বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ায় প্রথমবারের মত ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হলো স্থায়ী শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় দাশিয়ারছড়ার কালিরহাট বাজারের কাছে নব নির্মিত এই শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্রনাথ ঊরাঁও।
প্রথমবারের মত স্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার অধিবাসীরা।
দাশিয়ারছড়া সমন্বয়পাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাশেদা, রিতু এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল্পনা, শাহিন, রিপন নতুন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে আনন্দিত। তারা জানায়, বিগত বছরগুলোতে তারা কলা গাছ কিংবা বাঁশের ফালি দিয়ে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিত। শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়ায় তারা সরকারকে ধন্যবাদ জানায়।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর ইসলাম বলেন, ‘এটা আমাদের পরম পাওয়া। এতদিন আমাদের এলাকার শিশুরা স্থানীয়ভাবে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিত। কিন্তু এখন থেকে তাদের আর সেটা করতে হবে না। আমরা চাই সরকার যেন প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা করে। তাতে করে শিক্ষার্থীরা আরও ভালভাবে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ ও বাংলা ভাষার গুরুত্ব মনে রাখতে পারবে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হওয়া এই ভূ-খন্ডে নব নির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন শেষে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্রনাথ ঊরাঁও বলেন, ‘অধুনালুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার বাংলাদেশি নতুন নাগরিকরা যেন বাঙালির চেতনা ও জাতীয়তাবোধ ধারণ ও লালন করতে পারে সেজন্যই তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি নতুন এই নাগরিকরা এর মাধ্যমে বাংলা ভাষা অর্জনে আমাদের গৌরবান্বিত ইতিহাস জানতে পারবে ও তা ধারণ করবে।’
শহীদ মিনার উদ্বোধনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মুজিবর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের অন্যতম নেতা গোলাম মোস্তফা, স্থানীয় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিলুপ্ত ছিটমহলের সাধারণ মানুষ।
/বিটি/