এবার শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্তে ধানখেত ও ঘর-বাড়িতে তাণ্ডব চালাতে এসে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে এক বন্যহাতি। রবিবার গভীর রাতে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের তাওয়াকুচা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ২ অক্টোবর রাতে একই ইউনিয়নের পানবর পাহাড়ি গ্রামে অসুস্থ হয়ে আরও একটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। এদিকে, রাতেই বন্যহাতির মৃত্যুতে দলের অন্য হাতিরা উত্তেজিত হয়ে ওই এলাকার ১০ থেকে ১৫টি বাড়ি-ঘরে হানা দিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ নিয়ে গত ১০ বছরে জেলার সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২০টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাওয়াকুচা এলাকায় প্রতিদিনের মতো ২৫/৩০টির বন্যহাতির একটি দল আমন ধানখেতে তাণ্ডব চালায়। এ সময় আকস্মিক একটি হাতি ধানখেতে পড়ে মারা যায়। এ সময় দলে থাকা অন্য হাতিরা উত্তেজিত হয়ে দীর্ঘক্ষণ ওই স্থানে মৃত হাতিকে ঘিরে চেচামেচি করে এবং একপর্যায়ে আশপাশে তাণ্ডব চালায়। তাওয়াকুচা, পানবর ও পার্শ্ববর্তী গুরুচরণ দুধনই গ্রামের বেশ কয়েকটি টিনশেড ও সেমিপাকা ঘর ভাঙচুর করে ভোরের দিকে গহীন বনে চলে যায়।
বন বিভাগের ঝিনাইগাতীর তাওয়াকুচা বিট কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম জানান, মৃত হাতিটির বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ২৬ বছর হবে। এটি দাঁতাল নারী হাতি। লম্বায় ১৩ ফুট।
চলতি অক্টোবর মাসের ১৫ দিনে ঝিনাইগাতি উপজেলায় পাঁচজন এবং গত সেপ্টোম্বর মাসে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতি উপজেলার সীমান্ত গ্রামে বন্য হাতির আক্রমণে তিনজনসহ মোট আটজন নিহত হয়। সেসঙ্গে প্রায় ২০ জনকে আহত এবং প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে হাতির দল।
গত কয়েক মাস ধরে চলে আসা এ তাণ্ডবে এখন হাতি আতঙ্কিত জনপদে পরিণত হয়েছে ঝিনাইগাতি সীমান্তের কয়েকটি গ্রাম। আতঙ্কে রয়েছে শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারাও। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ঝিনাইগাতি এলাকার মানুষ। মশাল জ্বালিয়ে, সার্চ ও জগ লাইট জ্বালিয়েও এখন আর কাজে আসছে না। পুরনো সব পদ্ধতিই এখন হাতির কাছে নিষ্ফল। এসব নিয়ে হাতি তাড়াতে গেলে উল্টো এখন হাতির আক্রমণের শিকার হতে হয়। ফলে হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে এখন আর কোনও উপায়ই খুঁজে পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী সীমান্তবাসী।
/বিটি/