X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ গোপালগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৫৮আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:০৬

আজ গোপালগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস আজ সোমবার ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ পাক হানাদার মুক্ত হয়। এই দিনে দলে দলে মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের মানুষ মেতে উঠে আনন্দ উল্লাসে। যা গোপালগঞ্জবাসীর কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রতি বছরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করা হচ্ছে দিবসটি।

গোপালগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার বদরুজ্জামান বদর জানান, দিবসটি পালনে র‌্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি অংশ নেবে।

১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ থেকে গোপালগঞ্জে শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ গোপালগঞ্জে পৌঁছানোর পরই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের লড়াই। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহকুমা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদের সহযোগীতায় ট্রেজারি থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ (তৎকালীন কায়েদে আযম মেমোরিয়াল কলেজ) মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ট্রেনিং ক্যাম্প চালু হয়। ২৫ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত গোপালগঞ্জ মুক্তিবাহিনীর দখলে ছিল। ৩০ এপ্রিল পাকহানাদার বাহিনী শহরে ঢুকতে শুরু করে। শুরু হয় জ্বালাও-পোড়াও-ধর্ষণ আর হত্যাযজ্ঞ। কর্নেল তারেক ও মেজর ঘুরির নেতৃত্বে পাকসেনারা স্থানীয় মুসলিমলীগ নেতাদের কাছ থেকে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির অবস্থান জেনে জ্বালিয়ে দেয়।

এছাড়া সদর উপজেলার কাঠি ইউনিয়নের মানিকহার গ্রামের হাফিজুর রহমান বাদশা মিয়ার পরিবারের বড় ছেলেসহ একই পরিবারে ৮ জনকে গুলি করে হত্যা এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয় পাক হানাদার বাহিনী। পরে পাকবাহিনী গোপালগঞ্জ সদর থানা পরিষদ সংলগ্ন ‘জয় বাংলা পুকুর’ পাড়ে একটি মিনি-ক্যান্টনমেন্ট (বর্তমানে উপজেলা পরিষ) স্থাপন করে কর্মকান্ড পরিচালনা শুরু করে। সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ নারী-পুরুষ ধরে এনে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করে। ফলে এটি পরিণত হয় একটি বধ্যভূমিতে।

৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্তলগ্নে মিত্র দেশ ভারত প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সরকার স্বীকৃতি দেওযায় এখানকার পাক হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙ পড়ে। এ দিন সূর্য উঠার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা গোপালগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। চারিদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনের খবর পেয়ে পাক সেনারা গোপালগঞ্জের মিনি ক্যান্টমেন্ট ছেড়ে পালিয়ে যায়। মেজর সেলিমের অধিনে পাকহানাদার বাহিনীর একটি দল চলে যায় রাজধানী ঢাকায়। আর অন্য একটি দল চলে যায় ভাটিয়াপাড়ার ওয়ারলেস ক্যাম্পে। অবশেষে ৭ ডিসেম্বর ভোর থেকে গোপালগঞ্জের আকাশে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলার বিজয় পতাকা।

মুক্তিযোদ্ধা সিকদার নূর মোহাম্মদ দুলু বলেন, ‘গোপালগঞ্জ মিনি ক্যান্টনমেন্টের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন ফয়েজ মোহাম্মদ ও ক্যাপ্টেন সেলিমের নেতৃত্বে পাক জল্লাদরা এখানে কসাইখানা তৈরি করেছিলে। দেশ স্বাধীনের পর সেখানে ইটের স্তুপে, সামনের খোলা জায়গায় অসংখ্য মানুষের মাথার খুলি, হাড়, ও মহিলাদের মাথার চুল পড়ে ছিল। ক্যাস্পের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি নদীতে জাল ফেললেই জেলেদের জালে দীর্ঘদিন মানুষের মাথার খুলি ও কঙ্কাল জড়িয়ে পড়ত। পাকবাহিনী এখানে মুক্তিযোদ্ধা গোলাজার চৌধূরীসহ শত শত মানুষকে ধরে এনে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে  হত্যা করে। এখন পর্যন্ত এ বধ্যভূমি থেকে শহীদ ৪৫ জনের  নাম আমরা জানতে পেরেছি। শহীদের সঠিক সংখ্যা এখনও নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। আমি শহীদের সংখ্যা নিরুপনের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

/এমডিপি/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’