হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে মুক্তিযোদ্ধা যাচাইবাছাই কার্যক্রম কয়েক দফা পেছানো হয়েছে। কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই বাছাই কার্যক্রম পেছানোকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে। এ সংক্রান্ত বিরোধে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের মতো হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই কার্যক্রমের তারিখ নির্ধারণ করা হয় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন বাল্লা স্থল বন্দরে এনবিআর চেয়ারম্যান পরিদর্শনে আসার অজুহাত দেখিয়ে বাছাই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
জানা যায়, আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে চুনারুঘাট উপজেলা সভাকক্ষে উপজেলার দেওরগাছ, গাজীপুর ও চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের ভুয়া হিসেবে অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও নতুন আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই কার্যক্রমের তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বাচাই কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান না আসায় যাচাই বাছাই স্থগিত ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজাম মুনিরা।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন অভিযোগ করেন, বাচাই কার্যক্রম স্থগিতের আগে বাছাইকারীদের কাছে কয়েকজনের নামে অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধাদের গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। উপজেলা হল রুমে স্থানীয় দেওরগাছ গ্রামের অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান ছুরুক আলীর ছেলে ও তরুণ লীগ নেতা রুমন ফরাজী ও পাকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে তার আত্মীয় স্বজনরা প্রবেশ করে গালিগালাজ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটায়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজাম মুনিরা ও পুলিশ সভাকক্ষে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং আগামী শুক্রবার নতুন করে তারিখ নির্ধারণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা বাছাই নিয়ে চুনারুঘাটে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। কিন্তু কেউ কোনও কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজাম মুনিরা জানান, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাচাই কার্যক্রম কমিটির সভাপতি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী পাঠান অসুস্থ থাকায় বাছাই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার আবারও বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান জানান, ‘বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজাম মুনিরার সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণে নির্ধারিত তারিখ থাকা স্বত্ত্বেও বাছাই হয়নি। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু করে শনি ও রবিবার তিন দিনে বাছাই কার্যক্রম শেষ করা হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছিতের বিষয়টি জানি না।’
উল্লেখ্য, চুনারুঘাট উপজেলায় ১৩৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং নতুন করে আবেদন করেছেন ১৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধা।
/এফএস/
আরও পড়ুন-
‘ফের এমপি হওয়া লোভ থেকেই লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাদের’