X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান ভাষাসৈনিক শমশের উদ্দীন

মনোজ শাহা, গোপালগঞ্জ
০১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৩৪আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৪৭

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চেয়েছেন ১৯৫২ সালের ভাষাসৈনিক শমশের উদ্দিন মোহাম্মদ ওরফে কাহার মাস্টার (৮৭)। কারও দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, বরং সরকারের চালু করা মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দিয়ে জীবনের শেষ সময়টা কাটানোর ইচ্ছা পোষণ করেছেন তিনি। ভাষাসৈনিক শমশের উদ্দিন মোহাম্মদ

১৯২৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল গ্রামে জন্ম শমশেরের। ৬ ভাই ১ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বোর্ড থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ভর্তি হন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে। সেখান থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে ভর্তি হন শমশের।

১৯৫২ সালে শমশের উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সেসময় মাতৃভাষার জন্য শুরু হয় আন্দোলন। তিনি বাংলা ভাষা রক্ষায় আন্দোলনে অংশ নেন। প্রচার বিমুখ হওয়ার কারণে ভাষা সৈনিক হিসেবে তিনি অগচরেই রয়ে যান। তবে এ নিয়ে তার কোনও অভিযোগ নেই। ভাষার জন্য ও দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন- এটাই তার জীবনের সবচেয়ে বড় গর্ব।’
এছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল গ্রামে শমশের উদ্দিনের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। সেখানে ৮০০ থেকে প্রায় ১২০০ মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ নিয়ে কালনাঘাট, ভাটিয়াপাড়াসহ কাশিয়ানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে অংশ নেন।
এমপি আক্তার উদ্দিন মোক্তার, ইসমত কাদির গামা, নুরুল কাজী জুন্নু, সাইফ উদ্দিন মোহাম্মদ এ ক্যাম্পের নেতৃত্ব দিতেন। এছাড়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম এ ক্যাম্পে ১ মাস অবস্থান করেছিলেন। সেক্টর কামান্ডার হুদা এ ক্যাম্প পরিদর্শন করে গেছেন। সেসময় শমশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাজার করে রান্নাবান্না ও খাবারের ব্যাবস্থা করেছিলেন। শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে সহায়তা করে তিনি যুদ্ধে বিশেষ অবদান রেখেছেন। ভাষাসৈনিক শমশের উদ্দিন মোহাম্মদ

৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের কথা স্মরণ করে শমশের বলেন, ‘সেসময় জীবন বাজি রেখে মায়ের ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছি। আমি পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা,খুলনা, কুষ্টিয়া গোপালগঞ্জের অন্তত ৪০টি স্কুলে শিক্ষকতা করেছি। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য তৎকালীণ কাশিয়ানী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমার কাছে টাকা চেয়েছিল,কিন্তু আমি দেইনি। পরে এ ব্যাপারে আর চেষ্টাও করিনি। ভাষা আন্দোলনের ৬৪ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমার খোঁজ নেয়নি।’




শুধু ভাষার জন্য নয় স্বাধীনতা যুদ্ধেও এই সাহসী সৈনিকের অবদান ভোলার মতো নয়। তারপরও স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে শমশের উদ্দীনের। তাই শেষ জীবনে তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও ভাতা পাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শমশের বলেন, ‘তোমরা ভাষা এবং স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানবে। সততা ও ন্যায়নীতির আলোকে জীবন গড়ে তুলবে। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেদের গড়ে তুলবে। এটাই আমার প্রত্যাশা।’

/এআর/এফএস/

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে ২৭ বস্তা টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে ২৭ বস্তা টাকা
বিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
উপন্যাসবিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
ইরান-সমর্থিত ইরাকি সেনা ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ, নিহত ১
ইরান-সমর্থিত ইরাকি সেনা ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ, নিহত ১
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি বন্ধ
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি বন্ধ
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি