X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখা নিয়ে সংশয়

এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট
২৭ অক্টোবর ২০১৬, ০৭:৩৭আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০১৬, ০৮:৪৮

 

মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল আর্ন্তজাতিক নৌ-রুট মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল পুনঃখননের পর আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  চ্যানেলটি উন্মুক্তকরণ ও ড্রেজার কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। দীর্ঘদিন পর চ্যানেলটি চালু হওয়ায় সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল করবে না। এতে সুন্দরবনের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে। তবে অবৈধ বাঁধের কারণে নৌরুটটির নাব্যতা ঠিক রাখা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মংলা-ঘষিয়া খালী চ্যানেল রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক এমএ সবুর রানা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আর্ন্তজাতিক এই নৌ-রুটটি চালু হওয়ায় সুন্দরবনের  শ্যালা নদী দিয়ে এখন কোনও নৌযান চলাচল করছে না। এতে একদিকে যেমন সুন্দরবনের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাচ্ছে। অপরদিকে নৌ-পথের দূরত্ব কমে আসায় জ্বালানী সাশ্রয়সহ অল্প সময়ে পণ্য পরিবহন সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া চ্যানেলটি চালু হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা।

জানা গেছে, মংলা বন্দরের সঙ্গে সারাদেশের দূরত্ব কমানোর জন্য ১৯৭৪ সালে ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ মোংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌপথ করা চালু হয়। পলি পড়ে ২২ কিলোমিটার বন্ধ হওয়ার কারণে ২০১০ সালের পর এই চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে সুন্দরবনের মধ্যদিয়ে নৌযান চলাচল করত। ২০১৪ সালে সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবির পর এই চ্যানেলটি পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিআইডব্লিউটিএ দুই বছর ধরে খননের পর এই চ্যানেলটি দিয়ে সব ধরনের নৌযান চলাচলের উপযোগী করে তুলে।

সুত্রমতে, এই নৌ-পথটি চালুর ফলে ৮১ কিলোমিটার দুরুত্ব কমেছে। এছাড়া মংলা-ঘষিয়াখালীর রমজানপুর এলাকায় একটি লুপকাট করায় আরও ৫(পাঁচ) কিলোমিটার দুরুত্ব কমেছে। ফলে প্রায় ৮৬ কিলোমিটার দুরত্ব কমে গেছে

বিআইডব্লিউটিএ’র নবনির্মিত ৮টিসহ মোট ১২টি ড্রেজার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬টি ড্রেজার ২০১৪ সালের জুনে নিয়োগ করে মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-পথটি পুনঃখনন শুরু করা হয়। নৌ-পথটি পুনঃখনন করার পর ২০১৫ সালের মে মাস হতে পরীক্ষামূলভাবে খুলে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন গভীরতায় মোট ৩৫ হাজার ১৫টি জাহাজ এ নৌ-পথে চলাচল করেছে। নৌ-পথটি ১৩-১৪ ফুট গভীরতায় ও ২০০-৩০০ ফুট প্রশস্ততা বিশিষ্ট করে সৃষ্টি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জনপ্রতিনিধি জানান, সংযোগ খালের বাধ অপসারনে ব্যপক অনিয়ম হয়েছে।  তাদের দাবি খাল খনন ও বাধ অপসারনের নামে এখানে হরিলুট হয়েছে। নেপথ্যে স্থানীয় প্রভাবশালীরা রয়েছেন।

চ্যানেলটির সঙ্গে সংযুক্ত রামপাল উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২৩৪টি খালের প্রতিটি খাল এলাকার প্রভাবশালীরা অন্তত ১ হাজার ৮০০ অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে প্রায় দুই যুগ ধরে অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ করে আসছেন। ফলে চ্যানেলটির সঙ্গে সংযুক্ত এসব খাল নাব্যতা হারিয়ে মরে যায়। এতে আন্তর্জাতিক এ রুটের নাব্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

মংলা-ঘষিয়া খালী চ্যানেল রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক এমএ সবুর রানা বলেন, ‘মংলা-ঘষিয়াখালী নৌরুট পুনঃখনন সরকারের একটি মহতি উদ্যেগ। এই চ্যানেলটি রক্ষার জন্য প্রয়োজন সব সংযোগ খালের বাধ অপসারণ। কিন্তু সরকারিভাবে রামপালে ১৮শ বাধ অপসারনের কথা বলা হয়েও এসব শুধু খাতা কলমে আছে। বেশির ভাগ খালের বাঁধ এখনও অপসারণ করা হয়নি। কোনও কোনও স্থানের বাধ কাটার পর ওই স্থান প্রভাবশালীরা ফের জাল-পাটা দিয়ে আটকে রেখেছে।’

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. জলিল জানান, এই চ্যানেল নৌকা চলাচলেরও অনুপোযোগী হয়ে পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চ্যানেলটি পুনঃখননের ফলে আবার চ্যানেলটি দিয়ে জাহাজ চলাচল করছে।

রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব কুমার রায় জানান, ক্রমাগত পলি জমার ফলে ২০১০ সালে এই চ্যানেলটি সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। চ্যানেলটি পুনঃখননের পর এর নাব্যতা ধরে রাখতে চ্যানেল সংযুক্ত ২৩৪টি খালে ১৮০০ অবৈধ বাধ অপসারণ করা হয়েছে। এর নাব্যতা ধরে রাখার জন্য সংযুক্ত খালগুলো সচল রাখতে হবে এবং নিয়মিত ড্রেজিং চালিয়ে যেতে হবে।

/এএ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
বেসিস নির্বাচনে ১১ পদে প্রার্থী ৩৩ জন
বেসিস নির্বাচনে ১১ পদে প্রার্থী ৩৩ জন
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক