X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে ৪ শিশু হত্যার ১ বছর: এখনও নিরাপত্তাহীনতায় স্বজনরা

মোহাম্মদ নূর উদ্দিন, হবিগঞ্জ
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৪৮আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৪৮

হবিগঞ্জে চার শিশু হত্যা হবিগঞ্জের বাহুবলে ৪ শিশুকে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রাখার ঘটনার একবছর পূর্ণ হলো আজ শুক্রবার। পুলিশ ও প্রশাসন তিন মাসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হওয়ার আশ্বাস দিলেও আজও তা সম্পন্ন হয়নি। বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। তবে তাদের দাবি, আসামিদের আত্মীয়স্বজন ও পলাতক আসামিরা এখনও তাদের হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এদিকে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, বিচারক সংকট ও আসামিপক্ষের আইনজীবী বিদেশে থাকার কারণে বিচারকাজে দেরি হচ্ছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাতো ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১০)। নিখোঁজের ৫ দিন পর গ্রামের ইচাবিল এলাকায় মাটিচাপা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিন বিকালে সন্দেহভাজন হিসেবে ওই গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগালকে আটক করা হয়।  পরে আব্দুল আলীর দুই ছেলেসহ ৭ জনকে আটক করে পুলিশ।  

এর মধ্যে মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আসামি বাচ্চু র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন। ইতোমধ্যে আব্দুল আলীর দুই ছেলেসহ চারজন এ হত্যাকাণ্ডর সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।  

এরপর ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির তৎকালিন ওসি মোক্তাদির হোসেন তদন্ত করে ৯ জনের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। চার্জশিট গ্রহণ করে জুডিশিয়াল আদালত থেকে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক না থাকায় মামলাটি স্থানান্তর করা হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। এরপর থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আতাবুল্লাহর কাছে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এ পর্যন্ত মামলায় ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

মামলার বাদী নিহত শিশু মনিরের বাবা আব্দাল মিয়া বলেন, ‘প্রথম দিকে ৯০ দিনের মধ্যে বিচারের আশ্বাস দিলেও এখনও তা শেষ হয়নি। আমরা যখনই আদালতে যাই তখনই আসামিপক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে আমাদের হত্যাসহ নানা ভয়ভীতি দেখায়। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করছি।’

নিহত তাজেলের বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই, দ্রুত বিচারকাজ শেষ করা। বিচারে ঘাতকদের ফাঁসি দেওয়া হলে আত্মায় শান্তি পাবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘পলাতক আসামিদের হুমকিতে আমরা রাস্তাঘাটে চলাচল করতে পারছি না। আমাদের মনে সবসময় ভয় থাকে কখন তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করে।’

নিহত শিশু ইসমাঈলের মা হাজেরা বেগম বলেন, ‘পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

নিহত শিশুদের স্কুল সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই দ্রুত ঘাতকদের ফাঁসির সাজা দেওয়া ও কার্যকরের মাধ্যমে বিচারকাজ শেষ হবে। ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হলে ভবিষ্যত এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ড আর হবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।’

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন বলেন, ‘শিশু নির্যাতন আদালতের বিচারক সংকট ও আসামিপক্ষের আইনজীবী বিদেশ থাকার কারণে মামলায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এখন সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।’

বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। 

/এআর/এফএস/

আরও পড়ুন-



নির্বাচন কমিশনের প্রথম সফর বাঘাইছড়িতে

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা