X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদপুর মুক্ত দিবস আজ

ইব্রাহিম রনি, চাঁদপুর
০৮ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:১৮আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:২৭

শহরের লেকের ওপর দৃশ্যত ভাসমান স্মৃতিস্তম্ভ অঙ্গীকার

আজ ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিল চাঁদপুর জেলা। এই দিনে চাঁদপুর থানার সন্মুখে বিএলএফ বাহিনীর প্রধান মরহুম রবিউল আউয়াল কিরণ চাঁদপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তোলেন।

১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল দখলদার বাহিনীর ২টি সেভারজেট বিমান থেকে সারা চাঁদপুর শহরে এলোপাথারি বোমা বর্ষণ করা হয়। আর এর মাধ্যমে প্রথম আক্রমণের সূচনা করা হয় এ জেলায়। ওই দিন সেলিং- বুলেটে পুরানবাজার ও বড় স্টেশন এলাকায় এক নারীসহ দুইজন নিহত হন।

৮ এপ্রিল বিকালে প্রায় পাকিস্তানি হানাদারের সদস্যরা বিশাল গাড়ির বহর নিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। পথে মুদাফফরগঞ্জ ও হাজীগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের মুখে পড়ে। আক্রমণ এড়াতে বাধ্য হয়ে দ্রুত চাঁদপুর শহরের অদূরে সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে এসে আশ্রয় নেয় সেনারা। আর সেনা কর্মকর্তারা ওয়াপদা রেস্ট হাউজ এবং জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় অবস্থান নেয়।

প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে নেওয়ার পর পাকিস্তানি বাহিনী অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি নিতে সমর্থ হয়। চালু হয়ে যায় নির্যাতনের স্টিম রোলার। চাঁদপুরের বড়স্টেশন, টেকনিক্যাল স্কুল,ওয়াপদা রেস্ট হাউজ, পুরানবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ইত্যাদি ৮টি স্থানে তারা নির্যাতন চালানোর জন্য বিশেষ টর্চারসেল তৈরি করে। শহর ও আশেপাশের এলাকাসহ ট্রেন, লঞ্চ, স্টীমার এবং নৌপথে যারা আসা যাওয়া করেছে, কারও ওপর সন্দেহ হলে ধরে এসব টর্চারসেলে নিয়ে এসে নির্যাতন, ধর্ষণ শেষে হত্যা করার পর মেঘনা ও পদ্মা নদী ফেলে দিতে থাকে লাশ।

মুক্তিযোদ্ধাদের এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, পাক বাহিনী চাঁদপুরের ৮টি টর্চারসেলে ১৫ হাজারের বেশি লোককে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

ধীরে ধীরে মুক্তিবাহিনী আবার শক্তিশালী আক্রমণে ফিরে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় অবশেষে একাত্তরের ৭ ডিসেম্বর জেলার চিতোষী, হাজীগঞ্জ, মুদাফরগঞ্জ, বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জ এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আর দাঁড়াতে পারেনি। গভীর রাতে ২টি জাহাজে চেপে নৌপথে পালিয়ে যেতে থাকে তারা।

৮ ডিসেম্বর সকালের দিকে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা ট্যাঙ্ক নিয়ে চাঁদপুর প্রবেশ করে পাক বাহিনীর পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে বোমা মেরে প্রায় ৫শ’ পাকিস্তানি সেনাবাহনকারী এমভি লোরাম নদীতে ডুবিয়ে দেয়। পুরোপুরি পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হয় মুক্ত হয় চাঁদপুর।

বড় স্টেশন এলাকায় নির্মিত রক্তধারা

দীর্ঘ ৮ মাসে চাঁদপুরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মরণে চাঁদপুরে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শহরে লেকের ওপর দৃশ্যত ভাসমান স্মৃতিস্তম্ভ ‘অঙ্গীকার’ ও চাঁদপুরের প্রথম ৪ শহীদের স্মরণে ‘মুক্তিসৌধ’, শহরের ৫ রাস্তার মোড়ে সকল শহীদদের স্মরণে ‘শপথ ফোয়ারা’, চাঁদপুর বড় স্টেশনের বধ্যভূমিতে ‘রক্তধারা’।

চাঁদপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

/এইচকে/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভোরে বজ্রপাতে ৩ গরুর মৃত্যু
ভোরে বজ্রপাতে ৩ গরুর মৃত্যু
অনুপ্রাণন-এর মোড়ক উন্মোচন, বই আলোচনা ও লেখক সম্মাননা
অনুপ্রাণন-এর মোড়ক উন্মোচন, বই আলোচনা ও লেখক সম্মাননা
উত্তর ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাত, সরিয়ে নেয়া হয়েছে ১১ হাজার মানুষ
উত্তর ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাত, সরিয়ে নেয়া হয়েছে ১১ হাজার মানুষ
শরিফুলের গতিতে উড়ে গেলো শেখ জামাল
শরিফুলের গতিতে উড়ে গেলো শেখ জামাল
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট
তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট