X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরগুনা হানাদারমুক্ত দিবস আজ

তরিকুল রিয়াজ, বরগুনা
০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:৪২আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:৪২

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর বরগুনার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ওই দিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পায় বরগুনাবাসী। মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া সাব-সেক্টরের অধীন বরগুনাকে মাত্র ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা হানাদার মুক্ত করেন।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বরগুনার মুক্তিকামী হাজারো তরুণ বাঁশের লাঠি, গুটি কয়েক রাইফেল ও বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। এরই মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী দুর্বল প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে।

ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ক্ষয়-ক্ষতির ভয়ে বরগুনার মুক্তিযোদ্ধারা এলাকা ছেড়ে চলে যান অন্য এলাকায়। হানাদার বাহিনীকে মোকাবেলা করার মতো কোনও অস্ত্র ছিল না তাদের হাতে। পাকিস্তানি বাহিনী বিনা বাধায় বরগুনা শহর দখল করে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বরগুনার বিভিন্ন থানা ও তৎকালীন মহাকুমা সদরে পাক বাহিনী অবস্থান করে পৈশাচিক কায়দায় নারী নির্যাতন ও নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। একাত্তরের ২৯ ও ৩০ মে বরগুনা জেলখানায় ৭৬ জনকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।

তবে কয়েক মাসের মধ্যেই বরগুনার মুক্তিযোদ্ধারা শক্তি অর্জন করে মনোবল নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন। বরগুনার, বামনা, বদনীখালী ও আমতলীতে যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনারা বরগুনা ট্রেজারি ও গণপূর্ত বিভাগের ডাকবাংলোয় অবস্থান নেয়।

মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা নবম সেক্টরের বামনার বুকাবুনিয়া সাব-সেক্টরের অধীনে ছিল। মুক্তিযোদ্ধা হেডকোয়ার্টারের নির্দেশ পেয়ে বুকাবুনিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা ‘৭১ এর ২ ডিসেম্বর বরগুনা বেতাগী থানার বদনীখালী বাজারে আসেন। রাত ৩টার দিকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে নৌকায় করে বরগুনার খাকদোন নদীর পোটকাখালী স্থানে অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নিজস্ব সংকেত পেয়ে ভোর রাতে তীরে উঠে আসেন। ২১ জন সহযোদ্ধা নিয়ে তিনি বরগুনা মুক্ত করার লক্ষে আক্রমন করেন। তাদের মধ্যে ১০ জন বরগুনার ও বাকি ১১ জন ছিলেন ঝালকাঠির।

কারাগার, ওয়াবদা কলনী, জেলা স্কুল, সদর থানা, ওয়ারলেস ষ্টেশন, এসডিওর বাসাসহ বরগুনা শহরকে কয়েকটি উপ-বিভাগে ভাগ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা যে যার অস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অবস্থান নেন এবং ফজরের আজানকে যুদ্ধ শুরুর সংকেত হিসেবে ব্যবহার করেন। আযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ৬টি স্থান থেকে একযোগে ফায়ার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। দ্বিতীয় দফা ফায়ার করে তারা জেলখানার দিকে এগোতে থাকেন। চারজন সহযোগিসহ সত্তার খান ছিলেন কারাগার এলাকায়। তারা এসময় জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পন করিয়ে এসডিও অফিসের সামনে নিয়ে আসেন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা গিয়ে স্বাধীনতাকামী তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনকে মুক্ত করেন। দুপুর ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশাসনিক দায়িত্ব এসডিওকে সাময়িকভাবে বুঝিয়ে দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বুকাবুনিয়া সাব-সেন্টারে চলে যান। সেদিন থেকেই বরগুনা হানাদার মুক্ত হয়।

/এফএস/ 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
‘আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের তারা বন্ধু’
‘আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের তারা বন্ধু’
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী