X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

৪৫ বছরেও সৈয়দপুরের বধ্যভূমিতে নির্মিত হয়নি স্মৃতিসৌধ

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী
২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:৩৮আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:৩৮

মুক্তিযুদ্ধের ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলেও নীলফামারীর সৈয়দপুরের বধ্যভূমিতে আজও নির্মিত হয়নি স্মৃতিসৌধ। বার বার এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অর্থ বরাদ্দ, স্থান সংকট ও সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতার কারণে তা আজও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত শহীদদের স্বারক চিহ্নগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। ৪৫ বছরেও সৈয়দপুরের বধ্যভূমিতে নির্মিত হয়নি স্মৃতিসৌধ

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরের ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্যপট ছিল দেশের অন্যান্য জেলা শহরের তুলনায় একেবারে ভিন্ন। সেই ৪৭ এর দেশ ভাগের পর থেকে সৈয়দপুর শহরে বিপুল সংখ্যক উর্দুভাষী ভারতের বিহার রাজ্য থেকে এসে আস্তানা গাড়ে। সেসময় রেলওয়ে কারখানায় চাকরির সুবাদে তারা বংশ বিস্তার করে।

মুক্তিযুদ্ধে অবাঙালিদের সংগঠিত করতে সেসময় নেতৃত্ব দেন তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য শহিদ ডা. জিকুরুল হকসহ আরও অনেকে। সেসময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের আটকিয়ে রেখে বিমান বন্দরের মাটি কাটার কাজে লাগায়। পাশাপাশি তাদের ওপর চরম নির্যাতন চালানো হয়। এতে করে শহরের বাঙালিরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে সেদিন সৈয়দপুর শহরের পার্শ্ববর্তী জেলা দিনাজপুর চিরির বন্দর উপজেলার আলোক দীঘি ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মাহাতাব বেগ বাঙালিদের উদ্ধারে তার নিজস্ব বন্দুক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন দোসরদের হাত থেকে বাঙালিদের উদ্ধারে। কিন্ত শহরে ঢোকার সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সৈয়দপুরের মিস্ত্রী পাড়া এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করে।

সেসময় সৈয়দপুর এলাকায় ঠিক কতজন মানুষ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তার সঠিক হিসাব না থাকলেও বিভিন্ন সূত্র মতে এর সংখ্যা সহস্রাধিক।

জানা যায়, ১৯৭১ এর ২৩ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী হিন্দু ও মাড়োয়ারী পরিবারের ৩৫০ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নীলফামারীর সৈয়দপুরে এটি ছিল সবচেয়ে বড় গণহত্যা। এ শহরে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের কোনও সদস্যাকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি।

এত বড় ঘটনা বহুল স্মৃতিকে ধরে রাখতে সৈয়দপুরে আজও নির্মিত হয়নি স্মৃতিসৌধ। কিন্তু স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জায়গা নির্ধারণের জটিলতার কারণে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

সূত্র জানায়, ২০০০ সালের ৯ অক্টোবর শহরের ওয়াপদা মোড়ের সড়ক দ্বীপে মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদ স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মার্ণের ভিত্তি ফলক উম্মোচন করা হয়। নামকরণ করা হয় ‘স্বাধীনতা শহীত স্মৃতি ভাস্কর্য’। এই নকসা তৈরি করেন ভাস্কর হাবিবা সুলতানা বেলী সরকার।

এর আগেও নকশাটি তৈরি করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রধান শিল্প নির্দেশক জিএমএ রাজ্জাক। এতে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬০ লাখ টাকা। আর সর্বশেষ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯৮ টাকা। কাগজে কলমে হিসাব নিকাশ হলেও বাস্তবে তা পরিণত হয়নি। আজও স্বাধীনতার চেতনার স্বপ্ন যেন স্বপ্নই রয়ে গেছে।

এদিকে শহীদ ভাস্কর্য স্বাধীনতা স্মৃতি নির্মিত না হলেও ৭১ এর স্মৃতিকে ধরে রাখতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শিশু পার্কের নিজ উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে শহীদ স্মৃতি ফলক ও রেলওয়ে কারখানার অভ্যন্তরে স্মৃতিস্তম্ব নির্মাণ করা হয়।

সর্বশেষ সৈয়দপুর শহরের ক্যান্টনমেন্ট সড়কের ডাক বাংলার বিপরীতে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের ফলক উম্মোচন করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে কিছু দিনের মধ্যে ভিত্তি স্থাপনের সাইন বোর্ড চুরি হয়ে যায়। দুঃখ হলেও সত্য যে, এভাবে বারবার থেমে যাচ্ছে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ।

/এআর/

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
প্রকৃতির লীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের ভিড়
প্রকৃতির লীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের ভিড়
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ১২ জনের
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ১২ জনের
মধ্যপ্রাচ্যে সংযমের আহ্বান ইরাকি নেতার
মধ্যপ্রাচ্যে সংযমের আহ্বান ইরাকি নেতার
ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত
ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত
সর্বাধিক পঠিত
কিছু আরব দেশ কেন ইসরায়েলকে সাহায্য করছে?
কিছু আরব দেশ কেন ইসরায়েলকে সাহায্য করছে?
সরকারি চাকরির বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১৮ এপ্রিল
সরকারি চাকরির বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১৮ এপ্রিল
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
ঈদের সিনেমা: হলে কেমন চলছে, দর্শক কী বলছে
ঈদের সিনেমা: হলে কেমন চলছে, দর্শক কী বলছে