প্রচণ্ড শৈত্য প্রবাহের কারণে অচল হয়ে পড়েছে রংপুরের জনজীবন। সেই সঙ্গে পড়ছে ঘনকুয়াশা। কুয়াশার তীব্রতা এতটাই বেশি যে সকাল ১০টা পর্যন্ত সামান্য দূরের বস্তুও দেখা যায় না। হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তীব্র শীতের কারণে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের লোকজন। তারা শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে রাত কাটাচ্ছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আলী জানান, সোমবার রংপুর বিভাগের মধ্যে কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৫.২ ডিগ্রি। তিনি জানান মাঘ মাসে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
তবে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি। বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ করে জানা গেছে, চাহিদার তুলনায় শীতবস্ত্রের সংখ্যা কম হওয়ায় বেশিরভাগ পরিবারকে শীতবস্ত্র দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এবার ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে কোনও শীতবস্ত্র বরাদ্দ করা হয়নি। এবার শুধু কম্বল দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ফরিদুল হক বলেন, এবার রংপুর জেলার জন্য ৪ দফায় মোট ৪৯ হাজার ৭৪৬টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে কম্বলগুলো বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার মন্ত্রণালয় থেকে কম্বল ইউনিয়ন ওয়ারি সংখ্যা উল্লেখ করে বরাদ্দ পত্র দেওয়া হয়েছে। এতে করে প্রথম দফায় একেকটা ইউনিয়ন ভাগে পড়েছে ২০০ কম্বর। এরপরেরবার পাবে ৯৮টি। তবে এটা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য বলে স্বীকার করেন তিনি। রংপুর জেলায় প্রকৃত হতদরিদ্রের সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও ২০ হাজার কম্বল চাওয়া হয়েছে।
শীতের কারণে শ্বাসকষ্ট , কোল্ড ডায়রিয়া নিউমোনিয়াসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রংপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে প্রতিদিনই শত শত শিশু ভর্তি হচ্ছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সালাম জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা বেশি ভর্তি হচ্ছে। তিনি শিশুদের ভোর বেলা বাইরে না বের করার পরামর্শ দিয়েছেন। রকেমের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নিরঞ্জন চন্দ্র জানান, শ্বাসকষ্ট জনিত জনিত রোগে বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। শীতের কারণে রোগবালাই বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তবে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় কুমার রায় জানান, শীতজনিত রোগে রংপুর ও আশেপাশের জেলা থেকে প্রচুর রোগী আসছে।
আরও পড়ুন: ‘সপ্তর্ষি এখনও বাবার অপেক্ষায়’
/এসটি/