X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

গরু চরিয়ে সংসার চালান মুক্তিযোদ্ধা আলতাজ মিয়া

এস বাসু দাশ, বান্দরবান
১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৪:২০আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৪:২৪



মুক্তিযোদ্ধা আলতাজ মিয়া জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন বান্দরবানের মুক্তিযোদ্ধা আলতাজ মিয়া (৭১)। স্বাধীনতার পর বিদ্যালয় তৈরির জন্য নিজের জমিও দান করেন তিনি। নিজের সরলতার কারণে সংগ্রহ করতে পারেননি মুক্তিযোদ্ধা সনদও। তাই মেলেনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। পাননি সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা। বেঁচে থাকার জন্য তিনি এখন অন্যের গরু চরিয়ে সংসার চালান।



স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারির ৮নং ওয়ার্ড আলী মিয়া পাড়ার বাসিন্দা আলতাজ মিয়া। যুদ্ধের পর আবাসস্থল ছাড়া বাকি জমিটুকু বাড়ির পাশে আলী মিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দান করে দেন। আর কোনও জমিজমা না থাকায় বিভিন্ন সময় নানা ধরনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ধারদেনা করে দুই মেয়েকে বিয়ে দেন। দুই ছেলে শ্রমিকের কাজ করে কোনও রকমে নিজের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সংসার চালান। তাই বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই মুক্তিযোদ্ধা এখন রাখাল। গরু চরিয়ে পাওয়া অর্থ দিয়ে কোনও রকমে সংসার চালান।
আলী মিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিন চাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা আলতাজ মিয়া বিদ্যালয়ের জন্য ভূমি দান করেছেন, এটা সত্যি। তিনি অনেক কষ্টে আছেন। কোনোভাবে সংসারটা চালান।’
মুক্তিযোদ্ধা আলতাজ মিয়া জানান, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হলেও কেউ তার খোঁজ নেয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাননি। ২০১০ সালে নাইক্ষ্যংছড়ির অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাকেও একবার তলব করেছিলেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপর আর কোনও খোঁজ-খবর পাননি।
তিনি আরও বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কমান্ডার মেজর আব্দুস সোবহানের নেতৃত্বে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। যুদ্ধ করেছি ঈদগড়ের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঙালি, গর্জনীয়া বড়বিলের মো. হাশেম, প্রয়াত কমান্ডার এমদাদ মিয়া, ডা. সিরাজ, নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তারা সবাই বর্তমানে সরকারের সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আমিই কিছু পেলাম না।’
মুক্তিযোদ্ধা আলতাজের ভাতিজা ইদ্রিস আলী বলেন, ‘উখিয়ার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমদাদ মিয়ার কাছে ওনার সব কাগজপত্র ছিল। কমান্ডার মারা যাওয়ার পর ওই কাগজপত্রের আর কোনও হদিস নেই।’
নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারির ৮নং ওয়ার্ডের নারিচবুনিয়ার ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, ‘এলাকার প্রবীণ ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও বলেন উনি (আলতাফ মিয়া) মুক্তিযোদ্ধা।’
স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের নারিচবুনিয়া, আলী মিয়া পাড়া, পুর্নবাসন পাড়াসহ একাধিক গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলতাজ মিয়াকে সবাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই চেনেন। তিনি অল্পশিক্ষিত হওয়ায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দফতরগুলোয় যোগাযোগ করতে পারেননি। সে কারণেই আজ তার এই দুরাবস্থা।

 

/বিটি/টিআর/

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ