ট্রেনে ডাকাতের হাতে খুন মালয়েশিয়া ফেরত শফিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে চলছে শোকের মাতম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সয়দাবাদ ইউনিয়নের চর-মাইঝাইল গ্রামে সফিকুলের বাড়িতে গেলে দেখা যায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিবেশ। তখনও শফিকুলের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়নি। বাবা আলতাফ হোসেন ও মা হাসনা বেগম ছেলে ও ছেলে বউয়ের ছবি বুকে নিয়ে আহাজারি করছেন।
শফিকুলের বাবা কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘ছেলে এতদিন পর বাড়ি আসছে শুনে খুশিতে আমরা আত্মহারা। অথচ সেই ছেলে খুন হয়েছে এ কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না। ওর মা তো খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। বার বার জ্ঞান হারাচ্ছে।’
প্রতিবেশী শাহ আলম জানান, সফিকুল দীর্ঘ ১০ বছর হলো মালয়েশিয়ায় আছেন। তিনি খুবই ভদ্র। তার কোনও শত্রু ছিল না। তাকে কেন খুন করা হলো সেটি আমাদের বোধগম্য না। আমরা এ খুনের বিচার চাই।’
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দরাবাদ এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের পাশ থেকে শফিকুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সকাল ৭টার দিকে হায়দারাবাদ এলাকায় রেলপথের পাশে এক যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে কয়েকজন ব্যক্তি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল হাসান বিল্লালকে খবর দেন। কাউন্সিলর পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। লাশের একটু দূর থেকে একটি ব্যাগও উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ব্যাগ থেকে পুলিশ শফিকুল ইসলাম ও তার মালয়েশিয়ান স্ত্রী সিতি হাজার বিনতি নামে দুজনের পাসপোর্ট উদ্ধার করে। পাসপোর্টে থাকা মোবাইল ফোন নম্বর থেকে শফিকুলের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
শফিকুলের বাবা আলতাফ হোসেন জানান, ২০০৭ সালে চাকরি করতে সফিকুল মালয়েশিয়া যায়। সেখানে সবজি ব্যবসায়ী সিতির ফার্মে চাকরি করতো সফিকুল। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হলে এক বছর আগে তারা বিয়ে করে। সিতিকে নিয়ে চার মাস আগে সে বাংলাদেশে তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসে। পরে তারা দুজন মালয়েশিয়ায় ফিরে যায়। স্ত্রীর কাগজপত্র ঠিকঠাক করার জন্য সোমবার রাত ১১টায় বাংলাদেশ বিমান বন্দরে এসে তাদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে। ইমিগ্রেশন শেষে রাত ৩টার দিকে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। সকালে তার লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশের ধারণা, কোনও ছিনতাইকারী বা ডাকাতদল শফিকুলের সঙ্গে থাকা মালপত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেয়। মাথায় আঘাত পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
/বিটি/