X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবন্ধী হয়েও তারা জয়ী, তৈরি করা শতরঞ্জি যাচ্ছে বিদেশে

আশরাফ উদ্দিন সিজেল, ময়মনসিংহ
০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৮:০২আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৮:০২

 

ময়মনসিংহ শহরের ‘কাঁচিঝুলি প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টার’। সেখানে গেলে বেশ ভালো করেই উপলব্ধি করা যায়, প্রতিবন্ধীরা সমাজের জন্য কোনও প্রতিবন্ধকতা নয়। তাদের তৈরি শতরঞ্জি ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন পণ্য এখন বিদেশে রফতানি হচ্ছে। হস্তশিল্পের-কাজে-ব্যস্ত-প্রতিবন্ধী-নারীরা

কাঁচিঝুলিতে প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টার মহিলা ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালে। সেই থেকে প্রতিবন্ধী নারীরা হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী নোপালি কাজ করছেন ২০০৮ সাল থেকে। পোলিওর কারণে পঙ্গু হওয়ার পর তিনি সেখানে কাজ শুরু করেন। সেখানে শতরঞ্জি তৈরি করেন তিনি। নোপালি জানান, তিনি এখন আর সংসারের বোঝা নন।
ময়না কাজ করছেন একই বছর থেকে। দুর্ঘটনায় একটি পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছিল তার। সংগঠন থেকে বিনামূল্যে একটি কৃত্রিম পা দেওয়া হয় তাকে। শুধু নোপালি ও ময়না নয়, ১৭ জন প্রতিবন্ধী নারীকে নিয়ে চলছে শতরঞ্জি তৈরির কাজ।
বিলকিছ আক্তার একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। গত ৮ বছর ধরে তিনি হস্তশিল্পের কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘ময়মনসিংহ কমিউনিটি প্রতিবন্ধী সেন্টার’এ। আর নিজের উপার্জিত অর্থ খরচ করছেন পরিবারের পেছনে।
বিলকিছ জানান, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন প্রতিবন্ধী নারী হস্তশিল্প ও শতরঞ্জি তৈরি করেন। কাজ শেষ করার জন্য তেমন কোনও বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নিজেদের মধ্যে এক ধরনের তাগিদ থাকে। প্রতিবন্ধী নারীরা লেখাপড়াও করেন। তাদের রয়েছে মাতৃত্বকালীন ছুটিও। প্রতিবন্ধী-নারীদের-তৈরি-কার্পেট
শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ময়না, বাভলী, সাবিনা, কল্পনা, প্রিয়া, স্মৃতি ও সেতুর মতো প্রায় দুই শতাধিক নারী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হস্তশিল্পের কাজ করে এখন স্বাবলম্বী।
প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক অঞ্জন কুমার চিচাম বলেন, ‘সহায়তা নির্ভর প্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী নারীদের তৈরি পণ্য এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে।’
প্রতিবন্ধী নারীক্লাব শান্তিনীড়ে গিয়ে কথা হয় ক্লাবের সহকারী ইনচার্জ চুমকি বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনিও পোলিওর কারণে বেশি দূর একা হাটতে পারেন না। ক্লাবের সদস্যরা এমব্রয়ডারির কাজও করেন। অনেকে বাড়িতে বসে এ কাজ করার সুযোগ পান। তাদের মোট সদস্য সংখ্যা ১০৩ জন। ক্রাচ নিয়ে চলাফেরা করা বিলকিস আক্তার জানান, তিনি সুতা দিয়ে নকশার কাজ করেন। যা পান তা দিয়ে সংসারের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চলে যায়।
প্রতিবন্ধী মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ সেন্টারে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এ সেন্টারে গ্রুপভিত্তিক কাজ করেন তারা। বেশির ভাগ প্রতিবন্ধী নিজের বাড়িতে বসেই কাজ করেন। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে সরকারের সহায়তার দাবি জানান প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টারের শান্তিনীড় নামে এ ক্লাবের সভাপতি তাহমিনা আক্তার। তিনিও অন্যের সাহায্য ছাড়া হাটতে পারেন না।
প্রতিবন্ধী নারীক্লাব শান্তিনীড়ে কাজ করছেন বাক, বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীরা। তাদের তৈরি হস্তশিল্প, শতরঞ্জি, ব্যাগ, নকশি কাঁথা, বিছানার চাদর, কুশন, মশারী, বিছানার চাদর ও ওয়ালমেটসহ সহ বিভিন্ন পণ্য দেশ-বিদেশে বিক্রি হচ্ছে।
/এআর/এআরএল/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!