X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় তালিকাভুক্ত দুই মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি বলে অভিযোগ

বগুড়া প্রতিনিধি
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৭:০১আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৭:০৮

বগুড়া বগুড়ার ধুনটের বিলচাপড়ি গ্রামের এসএম সাইদুর রহমান ও আমজাদ হোসেন যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও মন্ত্রণালয়ের সনদের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন দু’জনের পাঁচ সন্তান। সম্প্রতি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা এ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাইদুর ও আমজাদ। তারা প্রতিপক্ষের মিথ্যাচারের শিকার বলে দাবি করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামে মোট ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। এর মধ্যে ওই গ্রামের মৃত শাহজালাল রহমানের ছেলে এস এম সাইদুর রহমান ও জয়নাল আবেদীনের ছেলে আমজাদ হোসেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তারা রাজনৈতিক তদবির ও অর্থের বিনিময়ে মন্ত্রণালয়ের সনদপত্রে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে তারা ভাতা পেতে তদবির করছেন।
দু’জনের মধ্যে এস এম সাইদুর রহমানের চার সন্তান মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন। তার এক ছেলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, এক ছেলে পাট মন্ত্রণালয়ে ও দুই মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকরি করছেন। অন্যদিকে আমজাদ হোসেনের এক মেয়েও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। সাইদুর রহমান তার আরেক মেয়ের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটায় একজন এমপি’র ডিও লেটার নিয়ে চাকরির চেষ্টা করছেন।
ধুনট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার হামিদুর রহমান ফটিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই দু’জন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন। তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে কেউ অভিযোগ করে থাকলে সঠিক কাজ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাইদুর রহমান ও আমজাদ হোসেন বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধার সনদ সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন।’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য জালাল উদ্দিন বলেন, ‘তারা দুই জনই বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা। তদবিরের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। কোটায় সন্তাদের সরকারি চাকরিতে ঢুকিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ও বিএনপি সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করা হয়েছিল, সেই তালিকা অনুযায়ী সাইদুর ও আমজাদ মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন।’ আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ধুনট উপজেলায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কাজ হবে। সেখানে প্রমাণ হলে তারা বাদ পড়তে পারেন বলে জানান জালাল।
তবে অভিযুক্ত দু’জনই নিজেদের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বলেছেন, প্রতিপক্ষরা তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে মুক্তিযোদ্ধা এস এম সাইদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। অনেককে সঙ্গেও নিয়ে গেছি। প্রশিক্ষণ শেষে ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন ধুনটসহ বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ করেছি। এতেও যদি আমি মুক্তিযোদ্ধা না হই, তাহলে স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনও ভুয়া।’ সাইদুর দাবি করেন, তার সন্তানেরা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নয়, নিজেদের যোগ্যতাতেই চাকরি পেয়েছেন।
আরেক তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলেও ভাতা গ্রহণ করি না। তবে আমার মেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করছে।’ আমজাদ দাবি করেন, তাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে অভিযোগ তোলার কাজটি প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র।

আরও পড়ুন-

‘ধর্মনিরপেক্ষতা ধারার মূল শক্তি ছিলেন বঙ্গবন্ধু’

রাজশাহীতে গাছে বেঁধে স্কুলছাত্রকে নির্যাতন

/টিআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা