গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ১৭ দিন পরও কোনও রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারায় নিরাপত্তাহীনতা ও উৎকণ্ঠায় ভুগছেন এ হত্যা মামলার বাদী ও স্বজনরা। হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ করলেও কোনও মোটিভ পায়নি পুলিশ, র্যাব ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এমপি লিটনের বড় বোন আফরোজা বারী ও মামলার বাদী ফাহমিদা বুলবুল কাকলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনার ১৭ দিনেও হত্যাকারীদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে না পারায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই যতো দ্রুত সম্ভব খুনিদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মনজু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এমপি লিটনের খুনিদের বিচারের দাবিতে সুন্দরগঞ্জ এখন উত্তাল। কিন্তু খুনিদের ধরতে না পারা খুবই কষ্টদায়ক।’
এদিকে, এ হত্যার ঘটনায় জামায়াত, শিবির, বিএনপিকর্মীসহ সন্দেহভাজন ৭২ জনকে আটক ও ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার আসামিদের রিমান্ডেও নিয়েছে পুলিশ। আর আটক ৬৩ জনকে সুন্দরগঞ্জে সংঘটিত নাশকতা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও পুলিশ হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ত বে এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জে এখন গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। কমেছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বেচাকেনাও। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরের ব্যবসায়ী আবদুর রহমান জানান, ‘এমপি লিটন হত্যার পর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসাবে অনেককে আটক করছে। ফলে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে। আর এতেই হাট-বাজারের ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা কমেছে।’
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘লিটন হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে তদন্ত অব্যাহত আছে। অনেককেই নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আটক ও গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ মামলায় যাতে কাউকে হয়রানি, আটক বা গ্রেফতার করা না হয় সে বিষয়ে পুলিশ সচেতন আছে।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি- তদন্ত) আবু হায়দার মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্নভাবে তদন্ত চলছে। খুনের রহস্য উদঘাটনে অগ্রগতিও হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহবাজ (মাস্টারপাড়া) গ্রামের নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। পরে তাকে রংপুর মেডিক্যাকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান। গত ১ জানুয়ারি রাতে এমপি লিটনের বড় বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
/এসএনএইচ/