X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুমিল্লার বেলতলী বধ্যভূমি: ৪৫ বছরেও মেলেনি স্বীকৃতি

কুমিল্লা প্রতিনিধি
২৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:৩২আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:৪০

কুমিল্লার বেলতলী বধ্যভূমি: ৪৫ বছরেও মেলেনি স্বীকৃতি কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশনের দক্ষিণে প্রায় দুই হাজার ফুট এলাকা জুড়ে বেলতলী বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনারা বিভিন্ন বয়সের প্রায় ১০ হাজারের বেশি নারী ও  পুরুষকে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়ে এখানে মাটি চাপা দিয়েছিল। এ বধ্যভূমি খুঁড়লেই বেরিয়ে আসে মানুষের হাড় কঙ্কাল। অথচ ৪৫ বছরেও এই বধ্যভূমির কোনও সরকারি স্বীকৃতি মিলেনি। দীর্ঘ দিন অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকার পর রেল কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাধীনতার ৪২ বছর পর ২০১৪ সালে এ বধ্যভূমিটিতে একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করেছে।

স্থানীয় শ্রীধাম চন্দ্র দাস জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি লাকসাম জংশনের পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। ওই সময় তিনি ও তার মামা উপেন্দ্র চন্দ্র দাস হানাদারদের নির্দেশে লাশ মাটি চাপা দিতেন।  তিনি আরও জানান, পাকস্তানী বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল লাকসাম অঞ্চল দখল করে। এরপর তারা লাকসাম রেলওয়ে জংশনের পশ্চিম দক্ষিণ পাশে অবস্থিত থ্রি-এ সিগারেট ফ্যাক্টরিতে ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের পর যুদ্ধকালীন পাকবাহিনী এ সিগারেট ফ্যাক্টরিকে মিনি ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করত। এ ক্যান্টনমেন্টের অধীনে ছিল লাকসামসহ কুমিল্লা জেলার দক্ষিণ এলাকা, চাঁদপুর, ফেনী ও নোয়াখালী অঞ্চল। এসব অঞ্চল থেকে পাক হানাদার বাহিনী শত শত যুবক-যুবতীসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষকে ট্রাকে করে তুলে নিয়ে আসত। এদের মধ্যে যুবতীদের উপর যৌন নিপীড়ন শেষে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করত।

বাকই ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তাজুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘লাকসাম জংশনে ট্রেনে আসা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের হত্যা করত পাক হানাদাররা। সেই লাশ এবং জংশন সংলগ্ন থ্রি-এ সিগারেট ফ্যাক্টরির ক্যাম্পে হত্যা করা লাশগুলো জংশনের দক্ষিণ পাশে বেলতলী নামক স্থানে মাটি চাপা দেওয়া হত। একই গর্তে ৮ থেকে ১০ জনকে মাটি চাপা দিত হানাদাররা।’

লাকসাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুল বারী মজুমদার জানান, জংশনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারণ মানুষসহ ট্রেনের যাত্রীদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা শেষে প্রতিদিন এখানে মাটি চাপা দিত পাক হানাদার বাহিনী। এখানে ১০ হাজার বেশি বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষের লাশ মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল।

এটি সংরক্ষণ এবং এর ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে একটি পাঠাগার স্থাপনের প্রয়োজন মনে করেন তিনি।

স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠক রফিকুল ইসলাম হিরা জানান, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে এখানে তারা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এটি সংরক্ষণে একটি গেইট নির্মাণ প্রয়োজন।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি কুমিল্লায় নতুন যোগদান করেছেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতারা বেলতলী বধ্যভূমির স্বীকৃতির বিষয়ে তাকে কিছু বলেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জেনে স্বীকৃতি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

/এমডিপি/

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়