X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

৪৫ বছরেও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি মেলেনি রাজবাড়ীর ঠাকুর পরিবারের

তানভীর মাহমুদ, রাজবাড়ী
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:৩০আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:৪৪

শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি মেলেনি ঠাকুর পরিবারের ‘ভাই, ১৯৭১ সাল থেকেই বুকের ভেতর কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি। চোখের সামনে বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের ছয়জনকে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হতে দেখেছি। হারিয়েছি জীবনের সবচেয়ে বড় আশ্রয়। এতিম হয়ে বড় হয়েছি। যে বয়সে বাবার হাত ধরে বড় হওয়ার কথা ছিল সে বয়সে বুকে চেপেছি আপন জন হারানোর বেদনা। এখন ২০১৬ সাল। স্বাধীনতার ৪৫টি বছর পার হয়ে গেলেও মেলেনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি। এখন শুধু বাড়িতে সেই ৬ জনকে যেখানে গণকবর দেওয়া হয়েছিল সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির দাবি জানাই। আর জীবনের শেষ ইচ্ছে, মরার আগে যেন স্মৃতিস্তম্ভটি দেখে যেতে পারি।’ কথা গুলো বলছিলেন জেলা সদরের শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের আহলাদীপুর গ্রামের বাড়ইপাড়ার ঠাকুর পরিবারের প্রবীর কুমার (৫৫)।

তিনি  জানান, ১৯৭১ সালে জেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের আহলাদীপুর গ্রামে (তৎকালীন নিমতলা গ্রাম) পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে মুক্তিকামী যুবকদের সংগঠিত করছিলেন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ও তৎকালীন নিমতলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কালিপদ ঠাকুর। প্রবীর কুমার তারই ছেলে। দেশ যখন বিক্ষুব্ধ তখন কালিপদ ঠাকুরের  দেশপ্রেম দেখে ক্ষুব্ধ হয় তৎকালীন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লাহ মিয়া।

১৯৭১ সালের ১১ মে (২৭ বৈশাখ) বেলা ১১টার দিকে মুক্তিকামী যুবকরা যখন কালিপদ ঠাকুরের বাড়িতে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলের ঠিক তখনই তাদের ওপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে শান্তি কমিটির সদস্যরা। একে একে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কালিপদ ঠাকুর, কালিপদ ঠাকুরের মা সরলা দেবী, স্ত্রী উষা রাণী, ছোট ছেলে প্রদ্যুত কুমার, বোন জামাই অনিল চৌধুরী, অনিলের ছেলে অবনী চৌধুরীকে। এ সময় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকায় প্রাণে বেচে যান কিশোর প্রবীর কুমার।

হত্যাযজ্ঞ শেষে পিস কমিটির সদস্যরা চলে গেলে মুক্তিকামী যুবক সাত্তার, ওহাব (যার নামে পরবর্তীতে নিমতলা শহীদ ওহাবপুর নাম করণ করা হয়), সোহরাব, কুটি খাঁ এগিয়ে এসে ৬টি নিথর মরদেহ উদ্ধার করে ঠাকুরের বাড়িতে তৈরি করা একটি বাংকারে গণ কবর দেন।

সেই হত্যাকাণ্ডে প্রাণে বেঁচে যাওয়া প্রবীর কুমারের ছোট ভাই পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে দেশ স্বাধীন হলেও আর কেউ তাদের খোঁজ খবর নেয়নি। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও ঠাকুর পরিবার পায়নি শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি। গণবরের ওপর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে কিনা এখন শুধু তাই দেখার অপেক্ষা।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাজবাড়ী সদর উপজেলা কমান্ডার মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘শহীদ ওহাবপুরে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ঠাকুর পরিবারের গণকবরের ওপর একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জমি নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি দ্রুত সেখানে শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে।’

আরও পড়ুন- 


হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সিতে প্রতিদিন সেবা পাবেন আট হাজার যাত্রী

/এফএস/ 

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না