্রায় দেড়মাস যাবত এটি জামালপুর, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার চরাঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। হাতিটি উদ্ধারে গত ৪ আগস্ট ভারতীয় একটি বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসে। ৫ আগস্ট থেকে টানা তিনদিন তারা উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। কিন্ত কোনোভাবেই হাতিটিকে ডাঙ্গায় ভেড়ানো সম্ভব হয়নি। পরে ৮ আগস্ট তারা দেশে ফিরে যান।
গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামে ট্রাঙ্কুলাইজার বন্দুক থেকে ডার্ট ছুড়ে অচেতন করা হয় হাতিটিকে। এ সময় হাতিটি পানিতে পড়ে যায়। এরপর পাঁচ টনের বেশি ওজনের হাতিটিকে জলাশয় থেকে টেনে তোলে কয়েকশ মানুষ।
উদ্ধারের পর দুই দফা দড়ি ও শিকল ছিঁড়ে ছুটে যায় হাতিটি। সবশেষ রবিবার (১৪ আগস্ট) ফের চেতনানাশক দিয়ে হাতির চার পায়ে শেকল ও ডান্ডাবেড়ি পড়ানো হয়। পরে সোমবার দুপুরের দিকে হাতিটি অসুস্থ হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। তবে এ নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই বলে জানিয়েছিলেন ভেটেরেনারি সার্জন ডা. সাঈদ। তিনি জানিয়েছিলেন, পায়ে শক্ত বাঁধন ও শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় হাতিটি দুপুরের দিকে শুয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন- মারা গেল বঙ্গ বাহাদুর
/এফএস/